ঢাকা ১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সিলেট জেলায় ১৯ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনই প্রবাসী কুরিয়ার সার্ভিসে ফেনসিডিল পাচারকালে গ্রেফতার ১ উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম দেখলেই অভিযোগ করার আহ্বান ইসির উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে- ডিসি গাজীপুর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা কাল কালিয়াকৈরে বন বিভাগের জমি উদ্ধার ১ম জাতীয় ফুটসাল চ্যাম্পিয়নশীপ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা) তে “ইনোভেশন শোকেসিং” আয়োজন টঙ্গীতে বিনিয়োগকৃত অর্থ আদায়ের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন পরিবেশ ও উন্নয়ন সাংবাদিকতায় হয়রানি হলে সুরক্ষা দেবে সরকার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

যে সিনেমা দেখতে গিয়ে সববয়সীর চোখে জল

নওরোজ বিনোদন ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:১০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৬২ Time View

গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ‘১৯৭১ : সেইসব দিন’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত এই ছবিটি শুধু রণাঙ্গনের চিত্রই নয়, এর বাইরের অদেখা একাত্তরের দুর্দশা ও বর্বরতাকেও দেখিয়েছে। সিনেমাটি ইতোমধ্যে সামাজিকমাধ্যমে বেশ আলোচনা তৈরি করেছে। সিনেমায় যে আবেগ তৈরি হয়েছে, তাতে করে চোখে অজান্তেই জল চলে আসছে দর্শকদের।

এমন বেশকিছু ঘটনা দেখা গেল, শোনা গেল। দর্শকরা সিনেমাটি দেখছেন, মুগ্ধ হচ্ছেন। প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন নানা মাধ্যমেই। একটি প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায় সিনেমাটি ঢাকায় দেখতে এসেছেন এক তরুণ কুমিল্লা থেকে। আরেক ভিডিওতে দেখা যায় পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলছেন, ‘আমি হার্টফেইল করে যাচ্ছিলাম। আমি জাস্ট স্পিচলেস।’ ছবিটি দেখেছেন মডেল আনিলা হক হৃদি। ছবি দেখতে দেখতে শেষ মুহূর্তে অঝোরে ঝড়েছে চোখের জুল। এ ভিডিও ধারণ করেছেন সোনিয়া হোসেন।

যিনি সিনেমার ইয়ে শাম গানে পারফর্ম করেছেন। সামিনা ইসলামের বাবা সাইফুল ইসলাম সিনেমা দেখার পুরোটা সময় চোখ জলে ভিজিয়েছেন। সে অভিজ্ঞতা সামিনা ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘১৯৭১ : সেইসব দিন’ চলচ্চিত্রটি দেখছেন। পুরোটা সময় ধরে তিনি কাঁদছেন, হাসছেন। আমি ইচ্ছে করে রুমাল, টিস্যু দেইনি। কখনো কখনো অনুভ‚তি বয়ে যেতে দিতে হয়। তিনি কেঁদে কেঁদে তাঁর গাল, তারপর দাঁড়ি ভিজিয়েছেন, এখন গলা ভিজিয়ে তাঁর বুকের কাছের পাঞ্জাবি ভেজাচ্ছেন। আমিও ঘোলা চোখ নিয়ে পুরোটা সময় জুড়ে তাঁর মুখ দেখে যাচ্ছি।

সব কাজ ফেলে তাঁর মুখ দেখবো বলে বসে রয়েছে। কি চমৎকার লাগছে আব্বুর মুখ দেখতে, আহা! বীরের মুখ। জান্নাতুন নুর দিশা নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দেখতে দেখতে বারবার চোখ ভিজেছে আমার, আমার বামপাশে ছিলেন একজন কিশোরী, ডানে একজন বৃদ্ধা। দুজনেই কাঁদছিলেন বুঝতে পারছিলাম। সিনেমায় রঞ্জু (সজল) যখন মিলিটারি ক্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে প্রবল সাহসিকতায় বেরিয়ে আসছিলেন, সে দৃশ্য অনেক দিন চোখে লেগে থাকবে। সিনেমায় শব্দের নৈপুণ্য আর সিনেমাটোগ্রাফিও যথেষ্ট ভালো।’ দিশা বলেন,‘এই সিনেমার আরেকটি বিষয় খুব সুন্দর।

প্রেমকে খুব নির্মল আর হৃদয়গ্রাহী করে গল্পে গাঁথা হয়েছে। আর শুধু কি প্রেম? বরং গল্পের সমস্তটাই আবেগিক অনুভবে দর্শককে যুক্ত করেছে ভীষণভাবে। এখানেই ডিরেক্টর হৃদি হকের সফলতা! শেষে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের দিনটি যখন দেখালো সিনেমায়, স্মৃতিসৌধের সাথে লাল-সবুজ পতাকা তখন স্ক্রিনে, বাঙালি হওয়ার গৌরবে ভরে আছে আমার মন। তখন চোখে আমার জল।’ আসাদুজ্জামান সবুজ বলছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলা ও নির্মাণ করাও একখান সিনেমা। সে এক কঠিন পথ,তার জন্য দরকার প্রেম,সবার একাত্মবোধ ও স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ। ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ ছবিতে তা ছিল। ছবিটি লাল-সবুজের মানচিত্র যতদিন থাকবে ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ ততোদিন থাকবে। পুরো সময় জুড়ে বেশ উপভোগ করেছি।’চিত্রনাট্যকার রুম্মান রশিদও ছবি দেখে কেঁদেছেন। সানগøাস দিয়ে চোখ ঢেকেছেন।

বলছিলেন, ‘আমি হৃদয় দিয়ে এই সিনেমা অনুভব করেছি। আমার চোখে পানি। আমি সেই পানি দেখাতে চাচ্ছি না।’ শহীদ রায়হান বলছেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষের জন্ম মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে, তাই ১৯৭১ সালে এদেশের মানুষ কি অবস্থার মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন, বেঁচে ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তা অনুধাবন করতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হলে এসে সিনেমাটি দেখুন। মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতা আমাদের জাতির জন্য কত মূল্যবান, কতটা গর্বের সেটা যে কেউ বুজতে পারবেন অনায়াসে। আসুন সবাই মিলে নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করি, উৎসাহিত করি ‘১৯৭১ : সেইসব দিন’ চলচ্চিত্র দেখতে।’ সিফাত ফারহানা লিখেছেন, ‘একদম ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম।

মন প্রাণ ভরে এই ছবিটা দেখলাম। সবকিছুই মনে হয়েছিল পারফেক্ট। কখন সময় কেটে গেছে একটুও বুঝতে পারিনি। সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে ছবিটি দেখছিল। তারপর আমার মনে হচ্ছিল যদি আরো বেশি হতো ,আরো অনেকক্ষণ হত আরো ভালো হতো।’ সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে প্রয়াত নন্দিত অভিনেতা ও নাট্যকার ড. ইনামুল হকের গল্প অবলম্বনে। এটি পরিচালনা করেছেন তারই বড় মেয়ে অভিনেত্রী ও নির্মাতা হৃদি হক। এতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস, অভিনেতা সজল, তারিন, লিটু আনাম, হৃদি হক, সানজিদা প্রীতি, মামুনুর রশীদ, আবুল হায়াত, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, শিল্পী সরকার অপু, সাজু খাদেমসহ অনেকে।

Please Share This Post in Your Social Media

যে সিনেমা দেখতে গিয়ে সববয়সীর চোখে জল

Update Time : ০৯:১০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩

গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ‘১৯৭১ : সেইসব দিন’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত এই ছবিটি শুধু রণাঙ্গনের চিত্রই নয়, এর বাইরের অদেখা একাত্তরের দুর্দশা ও বর্বরতাকেও দেখিয়েছে। সিনেমাটি ইতোমধ্যে সামাজিকমাধ্যমে বেশ আলোচনা তৈরি করেছে। সিনেমায় যে আবেগ তৈরি হয়েছে, তাতে করে চোখে অজান্তেই জল চলে আসছে দর্শকদের।

এমন বেশকিছু ঘটনা দেখা গেল, শোনা গেল। দর্শকরা সিনেমাটি দেখছেন, মুগ্ধ হচ্ছেন। প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন নানা মাধ্যমেই। একটি প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায় সিনেমাটি ঢাকায় দেখতে এসেছেন এক তরুণ কুমিল্লা থেকে। আরেক ভিডিওতে দেখা যায় পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলছেন, ‘আমি হার্টফেইল করে যাচ্ছিলাম। আমি জাস্ট স্পিচলেস।’ ছবিটি দেখেছেন মডেল আনিলা হক হৃদি। ছবি দেখতে দেখতে শেষ মুহূর্তে অঝোরে ঝড়েছে চোখের জুল। এ ভিডিও ধারণ করেছেন সোনিয়া হোসেন।

যিনি সিনেমার ইয়ে শাম গানে পারফর্ম করেছেন। সামিনা ইসলামের বাবা সাইফুল ইসলাম সিনেমা দেখার পুরোটা সময় চোখ জলে ভিজিয়েছেন। সে অভিজ্ঞতা সামিনা ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘১৯৭১ : সেইসব দিন’ চলচ্চিত্রটি দেখছেন। পুরোটা সময় ধরে তিনি কাঁদছেন, হাসছেন। আমি ইচ্ছে করে রুমাল, টিস্যু দেইনি। কখনো কখনো অনুভ‚তি বয়ে যেতে দিতে হয়। তিনি কেঁদে কেঁদে তাঁর গাল, তারপর দাঁড়ি ভিজিয়েছেন, এখন গলা ভিজিয়ে তাঁর বুকের কাছের পাঞ্জাবি ভেজাচ্ছেন। আমিও ঘোলা চোখ নিয়ে পুরোটা সময় জুড়ে তাঁর মুখ দেখে যাচ্ছি।

সব কাজ ফেলে তাঁর মুখ দেখবো বলে বসে রয়েছে। কি চমৎকার লাগছে আব্বুর মুখ দেখতে, আহা! বীরের মুখ। জান্নাতুন নুর দিশা নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দেখতে দেখতে বারবার চোখ ভিজেছে আমার, আমার বামপাশে ছিলেন একজন কিশোরী, ডানে একজন বৃদ্ধা। দুজনেই কাঁদছিলেন বুঝতে পারছিলাম। সিনেমায় রঞ্জু (সজল) যখন মিলিটারি ক্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে প্রবল সাহসিকতায় বেরিয়ে আসছিলেন, সে দৃশ্য অনেক দিন চোখে লেগে থাকবে। সিনেমায় শব্দের নৈপুণ্য আর সিনেমাটোগ্রাফিও যথেষ্ট ভালো।’ দিশা বলেন,‘এই সিনেমার আরেকটি বিষয় খুব সুন্দর।

প্রেমকে খুব নির্মল আর হৃদয়গ্রাহী করে গল্পে গাঁথা হয়েছে। আর শুধু কি প্রেম? বরং গল্পের সমস্তটাই আবেগিক অনুভবে দর্শককে যুক্ত করেছে ভীষণভাবে। এখানেই ডিরেক্টর হৃদি হকের সফলতা! শেষে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের দিনটি যখন দেখালো সিনেমায়, স্মৃতিসৌধের সাথে লাল-সবুজ পতাকা তখন স্ক্রিনে, বাঙালি হওয়ার গৌরবে ভরে আছে আমার মন। তখন চোখে আমার জল।’ আসাদুজ্জামান সবুজ বলছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলা ও নির্মাণ করাও একখান সিনেমা। সে এক কঠিন পথ,তার জন্য দরকার প্রেম,সবার একাত্মবোধ ও স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ। ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ ছবিতে তা ছিল। ছবিটি লাল-সবুজের মানচিত্র যতদিন থাকবে ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ ততোদিন থাকবে। পুরো সময় জুড়ে বেশ উপভোগ করেছি।’চিত্রনাট্যকার রুম্মান রশিদও ছবি দেখে কেঁদেছেন। সানগøাস দিয়ে চোখ ঢেকেছেন।

বলছিলেন, ‘আমি হৃদয় দিয়ে এই সিনেমা অনুভব করেছি। আমার চোখে পানি। আমি সেই পানি দেখাতে চাচ্ছি না।’ শহীদ রায়হান বলছেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষের জন্ম মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে, তাই ১৯৭১ সালে এদেশের মানুষ কি অবস্থার মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন, বেঁচে ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তা অনুধাবন করতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হলে এসে সিনেমাটি দেখুন। মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতা আমাদের জাতির জন্য কত মূল্যবান, কতটা গর্বের সেটা যে কেউ বুজতে পারবেন অনায়াসে। আসুন সবাই মিলে নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করি, উৎসাহিত করি ‘১৯৭১ : সেইসব দিন’ চলচ্চিত্র দেখতে।’ সিফাত ফারহানা লিখেছেন, ‘একদম ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম।

মন প্রাণ ভরে এই ছবিটা দেখলাম। সবকিছুই মনে হয়েছিল পারফেক্ট। কখন সময় কেটে গেছে একটুও বুঝতে পারিনি। সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে ছবিটি দেখছিল। তারপর আমার মনে হচ্ছিল যদি আরো বেশি হতো ,আরো অনেকক্ষণ হত আরো ভালো হতো।’ সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে প্রয়াত নন্দিত অভিনেতা ও নাট্যকার ড. ইনামুল হকের গল্প অবলম্বনে। এটি পরিচালনা করেছেন তারই বড় মেয়ে অভিনেত্রী ও নির্মাতা হৃদি হক। এতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস, অভিনেতা সজল, তারিন, লিটু আনাম, হৃদি হক, সানজিদা প্রীতি, মামুনুর রশীদ, আবুল হায়াত, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, শিল্পী সরকার অপু, সাজু খাদেমসহ অনেকে।