ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে মানুষ রহমতের ছায়া থেকে বঞ্চিত হয়!

নওরোজ ধর্ম ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩
  • / ৯১ Time View

গুম খুন হত্যা এখন নিত্যদিনের সাধারণ খবরে পরিণত হয়েছে। অথচ অন্যায়ভাবে এ কাজগুলো সংঘটিত হলে আল্লাহর আরশ থর থর করে কেঁপে ওঠে। কেননা জীবন হত্যা মানবতা হত্যার শামিল।

ইসলাম গুমকে তো সমর্থন করেই না আর বিনা কারণে খুন বা হত্যাকে হারাম ঘোষণা করেছে। প্রিয়নবি বলেন, ‘এ সব অপরাধকারীর প্রতি আল্লাহ তাআলার রহমতের ছায়া থাকে না।’

কুরআনুল কারিমে খুন বা হত্যার সুস্পষ্ট বিধান জারি করা হয়েছে। মানুষকে যুদ্ধ-বিগ্রহ, ফেতনা ফাসাদ থেকে বিরত রাখার জন্য কেসাসের বিধান দেয়া হয়েছে। যাতে মানুষ মানবতা হত্যার মতো মহা অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্বাধীন ব্যক্তি হত্যার বদলায় স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা কর; দাসের বদলায় দাস, নারীর বদলায় নারীকে হত্যা করা।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৭৮)

বর্তমান সময়ে গুম খুন ও হত্যা এক মহামারী আকার ধারণ করেছে। তা দেশ কি বিদেশে।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি এ সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আমি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসুল। এ ব্যক্তিকে তিনটি কারণ ব্যতিত হত্যা করা যাবে না।

যদি সে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে;

বিবাহিত হয়েও ব্যভিচার করে;

ইসলাম পরিত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যায়। (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)

যদিও উল্লেখিত বিষয়গুলোর ফয়সালা রাষ্ট্রীয়ভাবে দেয়া হয়। কিন্তু কুরআন এবং হাদিসের আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র এ কাজগুলোর সঙ্গে জড়িতদেরকেই ইসলাম হত্যার বিধান জারি করেছে।

অথচ সমাজে এখন গুম, খুন ও হত্যা বিনা অপরাধে অহরহ চলছে। অনেক সময় এমন সব ঘটনা বা অপরাধে হত্যা বা খুন-রাহাজানি করা হয়; যে বিষয়ে ইসলামের কোনো নির্দেশনা নেই।

গুম খুন হত্যা এত মারাত্মক অপরাধ যে, হত্যাকারীর ওপর থেকে আল্লাহ তাআলার রহমতের ছায়া সরে যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি আল্লাহর রহমতের বিশেষ ছায়াতলে থাকে। যখনই সে এ কাজে জড়িত হয়ে যায়; তখনই তার ওপর থেকে আল্লাহর রহমত সংকুচিত হয়ে যায়।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘একজন মুমিন ততক্ষণ পর্যন্ত দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ প্রশান্ত থাকে যে পর্যন্ত না সে অবৈধ হত্যায় লিপ্ত না হয়। (বুখারি, মিশকাত)

সুতরাং অন্যায় ভাবে কাউকে খুন বা হত্যা নয়; সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মানবতার কল্যাণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষিত দুনিয়াতে আল্লাহর রহমতের বিশেষ ছায়াতলে আশ্রয় লাভে এবং পরকালের সফলতায় মানবতা হত্যার মতো মহা অপরাধমূলক কাজ থেকে মুক্ত থাকা জরুরি।

প্রিয়নবির এ ঘোষণাটি মনে রাখতে হবে-

কেয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথমে যে বিষয়ে ফয়সালা হবে; তাহলো রক্তপাত বা হত্যা। (বুখারি-মুসলিম ও মিশকাত)

মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে পরকালের জবাবদিহি ও কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন-যাপন করে মহাসফলতা লাভে গুম, খুন এবং হত্যা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক:- বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।

Please Share This Post in Your Social Media

যে কারণে মানুষ রহমতের ছায়া থেকে বঞ্চিত হয়!

Update Time : ০৫:১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩

গুম খুন হত্যা এখন নিত্যদিনের সাধারণ খবরে পরিণত হয়েছে। অথচ অন্যায়ভাবে এ কাজগুলো সংঘটিত হলে আল্লাহর আরশ থর থর করে কেঁপে ওঠে। কেননা জীবন হত্যা মানবতা হত্যার শামিল।

ইসলাম গুমকে তো সমর্থন করেই না আর বিনা কারণে খুন বা হত্যাকে হারাম ঘোষণা করেছে। প্রিয়নবি বলেন, ‘এ সব অপরাধকারীর প্রতি আল্লাহ তাআলার রহমতের ছায়া থাকে না।’

কুরআনুল কারিমে খুন বা হত্যার সুস্পষ্ট বিধান জারি করা হয়েছে। মানুষকে যুদ্ধ-বিগ্রহ, ফেতনা ফাসাদ থেকে বিরত রাখার জন্য কেসাসের বিধান দেয়া হয়েছে। যাতে মানুষ মানবতা হত্যার মতো মহা অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্বাধীন ব্যক্তি হত্যার বদলায় স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা কর; দাসের বদলায় দাস, নারীর বদলায় নারীকে হত্যা করা।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৭৮)

বর্তমান সময়ে গুম খুন ও হত্যা এক মহামারী আকার ধারণ করেছে। তা দেশ কি বিদেশে।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি এ সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আমি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসুল। এ ব্যক্তিকে তিনটি কারণ ব্যতিত হত্যা করা যাবে না।

যদি সে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে;

বিবাহিত হয়েও ব্যভিচার করে;

ইসলাম পরিত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যায়। (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)

যদিও উল্লেখিত বিষয়গুলোর ফয়সালা রাষ্ট্রীয়ভাবে দেয়া হয়। কিন্তু কুরআন এবং হাদিসের আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র এ কাজগুলোর সঙ্গে জড়িতদেরকেই ইসলাম হত্যার বিধান জারি করেছে।

অথচ সমাজে এখন গুম, খুন ও হত্যা বিনা অপরাধে অহরহ চলছে। অনেক সময় এমন সব ঘটনা বা অপরাধে হত্যা বা খুন-রাহাজানি করা হয়; যে বিষয়ে ইসলামের কোনো নির্দেশনা নেই।

গুম খুন হত্যা এত মারাত্মক অপরাধ যে, হত্যাকারীর ওপর থেকে আল্লাহ তাআলার রহমতের ছায়া সরে যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি আল্লাহর রহমতের বিশেষ ছায়াতলে থাকে। যখনই সে এ কাজে জড়িত হয়ে যায়; তখনই তার ওপর থেকে আল্লাহর রহমত সংকুচিত হয়ে যায়।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘একজন মুমিন ততক্ষণ পর্যন্ত দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ প্রশান্ত থাকে যে পর্যন্ত না সে অবৈধ হত্যায় লিপ্ত না হয়। (বুখারি, মিশকাত)

সুতরাং অন্যায় ভাবে কাউকে খুন বা হত্যা নয়; সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মানবতার কল্যাণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষিত দুনিয়াতে আল্লাহর রহমতের বিশেষ ছায়াতলে আশ্রয় লাভে এবং পরকালের সফলতায় মানবতা হত্যার মতো মহা অপরাধমূলক কাজ থেকে মুক্ত থাকা জরুরি।

প্রিয়নবির এ ঘোষণাটি মনে রাখতে হবে-

কেয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথমে যে বিষয়ে ফয়সালা হবে; তাহলো রক্তপাত বা হত্যা। (বুখারি-মুসলিম ও মিশকাত)

মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে পরকালের জবাবদিহি ও কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন-যাপন করে মহাসফলতা লাভে গুম, খুন এবং হত্যা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক:- বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।