ঢাকা ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

পুলিশের ধাওয়ায় মৃত্যুর ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

বরিশাল প্রতিনিধি
  • Update Time : ০১:৪১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
  • / ১১১ Time View

বরিশালে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের ধাওয়ায় আগৈলঝাড়ায় রফিক হাওলাদার (৪৮) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে বরিশাল পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত ১১ জুলাই বিকেলের এ ঘটনা ঘটে। পরে গত ১৩ জুলাই তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

প্রত্যাহার করে নেওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক সিকদার, কনস্টেবল ইসমাইল হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও পুলিশের পিকআপচালক জিহাদ হোসেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ও তদন্ত কমিটির সদস্য শারমিন সুলতানা রাখী।

তিনি বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর ভাল্লুকশী গ্রামে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে রফিক হাওলাদার (৪৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. শাহজাহানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এসআই আবদুল হক সিকদারসহ চার পুলিশ সদস্যকে বরিশাল পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভাল্লুকশী গ্রামের নিজাম উদ্দিন ফকিরের চায়ের দোকানের পেছনের পরিত্যক্ত পুকুরপাড়ে বসে তাস খেলছিলেন স্থানীয় ইকবাল মৃধা, আলামিন মৃধা, জামাল মৃধা ও ফরিদ মৃধা। স্থানীয় কয়েকজন লোক পাশে বসে তাস খেলা দেখছিলেন। এ সময় ওই পথ দিয়ে ভাল্লুকশী বাজারে যাচ্ছিল গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক সিকদারসহ একাধিক টহল পুলিশ সদস্য।

তারা আরও জানান, এসআই আবদুল হক তাস খেলতে দেখে পুলিশের গাড়ি থামিয়ে আকস্মিকভাবে ধাওয়া করে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে তাস খেলোয়াড় ও দর্শকেরা আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেন। সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও উত্তর ভাল্লুকশী গ্রামের মন্নাত হাওলাদারের ছেলে বিদেশফেরত রফিক হাওলাদার (৪৫) দৌড়ে পাট খেত ও রাস্তা অতিক্রম করে কাজী মন্নানের বাড়িতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনেরা রফিককে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত যুবকের পরিবার আরও অভিযোগ করে বলেন, এসআই আবদুল হক গৌরনদী থানার পুলিশ হয়ে বিনা অনুমতিতে আগৈরঝাড়া এলাকায় ঢুকে অহেতুক ধাওয়া করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক সিকদার বলেন, ওই দিন আমি ভাল্লুকশী এলাকায় যাইনি। তা ছাড়া পুলিশ দেখে যদি কেউ পালাতে গিয়ে মরে যায়, তাতে পুলিশের কী করার আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

পুলিশের ধাওয়ায় মৃত্যুর ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

Update Time : ০১:৪১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

বরিশালে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের ধাওয়ায় আগৈলঝাড়ায় রফিক হাওলাদার (৪৮) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে বরিশাল পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত ১১ জুলাই বিকেলের এ ঘটনা ঘটে। পরে গত ১৩ জুলাই তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

প্রত্যাহার করে নেওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক সিকদার, কনস্টেবল ইসমাইল হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও পুলিশের পিকআপচালক জিহাদ হোসেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ও তদন্ত কমিটির সদস্য শারমিন সুলতানা রাখী।

তিনি বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর ভাল্লুকশী গ্রামে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে রফিক হাওলাদার (৪৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. শাহজাহানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এসআই আবদুল হক সিকদারসহ চার পুলিশ সদস্যকে বরিশাল পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভাল্লুকশী গ্রামের নিজাম উদ্দিন ফকিরের চায়ের দোকানের পেছনের পরিত্যক্ত পুকুরপাড়ে বসে তাস খেলছিলেন স্থানীয় ইকবাল মৃধা, আলামিন মৃধা, জামাল মৃধা ও ফরিদ মৃধা। স্থানীয় কয়েকজন লোক পাশে বসে তাস খেলা দেখছিলেন। এ সময় ওই পথ দিয়ে ভাল্লুকশী বাজারে যাচ্ছিল গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক সিকদারসহ একাধিক টহল পুলিশ সদস্য।

তারা আরও জানান, এসআই আবদুল হক তাস খেলতে দেখে পুলিশের গাড়ি থামিয়ে আকস্মিকভাবে ধাওয়া করে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে তাস খেলোয়াড় ও দর্শকেরা আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেন। সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও উত্তর ভাল্লুকশী গ্রামের মন্নাত হাওলাদারের ছেলে বিদেশফেরত রফিক হাওলাদার (৪৫) দৌড়ে পাট খেত ও রাস্তা অতিক্রম করে কাজী মন্নানের বাড়িতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনেরা রফিককে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত যুবকের পরিবার আরও অভিযোগ করে বলেন, এসআই আবদুল হক গৌরনদী থানার পুলিশ হয়ে বিনা অনুমতিতে আগৈরঝাড়া এলাকায় ঢুকে অহেতুক ধাওয়া করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক সিকদার বলেন, ওই দিন আমি ভাল্লুকশী এলাকায় যাইনি। তা ছাড়া পুলিশ দেখে যদি কেউ পালাতে গিয়ে মরে যায়, তাতে পুলিশের কী করার আছে।