ঢাকা ০৮:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাগোরনো-কারাবাখে জ্বালানি ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহত ২০

নওরোজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:০৪:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৭ Time View

আজারবাইজানের নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে একটি জ্বালানি ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় কারাবাখে ওই বিস্ফোরণে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজারবাইজান সামরিক আক্রমণ চালিয়ে বিচ্ছিন্ন নাগোরনো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর অঞ্চলটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করেছেন শত শত জাতিগত আর্মেনিয়ান।

‘জাতিগত হামলার শঙ্কায়’ আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে থাকতে অনিচ্ছুক এসব আর্মেনিয়ান চলে যাচ্ছেন আর্মেনিয়ায়।

আর এর মধ্যেই বিস্ফোরণে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটল। স্থানীয় আর্মেনিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় আঞ্চলিক রাজধানী স্টেপানাকার্টের কাছে জ্বালানি স্টোরেজ ডিপোতে বিস্ফোরণে ২০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া বিস্ফোরণে আহত আরও ২৯০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বহু মানুষের শারীরিক অবস্থা ‘এখনও গুরুতর’।

অবশ্য বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রয়টার্স স্টেপানাকার্ট থেকে প্রায় ৬ কিমি (৩.৭ মাইল) দূরে বার্কাডজোর অঞ্চলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে ভবন এবং কাঠামোর অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে বিস্ফোরণের সময়টি যাচাই করতে সক্ষম হয়নি বার্তাসংস্থাটি।

নাগোরনো-কারাবাখের বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্তৃপক্ষের মতে, আজারবাইজানের গত ১০ মাসের অবরোধের সময় ওই অঞ্চলে খাদ্য ও পানির ব্যাপক ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে জ্বালানি পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে বহু লোক বিস্ফোরণস্থলে জড়ো হয়েছিল।

গত সপ্তাহে ককেশাস অঞ্চলের দেশ আজারবাইজানের বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায়।

বিতর্কিত এই ভূখণ্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বাকুর সামরিক অভিযান শুরু করার ২৪ ঘণ্টা পর নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণ এবং অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়।

গত বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে ওই চুক্তি কার্যকর হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নাগোরনো-কারাবাখে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীকে নিরস্ত্র এবং ভেঙে দেওয়া হবে।

এরপর আজারবাইজানীয় প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ গত বৃহস্পতিবার কারাবাখে নিজেদের বিজয় ঘোষণা করে বলেন, এই অঞ্চলটি সম্পূর্ণভাবে বাকুর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং স্বাধীন নাগোরনো-কারাবাখ প্রতিষ্ঠার ধারণাটি শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এই অঞ্চলে বসবাসরত জাতিগত আর্মেনিয়ানদের অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু বছরের পর বছর ধরে চলা সংঘাতে নানা ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং সহিংসতা সেখানে গভীর দাগ ফেলেছে।

মুসলিম প্রধান আজারবাইজান বলেছে, আর্মেনীয়রা – যারা খ্রিস্টান – তারা চাইলে নাগোরনো-কারাবাখ থেকে চলে যেতে পারে।

গার্ডিয়ান বলছে, আজারবাইজানের পক্ষ থেকে জাতিগত আর্মেনিয়ানদের অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও অনেক স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিশোধের ভয় পেয়ে আর্মেনিয়া চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আর্মেনিয়ান সরকার বলেছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৫০ জনেরও বেশি আর্মেনিয়ান নাগোরনো-কারাবাখ ছেড়ে আর্মেনিয়ায় পালিয়ে গেছে।

মস্কো বলেছে, নাগোরনো-কারাবাখের রাশিয়ান শান্তিরক্ষীরা এসব মানুষকে সরিয়ে নিতে সহায়তা করছে।

এছাড়া সোমবার রাতে প্রায় ৭০০ জন বাসিন্দা শান্তিরক্ষী ক্যাম্পে অবস্থান করছিল। এর আগে গত রোববার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বেসামরিক নাগরিক আর্মেনিয়া চলে আসবেন বলে তিনি আশা করছেন।

কারণ তারা আজারবাইজানের অংশে থাকতে চায় না এবং ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞের’ ভয়ে শঙ্কিত।

তিনি বলেন, ‘নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয়রা তাদের মাতৃভূমি ছেড়ে চলে আসাকেই একমাত্র উপায় হিসেবে দেখবে এবং সেই সম্ভাবনাই বাড়ছে। আর্মেনিয়া নাগোরনো-কারাবাখ থেকে আমাদের ভাই ও বোনদের স্নেহের সাথে স্বাগত জানাবে।’

মূলত আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতিগত আর্মেনীয় ছিটমহল নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে কয়েক মাস ধরে দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা চলছিল।

সম্প্রতি বিতর্কিত ওই ভূখণ্ডে মাইন বিস্ফোরণ ও অন্য এক ঘটনায় আজারবাইজানের ১১ পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন।

আর আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ওই অঞ্চলে গত মঙ্গলবার আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীর অভিযান পরিচালনার খবর পাওয়া যায়। আর সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই কারাবাখ ছাড়তে শুরু করেন শত শত জাতিগত আর্মেনিয়ান।

উল্লেখ্য, বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান কয়েক দশক ধরে বিবাদে লিপ্ত রয়েছে।

নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের ভূখণ্ডের ভেতরে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালের এক যুদ্ধের পর থেকে আর্মেনিয়ার সমর্থনে জাতিগত আর্মেনীয় বাহিনী ওই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।

ইতোমধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে দুই প্রতিবেশী আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া অন্তত দুবার যুদ্ধে জড়িয়েছে।

১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর প্রথমবার যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি।

সাবেক সোভিয়েত এ দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ২০২০ সালে ফের প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

দুই দেশের সৈন্যদের হামলা-পাল্টা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

যুদ্ধের পর আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া নাগোরনো-কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে।

কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের পরে প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো।

Please Share This Post in Your Social Media

নাগোরনো-কারাবাখে জ্বালানি ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহত ২০

Update Time : ০৬:০৪:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আজারবাইজানের নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে একটি জ্বালানি ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় কারাবাখে ওই বিস্ফোরণে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজারবাইজান সামরিক আক্রমণ চালিয়ে বিচ্ছিন্ন নাগোরনো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর অঞ্চলটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করেছেন শত শত জাতিগত আর্মেনিয়ান।

‘জাতিগত হামলার শঙ্কায়’ আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে থাকতে অনিচ্ছুক এসব আর্মেনিয়ান চলে যাচ্ছেন আর্মেনিয়ায়।

আর এর মধ্যেই বিস্ফোরণে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটল। স্থানীয় আর্মেনিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় আঞ্চলিক রাজধানী স্টেপানাকার্টের কাছে জ্বালানি স্টোরেজ ডিপোতে বিস্ফোরণে ২০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া বিস্ফোরণে আহত আরও ২৯০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বহু মানুষের শারীরিক অবস্থা ‘এখনও গুরুতর’।

অবশ্য বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রয়টার্স স্টেপানাকার্ট থেকে প্রায় ৬ কিমি (৩.৭ মাইল) দূরে বার্কাডজোর অঞ্চলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে ভবন এবং কাঠামোর অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে বিস্ফোরণের সময়টি যাচাই করতে সক্ষম হয়নি বার্তাসংস্থাটি।

নাগোরনো-কারাবাখের বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্তৃপক্ষের মতে, আজারবাইজানের গত ১০ মাসের অবরোধের সময় ওই অঞ্চলে খাদ্য ও পানির ব্যাপক ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে জ্বালানি পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে বহু লোক বিস্ফোরণস্থলে জড়ো হয়েছিল।

গত সপ্তাহে ককেশাস অঞ্চলের দেশ আজারবাইজানের বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায়।

বিতর্কিত এই ভূখণ্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বাকুর সামরিক অভিযান শুরু করার ২৪ ঘণ্টা পর নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণ এবং অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়।

গত বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে ওই চুক্তি কার্যকর হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নাগোরনো-কারাবাখে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীকে নিরস্ত্র এবং ভেঙে দেওয়া হবে।

এরপর আজারবাইজানীয় প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ গত বৃহস্পতিবার কারাবাখে নিজেদের বিজয় ঘোষণা করে বলেন, এই অঞ্চলটি সম্পূর্ণভাবে বাকুর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং স্বাধীন নাগোরনো-কারাবাখ প্রতিষ্ঠার ধারণাটি শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এই অঞ্চলে বসবাসরত জাতিগত আর্মেনিয়ানদের অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু বছরের পর বছর ধরে চলা সংঘাতে নানা ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং সহিংসতা সেখানে গভীর দাগ ফেলেছে।

মুসলিম প্রধান আজারবাইজান বলেছে, আর্মেনীয়রা – যারা খ্রিস্টান – তারা চাইলে নাগোরনো-কারাবাখ থেকে চলে যেতে পারে।

গার্ডিয়ান বলছে, আজারবাইজানের পক্ষ থেকে জাতিগত আর্মেনিয়ানদের অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও অনেক স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিশোধের ভয় পেয়ে আর্মেনিয়া চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আর্মেনিয়ান সরকার বলেছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৫০ জনেরও বেশি আর্মেনিয়ান নাগোরনো-কারাবাখ ছেড়ে আর্মেনিয়ায় পালিয়ে গেছে।

মস্কো বলেছে, নাগোরনো-কারাবাখের রাশিয়ান শান্তিরক্ষীরা এসব মানুষকে সরিয়ে নিতে সহায়তা করছে।

এছাড়া সোমবার রাতে প্রায় ৭০০ জন বাসিন্দা শান্তিরক্ষী ক্যাম্পে অবস্থান করছিল। এর আগে গত রোববার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বেসামরিক নাগরিক আর্মেনিয়া চলে আসবেন বলে তিনি আশা করছেন।

কারণ তারা আজারবাইজানের অংশে থাকতে চায় না এবং ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞের’ ভয়ে শঙ্কিত।

তিনি বলেন, ‘নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয়রা তাদের মাতৃভূমি ছেড়ে চলে আসাকেই একমাত্র উপায় হিসেবে দেখবে এবং সেই সম্ভাবনাই বাড়ছে। আর্মেনিয়া নাগোরনো-কারাবাখ থেকে আমাদের ভাই ও বোনদের স্নেহের সাথে স্বাগত জানাবে।’

মূলত আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতিগত আর্মেনীয় ছিটমহল নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে কয়েক মাস ধরে দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা চলছিল।

সম্প্রতি বিতর্কিত ওই ভূখণ্ডে মাইন বিস্ফোরণ ও অন্য এক ঘটনায় আজারবাইজানের ১১ পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন।

আর আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ওই অঞ্চলে গত মঙ্গলবার আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীর অভিযান পরিচালনার খবর পাওয়া যায়। আর সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই কারাবাখ ছাড়তে শুরু করেন শত শত জাতিগত আর্মেনিয়ান।

উল্লেখ্য, বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান কয়েক দশক ধরে বিবাদে লিপ্ত রয়েছে।

নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের ভূখণ্ডের ভেতরে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালের এক যুদ্ধের পর থেকে আর্মেনিয়ার সমর্থনে জাতিগত আর্মেনীয় বাহিনী ওই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।

ইতোমধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে দুই প্রতিবেশী আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া অন্তত দুবার যুদ্ধে জড়িয়েছে।

১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর প্রথমবার যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি।

সাবেক সোভিয়েত এ দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ২০২০ সালে ফের প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

দুই দেশের সৈন্যদের হামলা-পাল্টা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

যুদ্ধের পর আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া নাগোরনো-কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে।

কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের পরে প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো।