ঢাকা ১২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছেলেকে গলা কেটে মারলেন বাবা

Reporter Name
  • Update Time : ১০:৩৩:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩
  • / ৯০ Time View

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলেকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই বাবা। সোমবার (৮ মে) বিকেলে গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, গত শনিবার (৬ মে) সন্ধ্যায় গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকার মো. হযরত আলীর ভাড়া বাড়ির একটি ঘর থেকে মো. আশরাফুল আলমের (৩৩) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। ছেলেকে হত্যার ঘটনায় রোববার (৮ মে) মা মোছা. দিলুয়ারা আক্তার বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি গাজীপুর জেলা পিবিআই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে রোববার রাত ১১টায় নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানার কান্দুরা এলাকা থেকে ছেলেকে হত্যার অভিযোগে বাবা ওমর ফারুককে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওমর ফারুক নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থানার কানুহারী গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার বানিয়ারচালা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজী মো. হযরত আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই বাড়িতেই শনিবার ছেলে আশরাফুল ইসলামকে গলা কেটে হত্যার পর পালিয়ে যান তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান জানান, পরিবার নিয়ে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার বানিয়ারচালা উত্তরপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন ওমর ফারুক। নিহত আশরাফুল ইসলাম তার বড় ছেলে। আশরাফুল নিজে নিজে ৭-৮টি বিয়ে করে বিভিন্ন জায়গায় চুরিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াতেন। বড় ছেলে আশরাফুল আলম বিভিন্ন ধরনের নেশা খেতে বাসায় আসতো এবং নেশার জন্য টাকা দাবি করতেন। তার বাবা-মা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করতেন। গত শুক্রবার (৫ মে) রাতে আশরাফুল বাজার থেকে একটি ধারালো চাপাতি কিনে ভাড়া বাসায় আনেন এবং শ্বশুড়বাড়ি যেতে বাবা ওমর ফারুকের মাসিক বেতন ৯ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা চান। বাবা-মা টাকা দিতে না চাইলে বাজার থেকে কেনা চাপাতি দিয়ে তাদের টুকরো টুকরো করে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন।

ওইদিন রাতে ছেলে আশরাফুল বাসায় আসায় রুমের স্বল্পতার কারণে আশরাফুল ও তার বাবা তাদের ভাড়া ঘরে এবং মা পাশের রুমের ভাড়াটিয়া শ্রাবণীর ঘরে রাত্রিযাপন করেন। রাত সাড়ে ৩টায় বাবা ওমর ফারুক তার স্ত্রীকে ফোন করে দ্রুত ঘরের বাইরে আসতে বলেন। স্ত্রী বাইরে আসলে ওমর ফারুক তাকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়ে বাঘের বাজার বাস স্ট্যান্ডে আসেন। এ সময় স্ত্রী তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ওমর ফারুক জানান, ভাড়াকৃত রুমে ছেলে আশরাফুলকে ঘুমন্ত অবস্থায় ছেলের কেনা চাপাতি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছেন।

গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, ঘটনায় জড়িত ওমর ফারুক ও নিহত আশরাফুল সম্পর্কে বাবা-ছেলে। মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে ক্ষোভে-দুঃখে বাবা সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেছেন। একমাত্র আসামি ওমর ফারুককে নেত্রকোণা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

ছেলেকে গলা কেটে মারলেন বাবা

Update Time : ১০:৩৩:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলেকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই বাবা। সোমবার (৮ মে) বিকেলে গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, গত শনিবার (৬ মে) সন্ধ্যায় গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকার মো. হযরত আলীর ভাড়া বাড়ির একটি ঘর থেকে মো. আশরাফুল আলমের (৩৩) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। ছেলেকে হত্যার ঘটনায় রোববার (৮ মে) মা মোছা. দিলুয়ারা আক্তার বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি গাজীপুর জেলা পিবিআই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে রোববার রাত ১১টায় নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানার কান্দুরা এলাকা থেকে ছেলেকে হত্যার অভিযোগে বাবা ওমর ফারুককে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওমর ফারুক নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থানার কানুহারী গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার বানিয়ারচালা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজী মো. হযরত আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই বাড়িতেই শনিবার ছেলে আশরাফুল ইসলামকে গলা কেটে হত্যার পর পালিয়ে যান তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান জানান, পরিবার নিয়ে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার বানিয়ারচালা উত্তরপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন ওমর ফারুক। নিহত আশরাফুল ইসলাম তার বড় ছেলে। আশরাফুল নিজে নিজে ৭-৮টি বিয়ে করে বিভিন্ন জায়গায় চুরিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াতেন। বড় ছেলে আশরাফুল আলম বিভিন্ন ধরনের নেশা খেতে বাসায় আসতো এবং নেশার জন্য টাকা দাবি করতেন। তার বাবা-মা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করতেন। গত শুক্রবার (৫ মে) রাতে আশরাফুল বাজার থেকে একটি ধারালো চাপাতি কিনে ভাড়া বাসায় আনেন এবং শ্বশুড়বাড়ি যেতে বাবা ওমর ফারুকের মাসিক বেতন ৯ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা চান। বাবা-মা টাকা দিতে না চাইলে বাজার থেকে কেনা চাপাতি দিয়ে তাদের টুকরো টুকরো করে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন।

ওইদিন রাতে ছেলে আশরাফুল বাসায় আসায় রুমের স্বল্পতার কারণে আশরাফুল ও তার বাবা তাদের ভাড়া ঘরে এবং মা পাশের রুমের ভাড়াটিয়া শ্রাবণীর ঘরে রাত্রিযাপন করেন। রাত সাড়ে ৩টায় বাবা ওমর ফারুক তার স্ত্রীকে ফোন করে দ্রুত ঘরের বাইরে আসতে বলেন। স্ত্রী বাইরে আসলে ওমর ফারুক তাকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়ে বাঘের বাজার বাস স্ট্যান্ডে আসেন। এ সময় স্ত্রী তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ওমর ফারুক জানান, ভাড়াকৃত রুমে ছেলে আশরাফুলকে ঘুমন্ত অবস্থায় ছেলের কেনা চাপাতি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছেন।

গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, ঘটনায় জড়িত ওমর ফারুক ও নিহত আশরাফুল সম্পর্কে বাবা-ছেলে। মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে ক্ষোভে-দুঃখে বাবা সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেছেন। একমাত্র আসামি ওমর ফারুককে নেত্রকোণা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।