ঢাকা ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীকে কটাক্ষ, সুর বদলালেন রাঙ্গা

‘করজোড়ে মাফ চাই’

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর
  • Update Time : ০৮:৪৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪৮ Time View

rbt

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নির্বাচনী পথসভায় রংপুর-৩ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন একই দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। যা নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ারও করেছেন তিনি। মূহুর্তের মধ্যেই রাঙ্গার ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদও প্রকাশ করেছে।

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব এলাকায় ব্যক্তিগত কাজে আসেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। এসময় তাঁর ওই বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বরং প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেন, সব মানুষই আল্লাহর সৃষ্টি। সুতরাং কে কি নিয়ে জন্মগ্রহণ করল এটাও কোনো বিষয় নয়। একটা মানুষের কর্মে মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় সেটা যে মানুষই হোক। অনেক জায়গায় মেয়ে মানুষ এমপি নির্বাচিত হয়ে এসেছে। আমি রংপুরের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এ ব্যাপারে আমি করজোড়ে মাফ চাই।

পথসভায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিএম কাদের সাহেব আমার চেয়ারম্যান ছিলেন, আমি ওনার মহাসচিব ছিলাম। উনি আমাকে তা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আমি অব্যাহতিপ্রাপ্ত একজন মানুষ হিসেবে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছি। সেকারণে আমার নির্বাচনী এলাকা বা রংপুরে লাঙ্গলের গ্রহণযোগ্যতা কমেনি। লাঙ্গল একটা প্রতীক মাত্র, এটার কোনো দোষ নেই। লাঙ্গলকে যে পরিচালনা করবে, তার দোষ থাকলে থাকতে পারে। তাদের কোনো দোষ থাকলে রংপুরের মানুষ সেটা বিবেচনা করবে।

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার দোষ থাকলে সেটা আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ বিবেচনা করবে। এটার জন্য লাঙ্গল দায়ী নয় লাঙ্গলের জনপ্রিয়তা কমে গেছে, এটা আমি কখনো মনে করিনা। রংপুরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের লাশ আমি কবরে নামিয়েছি, ওনার ভাই (জিএম কাদের) নামাতে আসেনি। উনি (এরশাদ) আমাকে মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমার শুধু একটাই অভিযোগ, কেন আমাকে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হলো। আমাকে একটা চিঠিও দেয়া হলো না। অথচ কারণটা তো আমার জানার অধিকার রয়েছে। এই অবিচারের রায় ৭ জানুয়ারি মানুষ দিবেন।

দলীয় প্রতীক ছাড়া প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে কতখানি জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, এ প্রশ্নের জবাবে রাঙ্গা বলেন, আমি তো জিতব একশ ভাগ নিশ্চিত জেনেই নেমেছি। আমার এলাকায় কোনো দুর্নাম নেই। আমি উন্নয়ন করেছি। একসময় গঙ্গাচড়া মঙ্গাপীড়িত এলাকা ছিল, এখন মঙ্গার কোনো প্রদুর্ভাব নেই। এখন মানুষ না খেয়ে মারা যায় না। সুতরাং এখনকার যে সমস্যা তার সমাধান করা গেলে আমাকে এই এলাকায় আর প্রয়োজন পড়বে না।

তিনি আরও বলেন, এবার একটা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ জানাই। নিরপেক্ষ একটা নির্বাচনের জন্য ওনাদের এখন পর্যন্ত প্রয়াস ভালো। এখন আমরা যদি প্রার্থীরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা সম্পন্ন করি তহালে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখ একটা নির্বাচন দেশে হবে। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

নিজ এলাকার উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনবারের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় মোটামুটি রাস্তাঘাট অনেকটা কমপ্লিট। অবকাঠামোগত উন্নয়নও অনেক হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রেও অগ্রগতি রয়েছে। তিস্তানদীর ডানতীরটা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ৪০০ কোটি টাকায় বেধে দেওয়া হয়েছে। এখন বামতীরটা বাধা এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা সরকার হাতে নিয়েছে, এটা বাস্তবায়ন হলে অনেক পরিবর্তন হবে। তখন শিল্প-কলকারখানা হবে, বিনিয়োগ বাড়বে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, বেকারত্ব দূর হবে।

বেকারত্ব দূর করতে পারলে গঙ্গাচড়া এলাকা থেকে মাদকের কারবারি কমে যাবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখনো অনেক শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে চাকরি পাচ্ছে না। এটা বাবা-মার জন্য বোঝা। অনেকেই নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। কর্মসংস্থানের সুযোগটা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তবে বেকারত্ব দূর করা গেলে এলাকা থেকে মাদকের ব্যবসা অনেকটা কমে যাবে।

প্রসঙ্গত; শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চওড়ারহাট এলাকায় আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় রংপুর-৩ আসনের তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন মসিউর রহমান রাঙ্গা।

তিনি ওই সভায় বলেন, ‘আল্লাহর মাইর দেখছেন? আমার অ্যাটেতো (এখানে) ৮-৯টা লোক আছি, ভোট কইরবার লাগছি (নির্বাচন করছি)। আর রংপুরোত বোলে (রংপুর-৩ আসন) একনা না দুকনা (এক-দুইজন) মানুষ করতেছে, তাও আমাদের মতন মানুষ নোয়ায়। আমি যদি এই রকম একটা সিটে ইলেকশন করতাম, খোদার কসম আমি ইলেকশন করতাম না। ফেলে দিয়ে চলে যাইতাম। মুই না করো উয়ার (তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী) সাথে ইলেকশন। মুই মানুষের সাথে কইরবার চাও (নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা)।’ এসময় তার কর্মী-সমর্থকরা উচ্চস্বরে হিজড়া-হিজড়া বলে জানান দেন।

মসিউর রহমান রাঙ্গা রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও সিটির ১ থেকে ৮ নং ওয়ার্ড) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। এই আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেওয়ায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু।

তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির আরেক নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু (কেটলি প্রতীক)। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফের (লাঙ্গল প্রতীক) সঙ্গে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন পার্টির বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা (ট্রাক)। এখানে ৯ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে থাকলেও ত্রিমুখী লড়াইয়ে সম্ভাবনা দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।

এই আসনে ভোটার ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৬ জন। বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা ২০০১ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন এ আসন থেকে। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। এ আসন থেকে ২০০৮ সালে এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীকে কটাক্ষ, সুর বদলালেন রাঙ্গা

‘করজোড়ে মাফ চাই’

Update Time : ০৮:৪৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নির্বাচনী পথসভায় রংপুর-৩ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন একই দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। যা নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ারও করেছেন তিনি। মূহুর্তের মধ্যেই রাঙ্গার ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদও প্রকাশ করেছে।

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব এলাকায় ব্যক্তিগত কাজে আসেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। এসময় তাঁর ওই বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বরং প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেন, সব মানুষই আল্লাহর সৃষ্টি। সুতরাং কে কি নিয়ে জন্মগ্রহণ করল এটাও কোনো বিষয় নয়। একটা মানুষের কর্মে মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় সেটা যে মানুষই হোক। অনেক জায়গায় মেয়ে মানুষ এমপি নির্বাচিত হয়ে এসেছে। আমি রংপুরের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এ ব্যাপারে আমি করজোড়ে মাফ চাই।

পথসভায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিএম কাদের সাহেব আমার চেয়ারম্যান ছিলেন, আমি ওনার মহাসচিব ছিলাম। উনি আমাকে তা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আমি অব্যাহতিপ্রাপ্ত একজন মানুষ হিসেবে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছি। সেকারণে আমার নির্বাচনী এলাকা বা রংপুরে লাঙ্গলের গ্রহণযোগ্যতা কমেনি। লাঙ্গল একটা প্রতীক মাত্র, এটার কোনো দোষ নেই। লাঙ্গলকে যে পরিচালনা করবে, তার দোষ থাকলে থাকতে পারে। তাদের কোনো দোষ থাকলে রংপুরের মানুষ সেটা বিবেচনা করবে।

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার দোষ থাকলে সেটা আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ বিবেচনা করবে। এটার জন্য লাঙ্গল দায়ী নয় লাঙ্গলের জনপ্রিয়তা কমে গেছে, এটা আমি কখনো মনে করিনা। রংপুরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের লাশ আমি কবরে নামিয়েছি, ওনার ভাই (জিএম কাদের) নামাতে আসেনি। উনি (এরশাদ) আমাকে মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমার শুধু একটাই অভিযোগ, কেন আমাকে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হলো। আমাকে একটা চিঠিও দেয়া হলো না। অথচ কারণটা তো আমার জানার অধিকার রয়েছে। এই অবিচারের রায় ৭ জানুয়ারি মানুষ দিবেন।

দলীয় প্রতীক ছাড়া প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে কতখানি জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, এ প্রশ্নের জবাবে রাঙ্গা বলেন, আমি তো জিতব একশ ভাগ নিশ্চিত জেনেই নেমেছি। আমার এলাকায় কোনো দুর্নাম নেই। আমি উন্নয়ন করেছি। একসময় গঙ্গাচড়া মঙ্গাপীড়িত এলাকা ছিল, এখন মঙ্গার কোনো প্রদুর্ভাব নেই। এখন মানুষ না খেয়ে মারা যায় না। সুতরাং এখনকার যে সমস্যা তার সমাধান করা গেলে আমাকে এই এলাকায় আর প্রয়োজন পড়বে না।

তিনি আরও বলেন, এবার একটা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ জানাই। নিরপেক্ষ একটা নির্বাচনের জন্য ওনাদের এখন পর্যন্ত প্রয়াস ভালো। এখন আমরা যদি প্রার্থীরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা সম্পন্ন করি তহালে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখ একটা নির্বাচন দেশে হবে। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

নিজ এলাকার উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনবারের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় মোটামুটি রাস্তাঘাট অনেকটা কমপ্লিট। অবকাঠামোগত উন্নয়নও অনেক হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রেও অগ্রগতি রয়েছে। তিস্তানদীর ডানতীরটা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ৪০০ কোটি টাকায় বেধে দেওয়া হয়েছে। এখন বামতীরটা বাধা এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা সরকার হাতে নিয়েছে, এটা বাস্তবায়ন হলে অনেক পরিবর্তন হবে। তখন শিল্প-কলকারখানা হবে, বিনিয়োগ বাড়বে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, বেকারত্ব দূর হবে।

বেকারত্ব দূর করতে পারলে গঙ্গাচড়া এলাকা থেকে মাদকের কারবারি কমে যাবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখনো অনেক শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে চাকরি পাচ্ছে না। এটা বাবা-মার জন্য বোঝা। অনেকেই নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। কর্মসংস্থানের সুযোগটা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তবে বেকারত্ব দূর করা গেলে এলাকা থেকে মাদকের ব্যবসা অনেকটা কমে যাবে।

প্রসঙ্গত; শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চওড়ারহাট এলাকায় আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় রংপুর-৩ আসনের তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন মসিউর রহমান রাঙ্গা।

তিনি ওই সভায় বলেন, ‘আল্লাহর মাইর দেখছেন? আমার অ্যাটেতো (এখানে) ৮-৯টা লোক আছি, ভোট কইরবার লাগছি (নির্বাচন করছি)। আর রংপুরোত বোলে (রংপুর-৩ আসন) একনা না দুকনা (এক-দুইজন) মানুষ করতেছে, তাও আমাদের মতন মানুষ নোয়ায়। আমি যদি এই রকম একটা সিটে ইলেকশন করতাম, খোদার কসম আমি ইলেকশন করতাম না। ফেলে দিয়ে চলে যাইতাম। মুই না করো উয়ার (তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী) সাথে ইলেকশন। মুই মানুষের সাথে কইরবার চাও (নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা)।’ এসময় তার কর্মী-সমর্থকরা উচ্চস্বরে হিজড়া-হিজড়া বলে জানান দেন।

মসিউর রহমান রাঙ্গা রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও সিটির ১ থেকে ৮ নং ওয়ার্ড) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। এই আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেওয়ায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু।

তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির আরেক নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু (কেটলি প্রতীক)। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফের (লাঙ্গল প্রতীক) সঙ্গে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন পার্টির বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা (ট্রাক)। এখানে ৯ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে থাকলেও ত্রিমুখী লড়াইয়ে সম্ভাবনা দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।

এই আসনে ভোটার ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৬ জন। বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা ২০০১ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন এ আসন থেকে। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। এ আসন থেকে ২০০৮ সালে এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।