ঢাকা ০২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সিলেট জেলায় ১৯ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনই প্রবাসী কুরিয়ার সার্ভিসে ফেনসিডিল পাচারকালে গ্রেফতার ১ উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম দেখলেই অভিযোগ করার আহ্বান ইসির উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে- ডিসি গাজীপুর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা কাল কালিয়াকৈরে বন বিভাগের জমি উদ্ধার ১ম জাতীয় ফুটসাল চ্যাম্পিয়নশীপ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা) তে “ইনোভেশন শোকেসিং” আয়োজন টঙ্গীতে বিনিয়োগকৃত অর্থ আদায়ের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন পরিবেশ ও উন্নয়ন সাংবাদিকতায় হয়রানি হলে সুরক্ষা দেবে সরকার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ইউনূসের অভিযোগ প্রত্যাখান করে কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানস এর চিঠি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪০ Time View

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লেখা যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটরের চিঠির বিপরীতে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানরা।

গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে ড. ইউনূসের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।

সিনেটর রিচার্ড জে ডার্বিনকে উদ্দেশ করে লেখা চিঠিতে তারা বলেন, ‘গত ২২ জানুয়ারি অন্য ১১ জন সিনেটরসহ আপনারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে চিঠি লিখেছেন, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশি আমেরিকানরা সে বিষয়ে আমাদের হতাশা প্রকাশ করতে লিখছি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- সংগঠনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক, প্রধান উপদেষ্টা শামীম চৌধুরী, উপদেষ্টা ডা. প্রদীপ কর, পরিচালক অ্যাডভোকেট শাহ বখতিয়ার, মহাসচিব মঞ্জুর চৌধুরী, উপদেষ্টা মো. জালাল উদ্দিন জলিল, পরিচালক রুমানা আক্তার, মোঃ শহিদুল ইসলাম, কায়কোবাদ খান এবং উপদেষ্টা হাকিকুল ইসলাম খোকন।

‘কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানে’র চিঠি বলা হয়, ‘চিঠিতে আপনারা (সিনেটররা) বাংলাদেশি নাগরিক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন; যিনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের করা অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। কর্মচারীরা দাবি করেছেন, তিনি (ড. ইউনূস) দেশের শ্রম আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের অধিকার লঙ্ঘন করেছেন। একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রীর অফিসের জন্য লেখা চিঠির (সিনেটরদের) বক্তব্যে আরও সম্মান প্রদর্শন দাবি রাখে। কারণ, এটি একটি ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে একটি সার্বভৌম সরকারের প্রধানকে অভিবাদন দিয়ে শুরু না করে সম্বোধন করা ন্যূনতম শিষ্টাচারের বিরুদ্ধে যায়।’

সিনেটর রিচার্ড জে ডার্বিনকে লেখা চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘একটি ভিন দেশে চলমান বিচারিক মামলার বিষয়ে মন্তব্য করার আগে আরও বিবেচনা করার প্রয়োজনীয়তার কথা নির্দেশ করে। কারণ, চিঠির (সিনেটরদের) ভাষা যুক্তির পরিবর্তে ক্রোধের প্রভাবে প্রভাবিত বলে মনে হয়েছে। আমরা উদ্বিগ্ন যে, দেশের (যুক্তরাষ্ট্রের) আইন প্রণেতারা দেওয়ানি আদালতের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন এবং আইন-আদালতকে সম্মান করছেন না। কিন্তু আদালতের রায় নিয়ে নানাভাবে বাহ্যিক প্রভাবের চেষ্টা করছেন।’

সিনেটরদের অবস্থানগত বিষয়ে সমালোচনা করে কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানের চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা আপনাকে এবং অন্যান্য সিনেটরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এবং প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনার) অফিসকে সম্মান জানানোর জন্য অনুরোধ করছি। আমরা আপনাকে একজন শক্তিশালী করপোরেট প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ না নেওয়ার জন্য এবং এর বদলে দরিদ্র ও অসহায় সাধারণ কর্মচারী-শ্রমিকদের আইনি ও আর্থিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া ও তাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া জন্য উৎসাহিত করছি।’

দুর্ভাগ্যবশত, মার্কিন মূলধারার মিডিয়া, সিবিএস নিউজ, তাদের অনলাইন সংবাদে যা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, তার প্রতিফলন আপনাদের চিঠিতে আমরা প্রত্যক্ষ করি। যখন কিনা তারা (মার্কিন মিডিয়া) বলেছিল যে ‘ইউনূস পশ্চিমের রাজনৈতিক অভিজাতদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে পরিচিত। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেকে মনে করেন, এই রায় (শ্রম আদালতে ইউনূসের বিরুদ্ধে) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’

কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানের চিঠিতে অনুরোধ করা হয় যে, ‘আপনি (রিচার্ড জে ডার্বিন) এবং অন্যান্য সিনেটর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করুন, বাংলাদেশ সরকার নয়। প্রয়োজনে আমরা আপনাকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের বাংলাদেশে পাঠাতে ও আইনি প্রক্রিয়ার মূল্যায়ন এবং ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে জড়িত নথি পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা আপনাকে ওই চিঠি থেকে আপনার নাম প্রত্যাহার করতে উৎসাহিত করছি, যা (সিনেটরদের চিঠি) আমরা মানহানিকর ও অপ্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে লেখা বলে বিবেচনা করি।’

বিবৃতিতে বলা হয়, কর ফাঁকির বিষয়ে ইউনূস মিথ্যাচার করেছেন। ড. ইউনূস সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি মিথ্যা দাবি করেছেন। ইউনুস বলেছিলেন যে তিনি কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য নয়, বরং তাদেরকেই পরিশোধ করতে হবে কিনা তা স্পষ্ট করার জন্য আদালতে গিয়েছিলেন। তার এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। ড. ইউনূস ২০০৯ সালে ‘ইউনূস ট্রাস্ট’ এবং ২০১১ সালে ‘ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কর ফাঁকি দেওয়া। ২০১১-১২ অর্থবছরে ইউনূস এই দুটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬২ কোটি টাকা অনুদান দেন। তিনি অনুদানের উপর কর দেননি। পরবর্তী দুই বছরে প্রতিষ্ঠান দুটিকে টাকা দিয়েছেন এবং কর পরিশোধ করেননি।

উল্লেখ্য, এসব ট্রাস্টের ট্রাস্টি নিজেও একই কাজ করেছেন। তখন বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনআরবি) এসব অনিয়ম নিয়ে আপত্তি জানায়। আইনে বলা হয়েছে, স্ত্রী, পুত্র বা কন্যাকে দান করলে অর্থ করযোগ্য হবে না। অন্যসব ক্ষেত্রে কর প্রদানযোগ্য। আইনে লেখা থাকলেও ইউনূস এই সহজ বিষয়টিকে জোড়াতালি দিয়ে যাচ্ছেন। ইউনূস কর কমিশন, ট্যাক্স আপিল বিভাগ ও আদালতে যান। এর মূল উদ্দেশ্য বিলম্ব করা। এটা ইউনূসের পুরনো অভ্যাস। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে ইউনূস একটি সাধারণ বিষয় নিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন।

ইউনূস ১২ বছর অনুপস্থিত এবং অসুস্থ ছিলেন, যার ফলে তিনি কর পরিশোধ করেননি। ফলে তার পাওনার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১২ কোটি টাকা। ড. ইউনূস তার দীর্ঘদিনের কর বকেয়া পরিশোধের পরিবর্তে কর অব্যাহতি চেয়ে আদালতে মামলা করেন। ১২ বছর ধরে কর ফাঁকি দিয়ে তিনি লাভবান হলেও নিঃসন্দেহে তার সুনাম এখন প্রশ্নবিদ্ধ। একইভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে জড়িত আরেকটি মামলায় ২৫ শতাংশ জমা দিয়ে আপিল করার বিধান থাকলেও এনবিআরকে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আদালতে টেনে নিয়ে গেছেন তিনি। আদালত সম্প্রতি তাকে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী আপিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। নিয়ম না মেনে বিদেশ ভ্রমণ ও অসুস্থতাসহ নানা অজুহাতে একের পর এক তারিখ পরিবর্তন করে সহজে সমাধানযোগ্য বিষয়টি ১০-১৫ বছর বিলম্বিত করার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি আদালতে গিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, ইউনূস তার নামে প্রতিষ্ঠিত দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে মোটা অঙ্কের অর্থ দান করেন; এসব প্রতিষ্ঠান গত ১৫ বছরে কোন দাতব্য কাজ করেনি। খালেদ মুহিউদ্দিন আয়োজিত ডয়চে ভেলের টকশোতে এক সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দাবি করেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকে আমি কোনো অনিয়ম করিনি। কোনও আয়কর ফাঁকি দেওয়া হয়নি।’

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আদালতের রায়ে পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য নিশ্চিত করতে এবং গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিত্ব ও উদ্ভাবনী বিবেচনায় সরকার ইউনূসের ইচ্ছা অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংককে চালানোর অনুমতি দেয়। সরকারের এই শুভ উদ্যোগের সুযোগ নিয়ে তিনি প্রতিটি ব্যাংকের নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে বেপরোয়াভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার নিয়োগ করা পরিচালনা পর্ষদ বা চেয়ারম্যান এসব গুরুতর আইনি বিষয় নিয়ে কখনো কোনো প্রশ্ন তোলেননি। নব্বইয়ের দশকে নরওয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের কিছু দিক নিয়ে গবেষণা করতে চেয়েছিল। এরপর সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের আহ্বান জানায়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৬০ বছর বয়সে কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত অবসর গ্রহণের বয়সেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন

বিবৃবিতে আরও বলা হয়, ১৯৯৯ সালে পরিচালনা পর্ষদ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে চাকরির নিয়ম অনুসরণ না করে ৬০ বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। এই চুক্তিতে আইনের মর্যাদা দেওয়া হয়নি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিদর্শন বই ১৯৯৯-এ মন্তব্য করেছে।

২০১০ সালে, একটি নরওয়েজিয়ান টেলিভিশন প্রোগ্রাম বিষয়টি প্রচার করেছিল এবং তদন্তের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। এরই প্রতিফলন হিসেবে ২০১১ সালে প্রফেসর ইউনূসকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। প্রফেসর ইউনূস এরপর আদালতের শরণাপন্ন হন এবং আদালতের রায়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে পদত্যাগ করেন। আয়কর নিয়ে ছলচাতুরির খেলা খেলতে থাকেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আইন এবং সরকার আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর অধীনে প্রদেয় আয়কর অধ্যাদেশ থেকে আবাসিক/অনাবাসিক অবস্থা নির্বিশেষে বাংলাদেশের যে কোনও নাগরিকের আয়কে অব্যাহতি দিয়েছে। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৪ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত সাত অর্থবছরে ১৩৩টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে করমুক্ত আয় হিসেবে মোট ৫০ কোটি ৬১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৮৮ টাকা, ১০টি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার এবং ১৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে রয়্যালটি পেয়েছেন। তিনি মোট ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৩ শত ৯৭ টাকা দেখিয়ে আয়কর ছাড়ের সুবিধা নিয়েছে। বিদেশ থেকে এই সম্মাননা, পুরস্কার বা রয়্যালটি পাওয়ার আগে ড. ইউনূস ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ইউনূস ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নেননি।

ফান্ড ট্রান্সফারে অনিয়ম ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর উপরোক্ত অর্থ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ‘গ্রামীণ কল্যাণ’ নামক প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয় বলে দাবি করা হয়। এরপরও অর্থ স্থানান্তর না হওয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের বিদ্যমান সম্পদের উৎস হিসেবে গ্রামীণ কল্যাণের অর্থ একই দিনে আবার ঋণ হিসেবে দলিল করা হয়। এর মাধ্যমে সম্পদের বিপরীতে তহবিল না থাকলে ‘ব্যাখ্যাহীন আয়’ হিসেবে বিবেচিত অর্থের ওপর প্রযোজ্য আয়কর ফাঁকির চেষ্টা করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। এমতাবস্থায়, আয়কর অব্যাহতি কর্তন এসআরও নং ৯৩-আইন/২০০০ এর শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে। তহবিল স্থানান্তর সংক্রান্ত গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ কল্যাণের মধ্যে চুক্তি ১৯৯৭ সালের মে মাসে সম্পাদিত হয়।

যদিও তহবিল স্থানান্তর ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে দেখানো হয়, অর্থাৎ, চুক্তি স্বাক্ষরের পাঁচ মাস আগে। সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে আয়কর থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কিন্তু গ্রামীণ কল্যাণকে নয়। তাই তহবিল স্থানান্তর অবৈধ হয়েছে। উপরোক্ত অর্থ ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারির পর গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণে স্থানান্তর করা হয়। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে হিসাব মিলিয়ে ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর উল্লিখিত হস্তান্তর দেখানো হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

ইউনূসের অভিযোগ প্রত্যাখান করে কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানস এর চিঠি

Update Time : ০৬:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লেখা যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটরের চিঠির বিপরীতে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানরা।

গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে ড. ইউনূসের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।

সিনেটর রিচার্ড জে ডার্বিনকে উদ্দেশ করে লেখা চিঠিতে তারা বলেন, ‘গত ২২ জানুয়ারি অন্য ১১ জন সিনেটরসহ আপনারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে চিঠি লিখেছেন, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশি আমেরিকানরা সে বিষয়ে আমাদের হতাশা প্রকাশ করতে লিখছি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- সংগঠনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক, প্রধান উপদেষ্টা শামীম চৌধুরী, উপদেষ্টা ডা. প্রদীপ কর, পরিচালক অ্যাডভোকেট শাহ বখতিয়ার, মহাসচিব মঞ্জুর চৌধুরী, উপদেষ্টা মো. জালাল উদ্দিন জলিল, পরিচালক রুমানা আক্তার, মোঃ শহিদুল ইসলাম, কায়কোবাদ খান এবং উপদেষ্টা হাকিকুল ইসলাম খোকন।

‘কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানে’র চিঠি বলা হয়, ‘চিঠিতে আপনারা (সিনেটররা) বাংলাদেশি নাগরিক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন; যিনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের করা অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। কর্মচারীরা দাবি করেছেন, তিনি (ড. ইউনূস) দেশের শ্রম আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের অধিকার লঙ্ঘন করেছেন। একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রীর অফিসের জন্য লেখা চিঠির (সিনেটরদের) বক্তব্যে আরও সম্মান প্রদর্শন দাবি রাখে। কারণ, এটি একটি ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে একটি সার্বভৌম সরকারের প্রধানকে অভিবাদন দিয়ে শুরু না করে সম্বোধন করা ন্যূনতম শিষ্টাচারের বিরুদ্ধে যায়।’

সিনেটর রিচার্ড জে ডার্বিনকে লেখা চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘একটি ভিন দেশে চলমান বিচারিক মামলার বিষয়ে মন্তব্য করার আগে আরও বিবেচনা করার প্রয়োজনীয়তার কথা নির্দেশ করে। কারণ, চিঠির (সিনেটরদের) ভাষা যুক্তির পরিবর্তে ক্রোধের প্রভাবে প্রভাবিত বলে মনে হয়েছে। আমরা উদ্বিগ্ন যে, দেশের (যুক্তরাষ্ট্রের) আইন প্রণেতারা দেওয়ানি আদালতের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন এবং আইন-আদালতকে সম্মান করছেন না। কিন্তু আদালতের রায় নিয়ে নানাভাবে বাহ্যিক প্রভাবের চেষ্টা করছেন।’

সিনেটরদের অবস্থানগত বিষয়ে সমালোচনা করে কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানের চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা আপনাকে এবং অন্যান্য সিনেটরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এবং প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনার) অফিসকে সম্মান জানানোর জন্য অনুরোধ করছি। আমরা আপনাকে একজন শক্তিশালী করপোরেট প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ না নেওয়ার জন্য এবং এর বদলে দরিদ্র ও অসহায় সাধারণ কর্মচারী-শ্রমিকদের আইনি ও আর্থিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া ও তাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া জন্য উৎসাহিত করছি।’

দুর্ভাগ্যবশত, মার্কিন মূলধারার মিডিয়া, সিবিএস নিউজ, তাদের অনলাইন সংবাদে যা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, তার প্রতিফলন আপনাদের চিঠিতে আমরা প্রত্যক্ষ করি। যখন কিনা তারা (মার্কিন মিডিয়া) বলেছিল যে ‘ইউনূস পশ্চিমের রাজনৈতিক অভিজাতদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে পরিচিত। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেকে মনে করেন, এই রায় (শ্রম আদালতে ইউনূসের বিরুদ্ধে) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’

কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানের চিঠিতে অনুরোধ করা হয় যে, ‘আপনি (রিচার্ড জে ডার্বিন) এবং অন্যান্য সিনেটর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করুন, বাংলাদেশ সরকার নয়। প্রয়োজনে আমরা আপনাকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের বাংলাদেশে পাঠাতে ও আইনি প্রক্রিয়ার মূল্যায়ন এবং ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে জড়িত নথি পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা আপনাকে ওই চিঠি থেকে আপনার নাম প্রত্যাহার করতে উৎসাহিত করছি, যা (সিনেটরদের চিঠি) আমরা মানহানিকর ও অপ্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে লেখা বলে বিবেচনা করি।’

বিবৃতিতে বলা হয়, কর ফাঁকির বিষয়ে ইউনূস মিথ্যাচার করেছেন। ড. ইউনূস সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি মিথ্যা দাবি করেছেন। ইউনুস বলেছিলেন যে তিনি কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য নয়, বরং তাদেরকেই পরিশোধ করতে হবে কিনা তা স্পষ্ট করার জন্য আদালতে গিয়েছিলেন। তার এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। ড. ইউনূস ২০০৯ সালে ‘ইউনূস ট্রাস্ট’ এবং ২০১১ সালে ‘ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কর ফাঁকি দেওয়া। ২০১১-১২ অর্থবছরে ইউনূস এই দুটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬২ কোটি টাকা অনুদান দেন। তিনি অনুদানের উপর কর দেননি। পরবর্তী দুই বছরে প্রতিষ্ঠান দুটিকে টাকা দিয়েছেন এবং কর পরিশোধ করেননি।

উল্লেখ্য, এসব ট্রাস্টের ট্রাস্টি নিজেও একই কাজ করেছেন। তখন বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনআরবি) এসব অনিয়ম নিয়ে আপত্তি জানায়। আইনে বলা হয়েছে, স্ত্রী, পুত্র বা কন্যাকে দান করলে অর্থ করযোগ্য হবে না। অন্যসব ক্ষেত্রে কর প্রদানযোগ্য। আইনে লেখা থাকলেও ইউনূস এই সহজ বিষয়টিকে জোড়াতালি দিয়ে যাচ্ছেন। ইউনূস কর কমিশন, ট্যাক্স আপিল বিভাগ ও আদালতে যান। এর মূল উদ্দেশ্য বিলম্ব করা। এটা ইউনূসের পুরনো অভ্যাস। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে ইউনূস একটি সাধারণ বিষয় নিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন।

ইউনূস ১২ বছর অনুপস্থিত এবং অসুস্থ ছিলেন, যার ফলে তিনি কর পরিশোধ করেননি। ফলে তার পাওনার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১২ কোটি টাকা। ড. ইউনূস তার দীর্ঘদিনের কর বকেয়া পরিশোধের পরিবর্তে কর অব্যাহতি চেয়ে আদালতে মামলা করেন। ১২ বছর ধরে কর ফাঁকি দিয়ে তিনি লাভবান হলেও নিঃসন্দেহে তার সুনাম এখন প্রশ্নবিদ্ধ। একইভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে জড়িত আরেকটি মামলায় ২৫ শতাংশ জমা দিয়ে আপিল করার বিধান থাকলেও এনবিআরকে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আদালতে টেনে নিয়ে গেছেন তিনি। আদালত সম্প্রতি তাকে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী আপিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। নিয়ম না মেনে বিদেশ ভ্রমণ ও অসুস্থতাসহ নানা অজুহাতে একের পর এক তারিখ পরিবর্তন করে সহজে সমাধানযোগ্য বিষয়টি ১০-১৫ বছর বিলম্বিত করার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি আদালতে গিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, ইউনূস তার নামে প্রতিষ্ঠিত দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে মোটা অঙ্কের অর্থ দান করেন; এসব প্রতিষ্ঠান গত ১৫ বছরে কোন দাতব্য কাজ করেনি। খালেদ মুহিউদ্দিন আয়োজিত ডয়চে ভেলের টকশোতে এক সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দাবি করেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকে আমি কোনো অনিয়ম করিনি। কোনও আয়কর ফাঁকি দেওয়া হয়নি।’

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আদালতের রায়ে পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য নিশ্চিত করতে এবং গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিত্ব ও উদ্ভাবনী বিবেচনায় সরকার ইউনূসের ইচ্ছা অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংককে চালানোর অনুমতি দেয়। সরকারের এই শুভ উদ্যোগের সুযোগ নিয়ে তিনি প্রতিটি ব্যাংকের নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে বেপরোয়াভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার নিয়োগ করা পরিচালনা পর্ষদ বা চেয়ারম্যান এসব গুরুতর আইনি বিষয় নিয়ে কখনো কোনো প্রশ্ন তোলেননি। নব্বইয়ের দশকে নরওয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের কিছু দিক নিয়ে গবেষণা করতে চেয়েছিল। এরপর সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের আহ্বান জানায়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৬০ বছর বয়সে কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত অবসর গ্রহণের বয়সেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন

বিবৃবিতে আরও বলা হয়, ১৯৯৯ সালে পরিচালনা পর্ষদ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে চাকরির নিয়ম অনুসরণ না করে ৬০ বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। এই চুক্তিতে আইনের মর্যাদা দেওয়া হয়নি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিদর্শন বই ১৯৯৯-এ মন্তব্য করেছে।

২০১০ সালে, একটি নরওয়েজিয়ান টেলিভিশন প্রোগ্রাম বিষয়টি প্রচার করেছিল এবং তদন্তের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। এরই প্রতিফলন হিসেবে ২০১১ সালে প্রফেসর ইউনূসকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। প্রফেসর ইউনূস এরপর আদালতের শরণাপন্ন হন এবং আদালতের রায়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে পদত্যাগ করেন। আয়কর নিয়ে ছলচাতুরির খেলা খেলতে থাকেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আইন এবং সরকার আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর অধীনে প্রদেয় আয়কর অধ্যাদেশ থেকে আবাসিক/অনাবাসিক অবস্থা নির্বিশেষে বাংলাদেশের যে কোনও নাগরিকের আয়কে অব্যাহতি দিয়েছে। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৪ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত সাত অর্থবছরে ১৩৩টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে করমুক্ত আয় হিসেবে মোট ৫০ কোটি ৬১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৮৮ টাকা, ১০টি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার এবং ১৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে রয়্যালটি পেয়েছেন। তিনি মোট ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৩ শত ৯৭ টাকা দেখিয়ে আয়কর ছাড়ের সুবিধা নিয়েছে। বিদেশ থেকে এই সম্মাননা, পুরস্কার বা রয়্যালটি পাওয়ার আগে ড. ইউনূস ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ইউনূস ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নেননি।

ফান্ড ট্রান্সফারে অনিয়ম ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর উপরোক্ত অর্থ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ‘গ্রামীণ কল্যাণ’ নামক প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয় বলে দাবি করা হয়। এরপরও অর্থ স্থানান্তর না হওয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের বিদ্যমান সম্পদের উৎস হিসেবে গ্রামীণ কল্যাণের অর্থ একই দিনে আবার ঋণ হিসেবে দলিল করা হয়। এর মাধ্যমে সম্পদের বিপরীতে তহবিল না থাকলে ‘ব্যাখ্যাহীন আয়’ হিসেবে বিবেচিত অর্থের ওপর প্রযোজ্য আয়কর ফাঁকির চেষ্টা করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। এমতাবস্থায়, আয়কর অব্যাহতি কর্তন এসআরও নং ৯৩-আইন/২০০০ এর শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে। তহবিল স্থানান্তর সংক্রান্ত গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ কল্যাণের মধ্যে চুক্তি ১৯৯৭ সালের মে মাসে সম্পাদিত হয়।

যদিও তহবিল স্থানান্তর ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে দেখানো হয়, অর্থাৎ, চুক্তি স্বাক্ষরের পাঁচ মাস আগে। সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে আয়কর থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কিন্তু গ্রামীণ কল্যাণকে নয়। তাই তহবিল স্থানান্তর অবৈধ হয়েছে। উপরোক্ত অর্থ ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারির পর গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণে স্থানান্তর করা হয়। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে হিসাব মিলিয়ে ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর উল্লিখিত হস্তান্তর দেখানো হয়।