ঢাকা ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা) তে “ইনোভেশন শোকেসিং” আয়োজন টঙ্গীতে বিনিয়োগকৃত অর্থ আদায়ের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন পরিবেশ ও উন্নয়ন সাংবাদিকতায় হয়রানি হলে সুরক্ষা দেবে সরকার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী আজ সেই ভয়াল ৩ মে! প্রবাসীদের সেবার মান বাড়াতে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হবে – ড. মোমেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের উপস্থিতি হার ৯০ শতাংশ ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করুন: বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ অজ্ঞান করে স্বর্ণ ও টাকা চুরির রহস্য উদঘাটন ও চোরাই মালামালসহ গ্রেফতার ১ কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার

বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত না দিলে কানাডার সঙ্গে বন্ধুত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হবে: আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ০৭:৪২:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৮১ Time View

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনিকে ফেরত না দিলে বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘১৫ আগস্টের নেপথ্যের কুশীলব’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বইটি লিখেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল।

তিনি বলেন, বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর দুজন খুনির অবস্থান আমরা জানি। তাদের একজন এ এম রাশেদ চৌধুরী, সে আছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যজন এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, সে আছে কানাডায়। নূরকে আনার চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কানাডা সরকার তাকে ফেরত দিতে অপারগতা জানাচ্ছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, কানাডা সরকার বলছে, তাদের আইন আছে, যদি কোনো ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) দেওয়া হয় বা এমন কোনো মামলা আছে, যেটার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড তখন তারা সেই ব্যক্তিকে ফেরত দিতে চান না। তারপরও আমরা অনবরত এটা নিয়ে তাগিদ দিচ্ছি, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি তারা তাকে ফেরত না দেন, তাহলে তাদের (কানাডা) সঙ্গে আমাদের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এটাও আমরা তাদের জানিয়ে দেবো।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বিদেশে পালিয়ে থাকা খুনিদের যখন আমরা দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কথাবার্তা বলেছি, কেউ কিন্তু এ প্রশ্নটা অন্তত তুলতে পারেননি যে, বিচার কার্যক্রম সঠিকভাবে হয়নি। কিংবা বিচারকে প্রভাবিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকার্যের মাধ্যমে আসলে বাংলার মাটিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। ফলে ১০০ বছর পরও কেউ এ মামলার বিচার কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন না।

সাধারণ আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হোক- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমনটিই চাওয়া ছিল জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ইনডেমনিটি বাতিল করা হলো। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দিন থেকে চেয়েছিলেন যেন এ মামলার বিচারকাজ সাধারণ আদালতে হয়। জনসম্মুখে যেন এ মামলার রায় হয়। বাংলার জনগণ যেন জাতির পিতার খুনিদের সাজা কার্যকর হওয়ার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হতে পারে।

তিনি বলেন, বিচারিক আদালতে এ মামলার রায় হলো। এরপর সেটা হাইকোর্টে এলো। তখনো কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারই দায়িত্বে। হাইকোর্টের সাতজন বিচারপতি তখন এ মামলা শুনতে বিব্রতবোধ করেছিলেন। তারা কেন বিব্রতবোধ করেছিলেন, তা এখনো আমার বুঝে আসে না। আমি একজন আইনজীবী। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। আইনের পরিভাষায় বিব্রত হওয়ার বিষয়টি রয়েছে। তাই এটা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারি না।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, তবে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে অর্থাৎ দেশের জনগণ এটা মনে করতেই পারেন যে, ওই বিচারপতিরা নিশ্চয়ই এ হত্যাকাণ্ডের (বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা) পক্ষের শক্তি। এটাই বাস্তব, এটাই সত্য। এখন যে নেপথ্যের কুশীলব নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি, সেখানে তো এদেরও আপনি নেপথ্যের কুশীলবের তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবেন না। এটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে।

১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের বিচারে কমিশন করা হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, নেপথ্যের কুশীলব কারা, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তো এখন গত হয়েছেন (মারা গেছেন)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা নির্দেশনা আছে। সেটা আমি সংসদে দাঁড়িয়েও বলেছি, নেপথ্যের কুশীলবদের বিচারে একটা কমিশন হবে। কমিশনের প্রারম্ভিক কাজ হলো- আইনটা তৈরি করা। এটা করার চেষ্টা আমরা করছি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলে এটা দ্রুত করে ফেলবো।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম প্রমুখ।

বিশেষ আলোচক ছিলেন ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এবং গবেষক, লেখক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ।

Please Share This Post in Your Social Media

বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত না দিলে কানাডার সঙ্গে বন্ধুত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হবে: আইনমন্ত্রী

Update Time : ০৭:৪২:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনিকে ফেরত না দিলে বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘১৫ আগস্টের নেপথ্যের কুশীলব’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বইটি লিখেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল।

তিনি বলেন, বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর দুজন খুনির অবস্থান আমরা জানি। তাদের একজন এ এম রাশেদ চৌধুরী, সে আছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যজন এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, সে আছে কানাডায়। নূরকে আনার চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কানাডা সরকার তাকে ফেরত দিতে অপারগতা জানাচ্ছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, কানাডা সরকার বলছে, তাদের আইন আছে, যদি কোনো ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) দেওয়া হয় বা এমন কোনো মামলা আছে, যেটার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড তখন তারা সেই ব্যক্তিকে ফেরত দিতে চান না। তারপরও আমরা অনবরত এটা নিয়ে তাগিদ দিচ্ছি, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি তারা তাকে ফেরত না দেন, তাহলে তাদের (কানাডা) সঙ্গে আমাদের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এটাও আমরা তাদের জানিয়ে দেবো।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বিদেশে পালিয়ে থাকা খুনিদের যখন আমরা দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কথাবার্তা বলেছি, কেউ কিন্তু এ প্রশ্নটা অন্তত তুলতে পারেননি যে, বিচার কার্যক্রম সঠিকভাবে হয়নি। কিংবা বিচারকে প্রভাবিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকার্যের মাধ্যমে আসলে বাংলার মাটিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। ফলে ১০০ বছর পরও কেউ এ মামলার বিচার কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন না।

সাধারণ আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হোক- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমনটিই চাওয়া ছিল জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ইনডেমনিটি বাতিল করা হলো। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দিন থেকে চেয়েছিলেন যেন এ মামলার বিচারকাজ সাধারণ আদালতে হয়। জনসম্মুখে যেন এ মামলার রায় হয়। বাংলার জনগণ যেন জাতির পিতার খুনিদের সাজা কার্যকর হওয়ার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হতে পারে।

তিনি বলেন, বিচারিক আদালতে এ মামলার রায় হলো। এরপর সেটা হাইকোর্টে এলো। তখনো কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারই দায়িত্বে। হাইকোর্টের সাতজন বিচারপতি তখন এ মামলা শুনতে বিব্রতবোধ করেছিলেন। তারা কেন বিব্রতবোধ করেছিলেন, তা এখনো আমার বুঝে আসে না। আমি একজন আইনজীবী। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। আইনের পরিভাষায় বিব্রত হওয়ার বিষয়টি রয়েছে। তাই এটা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারি না।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, তবে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে অর্থাৎ দেশের জনগণ এটা মনে করতেই পারেন যে, ওই বিচারপতিরা নিশ্চয়ই এ হত্যাকাণ্ডের (বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা) পক্ষের শক্তি। এটাই বাস্তব, এটাই সত্য। এখন যে নেপথ্যের কুশীলব নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি, সেখানে তো এদেরও আপনি নেপথ্যের কুশীলবের তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবেন না। এটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে।

১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের বিচারে কমিশন করা হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, নেপথ্যের কুশীলব কারা, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তো এখন গত হয়েছেন (মারা গেছেন)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা নির্দেশনা আছে। সেটা আমি সংসদে দাঁড়িয়েও বলেছি, নেপথ্যের কুশীলবদের বিচারে একটা কমিশন হবে। কমিশনের প্রারম্ভিক কাজ হলো- আইনটা তৈরি করা। এটা করার চেষ্টা আমরা করছি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলে এটা দ্রুত করে ফেলবো।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম প্রমুখ।

বিশেষ আলোচক ছিলেন ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এবং গবেষক, লেখক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ।