ঢাকা ০৪:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা) তে “ইনোভেশন শোকেসিং” আয়োজন টঙ্গীতে বিনিয়োগকৃত অর্থ আদায়ের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন পরিবেশ ও উন্নয়ন সাংবাদিকতায় হয়রানি হলে সুরক্ষা দেবে সরকার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী আজ সেই ভয়াল ৩ মে! প্রবাসীদের সেবার মান বাড়াতে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হবে – ড. মোমেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের উপস্থিতি হার ৯০ শতাংশ ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করুন: বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ অজ্ঞান করে স্বর্ণ ও টাকা চুরির রহস্য উদঘাটন ও চোরাই মালামালসহ গ্রেফতার ১ কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার

কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে: আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ

।।কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।
  • Update Time : ১২:৪২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৮৭ Time View

উজানের পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমি বর্ষার বৃষ্টির কারণে তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে বাংলাদেশের দিকে রেকর্ড পরিমাণ পানি ছেড়েছে ভারত। ফলে চতুর্থ দফায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামে প্রবাহিত নদ-নদীর পানি। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলের মানুষ দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন।

শনিবার ২৬ আগস্ট সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্ট বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৯৭ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও নিচু চরাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন জেগে ওঠা মুসার চর ও বালাডোবার চরের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তবে এখনও অন্যান্য চরাঞ্চলগুলো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম, চর খিতাবখা, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুড়া, রামহরি ও কালিরহাট এলাকায় দেখা দিয়েছে তিস্তা নদী ভাঙন। এছাড়া ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে এবং ধরলার অববাহিকার মোগলবাসা ইউনিয়নের চরসিতাইঝাড় এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে জেলার ৫টি উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের ফসলের খেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি হওয়ার ফলে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের আবাদকৃত ফসলের ক্ষেতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। যার সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও আগামী ২৮ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এবং ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে: আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ

Update Time : ১২:৪২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩

উজানের পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমি বর্ষার বৃষ্টির কারণে তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে বাংলাদেশের দিকে রেকর্ড পরিমাণ পানি ছেড়েছে ভারত। ফলে চতুর্থ দফায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামে প্রবাহিত নদ-নদীর পানি। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলের মানুষ দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন।

শনিবার ২৬ আগস্ট সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্ট বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৯৭ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও নিচু চরাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন জেগে ওঠা মুসার চর ও বালাডোবার চরের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তবে এখনও অন্যান্য চরাঞ্চলগুলো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম, চর খিতাবখা, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুড়া, রামহরি ও কালিরহাট এলাকায় দেখা দিয়েছে তিস্তা নদী ভাঙন। এছাড়া ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে এবং ধরলার অববাহিকার মোগলবাসা ইউনিয়নের চরসিতাইঝাড় এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে জেলার ৫টি উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের ফসলের খেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি হওয়ার ফলে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের আবাদকৃত ফসলের ক্ষেতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। যার সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও আগামী ২৮ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এবং ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে।