ঢাকা ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার” টাঙ্গাইলে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধের মৃত্যু আখেরী মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে জাকের পার্টির বিশ্ব ইসলামি মহা সম্মেলন ও মহা পবিত্র ফাতেহা শরীফের সমাপ্তি টঙ্গীতে পরিবহনে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৮ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবঃ প্রধান বিচারপতি  শত কোটি টাকা আত্মসাৎ: দেশত্যাগের সময় বিমানবন্দরে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক লালপুরে আ,লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ইবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আনসার কর্তৃক শিক্ষক হেনস্তার অভিযোগ

৭২ ঘণ্টার মধ্যে বড় ভূমিকম্প, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

নওরোজ অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:১৪:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৬৬ Time View

বাংলাদেশে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ‘ভয়াবহ ভূমিকম্প’ হবে বলে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ‘আর্থকোয়াক নিউজ এভরিডে’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এই তথ্য ছাড়ানো হয়। এরপরই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দেশবাসী।

যদিও এমন তথ্যকে উড়িয়ে দিচ্ছেন দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, ভূমিকম্পের আগে ঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের মতো পূর্বাভাস দেয়া যায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর)তিনি বলেন,

পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার মতো প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়নি।

ঝড়বৃষ্টি বা জলোচ্ছ্বাসের যেমন আগে থেকে পূর্বাভাস দেয়া যায়। সেটা দিন, তারিখ, সময় ধরে ভূমিকম্পের বিষয়ে দেয়া যায় না। যেমনটা ফেসবুকে দেয়া হয়েছে।

তবে একটি ভূমিকম্প হওয়ার পর পরবর্তী কয়েক বছরের সময়সীমার মধ্যে ভূমিকম্পের আশঙ্কা হিসাব করা যায়।’ তাই এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন এই দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় জরুরি।

এটি কোথায় ঘটবে, কখন ঘটবে এবং কত বড় আকারের হবে। সংস্থাটি বলছে, এখন পর্যন্ত কেউই নিশ্চিতভাবে এটি আগে বলতে পারে না।

ইতালির রোমের সেপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানের এবং যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস ম্যারোন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন।

ঢাকা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?

অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশে মোট তিনটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলে উৎপত্তি হওয়া ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ২।

গত ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহে ভূমিকম্পের এপিসেন্টার দেখা গেছে। যার সবই ঢাকার খুব কাছের এলাকা।

যদিও বাংলাদেশের পূর্ব ও উত্তর পাশকে ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ধরা হয়। বিশেষ করে সিলেট এবং চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে খুবই সক্রিয় ভূমিকম্প বেল্ট রয়েছে।

যেসব ফল্টে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো শক্তি জমা রয়েছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বাংলাদেশের আশপাশে বড় মানের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এমন হলে ঢাকার জন্য বড় বিপর্যয়ের কারণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া সাম্প্রতিক অনেকগুলো ভূমিকম্পের মূল কেন্দ্র ছিল পূর্বদিকে মিয়ানমার অথবা ভারতের মিজোরাম, মনিপুর এবং উত্তরে আসাম, নেপাল কিংবা ভুটানে।

গতমাসেও দুটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। যেগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট অঞ্চলের সীমান্ত এলাকায়।

দুই বছরে অন্তত ২৫ বার ভূমিকম্পে কেঁপেছে এ জনপদ। এছাড়া চলতি বছরের মে মাসেই ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল।

যার উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার দোহার থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে। এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি থাকায় তখন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন গবেষকরা।

আর ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর জন্য ঢাকাকে নিয়ে এত উদ্বেগ বলে জানালেন ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান।

তার মতে, দেশের উত্তর এবং পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্প হলে যেভাবে মাটির কম্পন অনুভূত হবে, ঢাকার ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না।

এখানে অনেক কম কম্পন হবে। জাপান, ক্যালিফোর্নিয়ার মতো ঢাকা অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। কিন্তু ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বেশি ক্ষতি হবে, হতাহতের হার বেশি হবে।

এই দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বহুবার বলা হয়েছে ভবনগুলো সঠিকভাবে তৈরি করতে। কিন্তু কেউ কারো কথা শুনছে না। এতে মাঝারি মাত্রায় ভূমিকম্প হলেও আতঙ্কিত হতে হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

৭২ ঘণ্টার মধ্যে বড় ভূমিকম্প, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

Update Time : ০৫:১৪:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ‘ভয়াবহ ভূমিকম্প’ হবে বলে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ‘আর্থকোয়াক নিউজ এভরিডে’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এই তথ্য ছাড়ানো হয়। এরপরই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দেশবাসী।

যদিও এমন তথ্যকে উড়িয়ে দিচ্ছেন দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, ভূমিকম্পের আগে ঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের মতো পূর্বাভাস দেয়া যায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর)তিনি বলেন,

পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার মতো প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়নি।

ঝড়বৃষ্টি বা জলোচ্ছ্বাসের যেমন আগে থেকে পূর্বাভাস দেয়া যায়। সেটা দিন, তারিখ, সময় ধরে ভূমিকম্পের বিষয়ে দেয়া যায় না। যেমনটা ফেসবুকে দেয়া হয়েছে।

তবে একটি ভূমিকম্প হওয়ার পর পরবর্তী কয়েক বছরের সময়সীমার মধ্যে ভূমিকম্পের আশঙ্কা হিসাব করা যায়।’ তাই এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন এই দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় জরুরি।

এটি কোথায় ঘটবে, কখন ঘটবে এবং কত বড় আকারের হবে। সংস্থাটি বলছে, এখন পর্যন্ত কেউই নিশ্চিতভাবে এটি আগে বলতে পারে না।

ইতালির রোমের সেপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানের এবং যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস ম্যারোন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন।

ঢাকা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?

অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশে মোট তিনটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলে উৎপত্তি হওয়া ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ২।

গত ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহে ভূমিকম্পের এপিসেন্টার দেখা গেছে। যার সবই ঢাকার খুব কাছের এলাকা।

যদিও বাংলাদেশের পূর্ব ও উত্তর পাশকে ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ধরা হয়। বিশেষ করে সিলেট এবং চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে খুবই সক্রিয় ভূমিকম্প বেল্ট রয়েছে।

যেসব ফল্টে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো শক্তি জমা রয়েছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বাংলাদেশের আশপাশে বড় মানের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এমন হলে ঢাকার জন্য বড় বিপর্যয়ের কারণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া সাম্প্রতিক অনেকগুলো ভূমিকম্পের মূল কেন্দ্র ছিল পূর্বদিকে মিয়ানমার অথবা ভারতের মিজোরাম, মনিপুর এবং উত্তরে আসাম, নেপাল কিংবা ভুটানে।

গতমাসেও দুটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। যেগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট অঞ্চলের সীমান্ত এলাকায়।

দুই বছরে অন্তত ২৫ বার ভূমিকম্পে কেঁপেছে এ জনপদ। এছাড়া চলতি বছরের মে মাসেই ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল।

যার উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার দোহার থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে। এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি থাকায় তখন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন গবেষকরা।

আর ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর জন্য ঢাকাকে নিয়ে এত উদ্বেগ বলে জানালেন ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান।

তার মতে, দেশের উত্তর এবং পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্প হলে যেভাবে মাটির কম্পন অনুভূত হবে, ঢাকার ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না।

এখানে অনেক কম কম্পন হবে। জাপান, ক্যালিফোর্নিয়ার মতো ঢাকা অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। কিন্তু ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বেশি ক্ষতি হবে, হতাহতের হার বেশি হবে।

এই দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বহুবার বলা হয়েছে ভবনগুলো সঠিকভাবে তৈরি করতে। কিন্তু কেউ কারো কথা শুনছে না। এতে মাঝারি মাত্রায় ভূমিকম্প হলেও আতঙ্কিত হতে হয়।