ঢাকা ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুদানে তিন দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা!

Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ এপ্রিল ২০২৩
  • / ২০২ Time View

In this photo provided by Maheen S , smoke fills the sky in Khartoum, Sudan, near Doha International Hospital on Friday, April 21, 2023. The Muslim Eid al-Fitr holiday, typically filled with prayer, celebration and feasting — was a somber one in Sudan, as gunshots rang out across the capital of Khartoum and heavy smoke billowed over the skyline. (Maheen S via AP)

প্রায় এক সপ্তাহের সংঘর্ষের পর দেশের জনগণকে ঈদুল ফিতর উদযাপনের সুযোগ করে দিতে তিন দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে সুদানের সেনাবাহিনী। যদিও গতকাল শুক্রবার দেশটিতে ঈদ উদযাপনের মধ্যেই গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স শনিবার জানিয়েছে, সদানের সেনাবাহিনী দেশটি থেকে বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে ক্ষেত্রে সহায়তা করতে রাজি হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া সত্ত্বেও সেনাবাহিনী ও দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে বলেও খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

চলমান সংঘাতের এক পক্ষে রয়েছেন সুদানের সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। অপরপক্ষে রয়েছেন তারই ডেপুটি মোহাম্মদ হামদান দাগলো। গত শনিবার থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা আহমাদ আল-মান্দারি বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত দুই পক্ষের সংঘাতে কমপক্ষে ৩৩০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছে ৩ হাজার ২০০ এর বেশি মানুষ। হতাহতদের মধ্যে বহু বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সুদানের চলমান সংঘাত প্রধানত রাজধানী খার্তুম, পশ্চিম দারফুর অঞ্চল এবং অন্য কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এ সময় খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সেনা সদর দপ্তরের আশপাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা যায়।

খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী খার্তুমের আশপাশ এবং অন্যান্য অঞ্চলে আরএসএফ যোদ্ধারা ট্যাংক এবং মেশিনগান-সজ্জিত পিকআপ নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছেন। জীবন বাঁচাতে অনেকেই রাস্তায় গাড়ি ফেলে পালাতে বাধ্য হয়।

গত ছয় দিনের সংঘর্ষের কারণে সুদানে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ, খাদ্য, পানি এবং ওষুধের মতো জরুরি পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বেসামরিক নাগরিকদের বেশিরভাগই নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়িতে অবস্থান করছেন। কাজ-কর্মের সন্ধানে বাইরে যেতে না পারায় আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

সংঘর্ষে অন্যদের মতো বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) তিন কর্মীসহ পাঁচজন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। তিন কর্মী নিহত হওয়ার পর ডব্লিউএফপি সুদানে তার কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে।

আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ যখন খাদ্য সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল তখন দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সুদানে তিন দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা!

Update Time : ০৩:০৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ এপ্রিল ২০২৩

প্রায় এক সপ্তাহের সংঘর্ষের পর দেশের জনগণকে ঈদুল ফিতর উদযাপনের সুযোগ করে দিতে তিন দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে সুদানের সেনাবাহিনী। যদিও গতকাল শুক্রবার দেশটিতে ঈদ উদযাপনের মধ্যেই গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স শনিবার জানিয়েছে, সদানের সেনাবাহিনী দেশটি থেকে বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে ক্ষেত্রে সহায়তা করতে রাজি হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া সত্ত্বেও সেনাবাহিনী ও দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে বলেও খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

চলমান সংঘাতের এক পক্ষে রয়েছেন সুদানের সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। অপরপক্ষে রয়েছেন তারই ডেপুটি মোহাম্মদ হামদান দাগলো। গত শনিবার থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা আহমাদ আল-মান্দারি বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত দুই পক্ষের সংঘাতে কমপক্ষে ৩৩০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছে ৩ হাজার ২০০ এর বেশি মানুষ। হতাহতদের মধ্যে বহু বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সুদানের চলমান সংঘাত প্রধানত রাজধানী খার্তুম, পশ্চিম দারফুর অঞ্চল এবং অন্য কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এ সময় খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সেনা সদর দপ্তরের আশপাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা যায়।

খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী খার্তুমের আশপাশ এবং অন্যান্য অঞ্চলে আরএসএফ যোদ্ধারা ট্যাংক এবং মেশিনগান-সজ্জিত পিকআপ নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছেন। জীবন বাঁচাতে অনেকেই রাস্তায় গাড়ি ফেলে পালাতে বাধ্য হয়।

গত ছয় দিনের সংঘর্ষের কারণে সুদানে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ, খাদ্য, পানি এবং ওষুধের মতো জরুরি পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বেসামরিক নাগরিকদের বেশিরভাগই নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়িতে অবস্থান করছেন। কাজ-কর্মের সন্ধানে বাইরে যেতে না পারায় আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

সংঘর্ষে অন্যদের মতো বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) তিন কর্মীসহ পাঁচজন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। তিন কর্মী নিহত হওয়ার পর ডব্লিউএফপি সুদানে তার কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে।

আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ যখন খাদ্য সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল তখন দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।