ঢাকা ০১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঢাবির উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ

সহকারী প্রক্টরের আশ্বাসে চেয়ারম্যানের রুম খুলে দিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৯:১১:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৫৯৩ Time View

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ছেলে শিক্ষার্থীদের বুলিং ও হেনস্তা এবং শিক্ষার্থী উপদেষ্টা কর্তৃক স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্বমূলক আচরনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করেছে বিভাগের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী। এসময় বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা দিয়ে কক্ষের সামনে অবস্থান নেন তারা । পরে কলা অনুষদের সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ বদরুল হাসানের আশ্বাসে সাময়িকভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার(১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮.৩০ ঘটিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

চেয়ারম্যান এর কক্ষের সামনে অবস্থানকালে আন্দোলনকারীরা সমতার ডিপার্টমেন্টে অসমতা চলবে না ; বুলিংকারী, হেনস্তাকারী, বয়কট! বয়কট! ইত্যাদি বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

এসময় বিভাগের চেয়ারম্যান উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক অদিতি সবুর সহ অন্যান্য শিক্ষকরা তাদের সাথে কথা বলতে আসেন।

চেয়ারম্যান তাদেরকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরতে বললে তারা বলেন, মেয়েরা শিক্ষকদের সামনে আমাদের সেক্সুয়াল হ্যারাসার বলে সম্বোধন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা আমাদের প্রকাশ্যে আঘাত করতে চায় – কাটা চামচ নিয়ে এসে চোখ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। এতে আমাদের উপর প্রচন্ড মানসিক চাপ পড়ে। এরকম আতঙ্কিত অবস্থায় ক্লাস করতে প্রস্তুত নন বলে জানান তারা।

তারা এসময় চেয়ারম্যানের সামনে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন :

১। বুলিং এবং হেনস্তার জন্য নুঝাত মেহজাবিন, উমাইমা চৌধুরী মাইশা এবং হৃদিতা রহমার মাইমুনা কে শাস্তির আওতায় আনা।

২। শিক্ষার্থী উপদেষ্টা কে অব্যাহতি দিয়ে নতুন শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নিয়োগ করা।

৩। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং বৈষম্যহীন ভাবে সকল একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা।

৪। বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশরুম এবং সুপেয় পানি খাওয়ার ফিল্টার স্থাপন করা৷

পরে কলা অনুষদের জন্য নিযুক্ত সহকারী প্রক্টর
মুহাম্মদ বদরুল হাসান ঘটনাস্থলে আসেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের বিষয়টি আমরা খুব সিরিয়াসলি দেখছি। ইতোমধ্যেই আমাদের প্রক্টর স্যার আমাদেরকে সাথে নিয়ে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। তোমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপরে আস্থা রাখো, আমরা তোমাদের সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান দিতে চেষ্টা করবো।

এতে সাময়িকভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে চেয়ারম্যানের কক্ষের তালা খুলে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা৷

জানতে চাইলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, ইমরান হোসেন নামে ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে বিভাগের গুটি কয়েক নারী শিক্ষার্থী চরমভাবে বুলিং এবং হেনস্তা করেছে। এছাড়া মনোয়ার হোসেন, সবুজ সহ আমাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে তারা।

তিনি বলেন, আমরা কয়েক জন মিলে একটি ট্যুর দেই যে ট্যুর কে তারা সেক্সুয়াল হ্যারাসার দের ট্যুর বলে মন্তব্য করে। আমরা এর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাই। কিন্তু ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি।

তাদেরকে থ্রেট দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধু বুলিং ই নয়, ঐ বর্ষের শিক্ষার্থী উমাইমা চৌধুরী মাইশা মেসেঞ্জার গ্রুপে কাঁটা চামচ নিয়ে এসে আমাদের চোখ তুলে ফেলারও হুমকি দিয়েছে যার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।

ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা অমিয় সৃজন সাম্য স্যারের রুমকে টর্চার সেল বানানো হয়েছে মন্তব্য করে শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, শিক্ষার্থী উপদেষ্টার কাজ হলো কোনো অভিযোগ হলে তার সত্যতা যাচাই করা, কিন্তু তিনি সত্যতা যাচাই না করে জোরপূর্বক সেই অভিযোগ প্রমাণ করতে চান।

শিক্ষার্থী উপদেষ্টার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জানানো হয়েছে কি না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে জানিয়েছি যে এই শিক্ষার্থী উপদেষ্টার উপর আমাদের আস্থা নেই। কিন্তু চেয়ারম্যান ম্যাডাম কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং উনাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন।

তাদের আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে চাইলেও শিক্ষকরা তাদেরকে ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন জানিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সবুজ আহমেদ বলেন, এখানে আমাদের সাথে অনেক নারী শিক্ষার্থীরাও যুক্ত হতে চাইছেন। কিন্তু তাদেরকে শিক্ষকরা ভয়- ভীতি দেখাচ্ছেন। সহযোগী অধ্যাপক অদিতি সবুর তাদেরকে ” ইউ উইল বি দ্য নেক্সট টার্গেট” বলেও ভয় দেখিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুঝাত মেহজাবিন বলেন, আমি ভুলবশত আমাদের মেসেঞ্জার গ্রুপে “সেক্সুয়াল হ্যারাসারদের ট্যুর ” শব্দটি উল্লেখ করে একটি মেসেজ দেই, যার ফলে আমার বিরুদ্ধে তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এটি নিয়ে আমি পরে ক্ষমা চাই এবং শিক্ষকদের মাধ্যমে বিষয়টার সুরাহা হয়। এখন তারা আবার কেন বিষয়টি তুলছে তা বুঝতে পারছি না।

এ ব্যাপারে উমাইমা চৌধুরী মাঈশা দৈনিক নওরোজকে বলেন, তিনি আসলে তার বন্ধু নিতুকে মজা করে এসব বলেছিলেন।

উমাইমা চৌধুরী বলেন, আমার বিভাগের কতিপয় ছাত্র (ইমরান হোসেন ,শফিকুল ইসলাম ,সজিব আহমেদ সবুজ) আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে ডিপার্টমেন্ট এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং আমার সম্মান নষ্টের চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, আমার একটা স্টেটমেন্ট কে তারা নিজের সুবিধামত এডিট করে সাজিয়েছে এবং সম্পূর্ণ ব্যক্তগত ক্ষোভ থেকে এটা করা হয়েছে কারণ তাদের সাথে গতমাসে আমার কিছু মতের অমিল দেখা দিয়েছিলো যার ফলে আমি তাদের সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। ওইদিনই শফিকুল ইসলাম আমাকে একান্তভাবে ফোনে যোগাযোগ করতে বলে কিন্তু আমি তা নাকচ করে দেই।

উমাইমা চৌধুরী বলেন, পরবর্তীতে গ্রুপে ম্যাসেজ এর সময় আমি আমার খুব কাছের বন্ধু নিতুকে “কাঁটাচামচ দিচে চোখের পর্দা সরিয়ে দিবো” বলি, তার ব্যাক্তিগত জীবনের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য। পরবর্তীতে আমি বিষয়টা ক্লিয়ারও করে দেই নিতুকে। নিতুও যা ঠাট্টা হিসেবেই নেয়। কিন্তু শফিক,ইমরান এবং সবুজ সেখান থেকে অর্ধেক ম্যাসেজ এর স্ক্রিনশর্ট নিয়ে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ আনে। উক্ত ঘটনাকে নিয়ে আমাকে অনেক কুরুচিরপূর্ন মতবাদ দেওয়া হচ্ছে যা আমার সম্মান হনন এর মতো কাজ করেছে যার ফলে আমি এখন আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

এদিকে এই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহ বলেন, একটি ব্যাচের মধ্যে একটা সমস্যা দেখা যায়, যেটা মিটমাট করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেটাকে পুনরায় ইস্যু বানিয়ে সূর্যসেন হল ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক মনোয়ার হোসেন প্রান্ত, শফিকুল ইসলাম সহ কিছু শিক্ষার্থী ডিপার্টমেন্টকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে।

এ প্রসঙ্গে বিভাগের চেয়ারম্যান উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানা বলেন, আমাদের কাছে শিক্ষার্থী উপদেষ্টা কে নিয়ে বা অন্যান্য হুমকি নিয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ করা হয় নি। তাদের আমি সকল অভিযোগ লিখিত আকারে দিতে বলেছি এবং সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে বলেও নিশ্চয়তা দিয়েছি।

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাবির উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ

সহকারী প্রক্টরের আশ্বাসে চেয়ারম্যানের রুম খুলে দিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

Update Time : ০৯:১১:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ছেলে শিক্ষার্থীদের বুলিং ও হেনস্তা এবং শিক্ষার্থী উপদেষ্টা কর্তৃক স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্বমূলক আচরনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করেছে বিভাগের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী। এসময় বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা দিয়ে কক্ষের সামনে অবস্থান নেন তারা । পরে কলা অনুষদের সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ বদরুল হাসানের আশ্বাসে সাময়িকভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার(১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮.৩০ ঘটিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

চেয়ারম্যান এর কক্ষের সামনে অবস্থানকালে আন্দোলনকারীরা সমতার ডিপার্টমেন্টে অসমতা চলবে না ; বুলিংকারী, হেনস্তাকারী, বয়কট! বয়কট! ইত্যাদি বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

এসময় বিভাগের চেয়ারম্যান উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক অদিতি সবুর সহ অন্যান্য শিক্ষকরা তাদের সাথে কথা বলতে আসেন।

চেয়ারম্যান তাদেরকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরতে বললে তারা বলেন, মেয়েরা শিক্ষকদের সামনে আমাদের সেক্সুয়াল হ্যারাসার বলে সম্বোধন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা আমাদের প্রকাশ্যে আঘাত করতে চায় – কাটা চামচ নিয়ে এসে চোখ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। এতে আমাদের উপর প্রচন্ড মানসিক চাপ পড়ে। এরকম আতঙ্কিত অবস্থায় ক্লাস করতে প্রস্তুত নন বলে জানান তারা।

তারা এসময় চেয়ারম্যানের সামনে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন :

১। বুলিং এবং হেনস্তার জন্য নুঝাত মেহজাবিন, উমাইমা চৌধুরী মাইশা এবং হৃদিতা রহমার মাইমুনা কে শাস্তির আওতায় আনা।

২। শিক্ষার্থী উপদেষ্টা কে অব্যাহতি দিয়ে নতুন শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নিয়োগ করা।

৩। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং বৈষম্যহীন ভাবে সকল একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা।

৪। বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশরুম এবং সুপেয় পানি খাওয়ার ফিল্টার স্থাপন করা৷

পরে কলা অনুষদের জন্য নিযুক্ত সহকারী প্রক্টর
মুহাম্মদ বদরুল হাসান ঘটনাস্থলে আসেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের বিষয়টি আমরা খুব সিরিয়াসলি দেখছি। ইতোমধ্যেই আমাদের প্রক্টর স্যার আমাদেরকে সাথে নিয়ে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। তোমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপরে আস্থা রাখো, আমরা তোমাদের সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান দিতে চেষ্টা করবো।

এতে সাময়িকভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে চেয়ারম্যানের কক্ষের তালা খুলে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা৷

জানতে চাইলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, ইমরান হোসেন নামে ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে বিভাগের গুটি কয়েক নারী শিক্ষার্থী চরমভাবে বুলিং এবং হেনস্তা করেছে। এছাড়া মনোয়ার হোসেন, সবুজ সহ আমাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে তারা।

তিনি বলেন, আমরা কয়েক জন মিলে একটি ট্যুর দেই যে ট্যুর কে তারা সেক্সুয়াল হ্যারাসার দের ট্যুর বলে মন্তব্য করে। আমরা এর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাই। কিন্তু ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি।

তাদেরকে থ্রেট দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধু বুলিং ই নয়, ঐ বর্ষের শিক্ষার্থী উমাইমা চৌধুরী মাইশা মেসেঞ্জার গ্রুপে কাঁটা চামচ নিয়ে এসে আমাদের চোখ তুলে ফেলারও হুমকি দিয়েছে যার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।

ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা অমিয় সৃজন সাম্য স্যারের রুমকে টর্চার সেল বানানো হয়েছে মন্তব্য করে শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, শিক্ষার্থী উপদেষ্টার কাজ হলো কোনো অভিযোগ হলে তার সত্যতা যাচাই করা, কিন্তু তিনি সত্যতা যাচাই না করে জোরপূর্বক সেই অভিযোগ প্রমাণ করতে চান।

শিক্ষার্থী উপদেষ্টার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জানানো হয়েছে কি না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যান ম্যাডামকে জানিয়েছি যে এই শিক্ষার্থী উপদেষ্টার উপর আমাদের আস্থা নেই। কিন্তু চেয়ারম্যান ম্যাডাম কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং উনাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন।

তাদের আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে চাইলেও শিক্ষকরা তাদেরকে ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন জানিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সবুজ আহমেদ বলেন, এখানে আমাদের সাথে অনেক নারী শিক্ষার্থীরাও যুক্ত হতে চাইছেন। কিন্তু তাদেরকে শিক্ষকরা ভয়- ভীতি দেখাচ্ছেন। সহযোগী অধ্যাপক অদিতি সবুর তাদেরকে ” ইউ উইল বি দ্য নেক্সট টার্গেট” বলেও ভয় দেখিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুঝাত মেহজাবিন বলেন, আমি ভুলবশত আমাদের মেসেঞ্জার গ্রুপে “সেক্সুয়াল হ্যারাসারদের ট্যুর ” শব্দটি উল্লেখ করে একটি মেসেজ দেই, যার ফলে আমার বিরুদ্ধে তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এটি নিয়ে আমি পরে ক্ষমা চাই এবং শিক্ষকদের মাধ্যমে বিষয়টার সুরাহা হয়। এখন তারা আবার কেন বিষয়টি তুলছে তা বুঝতে পারছি না।

এ ব্যাপারে উমাইমা চৌধুরী মাঈশা দৈনিক নওরোজকে বলেন, তিনি আসলে তার বন্ধু নিতুকে মজা করে এসব বলেছিলেন।

উমাইমা চৌধুরী বলেন, আমার বিভাগের কতিপয় ছাত্র (ইমরান হোসেন ,শফিকুল ইসলাম ,সজিব আহমেদ সবুজ) আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে ডিপার্টমেন্ট এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং আমার সম্মান নষ্টের চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, আমার একটা স্টেটমেন্ট কে তারা নিজের সুবিধামত এডিট করে সাজিয়েছে এবং সম্পূর্ণ ব্যক্তগত ক্ষোভ থেকে এটা করা হয়েছে কারণ তাদের সাথে গতমাসে আমার কিছু মতের অমিল দেখা দিয়েছিলো যার ফলে আমি তাদের সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। ওইদিনই শফিকুল ইসলাম আমাকে একান্তভাবে ফোনে যোগাযোগ করতে বলে কিন্তু আমি তা নাকচ করে দেই।

উমাইমা চৌধুরী বলেন, পরবর্তীতে গ্রুপে ম্যাসেজ এর সময় আমি আমার খুব কাছের বন্ধু নিতুকে “কাঁটাচামচ দিচে চোখের পর্দা সরিয়ে দিবো” বলি, তার ব্যাক্তিগত জীবনের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য। পরবর্তীতে আমি বিষয়টা ক্লিয়ারও করে দেই নিতুকে। নিতুও যা ঠাট্টা হিসেবেই নেয়। কিন্তু শফিক,ইমরান এবং সবুজ সেখান থেকে অর্ধেক ম্যাসেজ এর স্ক্রিনশর্ট নিয়ে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ আনে। উক্ত ঘটনাকে নিয়ে আমাকে অনেক কুরুচিরপূর্ন মতবাদ দেওয়া হচ্ছে যা আমার সম্মান হনন এর মতো কাজ করেছে যার ফলে আমি এখন আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

এদিকে এই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহ বলেন, একটি ব্যাচের মধ্যে একটা সমস্যা দেখা যায়, যেটা মিটমাট করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেটাকে পুনরায় ইস্যু বানিয়ে সূর্যসেন হল ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক মনোয়ার হোসেন প্রান্ত, শফিকুল ইসলাম সহ কিছু শিক্ষার্থী ডিপার্টমেন্টকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে।

এ প্রসঙ্গে বিভাগের চেয়ারম্যান উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানা বলেন, আমাদের কাছে শিক্ষার্থী উপদেষ্টা কে নিয়ে বা অন্যান্য হুমকি নিয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ করা হয় নি। তাদের আমি সকল অভিযোগ লিখিত আকারে দিতে বলেছি এবং সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে বলেও নিশ্চয়তা দিয়েছি।