ঢাকা ০১:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করুন: বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ অজ্ঞান করে স্বর্ণ ও টাকা চুরির রহস্য উদঘাটন ও চোরাই মালামালসহ গ্রেফতার ১ কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার” টাঙ্গাইলে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধের মৃত্যু আখেরী মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে জাকের পার্টির বিশ্ব ইসলামি মহা সম্মেলন ও মহা পবিত্র ফাতেহা শরীফের সমাপ্তি টঙ্গীতে পরিবহনে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৮ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবঃ প্রধান বিচারপতি 

শ্বশুরের কাটা মাথার খোঁজে পুত্রবধূকে নিয়ে সাগর পাড়ে পিবিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:২১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১০৭ Time View

চট্টগ্রাম নগরের আলোচিত মো. হাসান (৬১) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগীর কাটা মাথা উদ্ধারে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সংস্থাটির চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কর্মকর্তারা রোববার (১ অক্টোবর) থেকে ভুক্তভোগী হাসানের পুত্রবধূ আনারকলিকে নিয়ে এ তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে। তার দেখানো মতে রোববার সাগর পাড় তন্নতন্ন করেও ভুক্তভোগীর কাটা মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তল্লাশির ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে আবার অভিযানে নামে পিবিআই কর্মকর্তারা। তবে জোয়ারের কারণে এদিন দুপুরে তল্লাশি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। এসময় অভিযুক্ত আনারকলিকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রাখে পিবিআই।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান বলেন, আনারকলি হাসান হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত নয়। তবে তিনি হত্যার আলামত গোপনে সহযোগী।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (শনিবার) তাকে আদালতে হাজির করে ৩ দিনের রিমান্ডে আনা হয়।

প্রথমে তাকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়। এরপর রোববার ও সোমবার তাকে নিয়ে ভুক্তভোগী হাসানের কাটা মাথা উদ্ধারে অভিযানে যাই। কিন্তু এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, মূলত তার স্বামী অর্থাৎ হাসানের ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীরের বাসায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এরপর হাসানের মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড করে আনারকলির লাগেজে করে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর আরেকটি থলেতে করে কাটা মাথা ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া শরীরের কিছু অংশ আকমল আলী রোডের একটি খালে ফেলে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি লাগেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মানুষের শরীরের ৮টি খণ্ড। এর মধ্যে ছিল ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ।

প্রত্যেকটি অংশ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। তবে ওই লাগেজে ভুক্তভোগীর মাথা না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, খণ্ডবিখণ্ড এই মরদেহ পরিচয় শনাক্ত ও রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামেন পিবিআই কর্মকর্তারা। তারা প্রথমে ফিঙ্গারপ্রিন্টের সহায়তায় নিহত ব্যক্তি মো. হাসান বলে শনাক্ত করেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী হাসান বাঁশখালীর উপজেলার কাথারিয়া এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা লেখা আছে সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির এলাকায়।

পিবিআই জানায়, অন্তত ২৮ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এসময়ে তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা।

বছরখানেক আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেটি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন ভুক্তভোগী হাসান।

এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনের একটি বাসায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে হাসানকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী হাসানের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম (৫০) ও তাদের বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি বাবাকে হত্যার কারণ, কীভাবে হত্যা করা হয় এবং কীভাবে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় তার বর্ণনা দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

শ্বশুরের কাটা মাথার খোঁজে পুত্রবধূকে নিয়ে সাগর পাড়ে পিবিআই

Update Time : ০৫:২১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩

চট্টগ্রাম নগরের আলোচিত মো. হাসান (৬১) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগীর কাটা মাথা উদ্ধারে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সংস্থাটির চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কর্মকর্তারা রোববার (১ অক্টোবর) থেকে ভুক্তভোগী হাসানের পুত্রবধূ আনারকলিকে নিয়ে এ তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে। তার দেখানো মতে রোববার সাগর পাড় তন্নতন্ন করেও ভুক্তভোগীর কাটা মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তল্লাশির ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে আবার অভিযানে নামে পিবিআই কর্মকর্তারা। তবে জোয়ারের কারণে এদিন দুপুরে তল্লাশি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। এসময় অভিযুক্ত আনারকলিকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রাখে পিবিআই।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান বলেন, আনারকলি হাসান হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত নয়। তবে তিনি হত্যার আলামত গোপনে সহযোগী।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (শনিবার) তাকে আদালতে হাজির করে ৩ দিনের রিমান্ডে আনা হয়।

প্রথমে তাকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়। এরপর রোববার ও সোমবার তাকে নিয়ে ভুক্তভোগী হাসানের কাটা মাথা উদ্ধারে অভিযানে যাই। কিন্তু এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, মূলত তার স্বামী অর্থাৎ হাসানের ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীরের বাসায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এরপর হাসানের মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড করে আনারকলির লাগেজে করে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর আরেকটি থলেতে করে কাটা মাথা ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া শরীরের কিছু অংশ আকমল আলী রোডের একটি খালে ফেলে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি লাগেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মানুষের শরীরের ৮টি খণ্ড। এর মধ্যে ছিল ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ।

প্রত্যেকটি অংশ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। তবে ওই লাগেজে ভুক্তভোগীর মাথা না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, খণ্ডবিখণ্ড এই মরদেহ পরিচয় শনাক্ত ও রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামেন পিবিআই কর্মকর্তারা। তারা প্রথমে ফিঙ্গারপ্রিন্টের সহায়তায় নিহত ব্যক্তি মো. হাসান বলে শনাক্ত করেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী হাসান বাঁশখালীর উপজেলার কাথারিয়া এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা লেখা আছে সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির এলাকায়।

পিবিআই জানায়, অন্তত ২৮ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এসময়ে তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা।

বছরখানেক আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেটি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন ভুক্তভোগী হাসান।

এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনের একটি বাসায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে হাসানকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী হাসানের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম (৫০) ও তাদের বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি বাবাকে হত্যার কারণ, কীভাবে হত্যা করা হয় এবং কীভাবে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় তার বর্ণনা দেন।