ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তি পেল বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নিয়ে নির্মিত সিরিজ ‘ক্যাম্পাস রিটার্নস’

মুহাম্মদ ইমাম-উল-জাননাহ
  • Update Time : ১২:২৬:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১০৮ Time View

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে মুক্তি পেল তরুণ নির্মাতা জিৎ দের পরিচালনায় নির্মিত ওয়েব সিরিজ ‘ক্যাম্পাস রিটার্নস’। বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাস জীবন নিয়ে নির্মিত এ সিরিজটিতে অভিনয় করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সিরিজটির গল্প, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা জিৎ দে। সেই সঙ্গে সিনেমাটোগ্রাফি ও সম্পাদনাও করেছেন পরিচালক নিজে। সিরিজটির এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসেবে কাজ করেছেন এম এ লতিফ।

জানা গেছে, মূল ধারার বাইরে গিয়ে, কোনো স্টার কাস্ট ছাড়া অপেশাদার নতুন মুখ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয় পরিচালককে। তাছাড়া অভিনয় শিল্পীরা সবাই যেহেতু বর্তমান শিক্ষার্থী তাই সবার ক্লাস পরীক্ষার ফাঁকে শিডিউল মিলিয়ে কাজ করাটাও অনেক কঠিন ব্যাপার ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত একটি অডিশনের মাধ্যমে সিরিজটির জন্য অভিনয় শিল্পী নির্বাচন করা হয় । তবে নাটকের জন্য অভিনয়শিল্পীদের কোনো পারিশ্রমিক বা সম্মানী দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ অভিনয়শিল্পীরা সকলেই স্বেচ্ছায় এ কাজ করেছেন।

অডিশন থেকে আসা যেসব অভিনয়শিল্পীরা সিরিজটিতে কাজ করেছেন তারা হলেন অতসী, সোহান, রাগীব, শান্তা, সুমন, মৃত্যুঞ্জয়, জয়ন্ত, নাজমুল, আদৃতা, কৌশিক, উসেন, জ্যাম, সাদেক, শোয়েব, শাওন, অন্তি, মিতু, লাবন্য, তাপসী, প্রিয়, ডাবলু, কুটুম, পিয়াল, রাফি, প্রমুখ।

সিরিজের গল্প নিয়ে পরিচালক জিৎ দে জানান, ক্যাম্পাস রিটার্নস সিরিজে ফুটে উঠেছে সমসাময়িক ক্যাম্পাস জীবনের নানা গল্প। ক্যাম্পাসের গল্প মানেই বিশাল ক্যানভাস। তাই গল্পের বুননের স্বার্থে চিত্রনাট্য কিছুটা হাইপার লিংক করা হয়েছে। তবে আমি সময়টাকে ধরতে চেয়েছি। বিশেষ করে সময়ের অস্থিরতা। যে অস্থিরতা প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করছে তরুণদের।

পরিচালক জিৎ দে বলেন, যেহেতু ক্যাম্পাস লাইফ নিয়ে গল্প তাই আমি মনে করি একটা সত্যিকারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে পর্দায় দেখলে দর্শকের মনে যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে সেটি কোনো স্টার কাস্ট দিয়ে সম্ভব না। আর এসব অপেশাদার অভিনেতাদের নিয়ে নিজের মতো করে নিরীক্ষা করা যায়, চরিত্রের মনস্তত্ত্বকে সহজে ভাঙ্গা যায়।

যেহেতু ভার্সিটি লাইফের গল্প আর অভিনয়শিল্পীও সবাই ভার্সিটির শিক্ষার্থী তাই ‘ক্যাম্পাস রিটার্নস’ সিরিজটির মতো এমন কাজ অবশ্যই বিরল এবং অত্যন্ত নিরীক্ষা সম্পন্ন বলে মনে করেন জিৎ দে।

ইউটিউবে মুক্তি দেওয়া প্রসঙ্গে পরিচালক জিৎ দে জানান, যেহেতু কাজটা মূল ধারার বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ বিকল্প ধারার তাই আমরা চাচ্ছি দর্শকের কাছে পৌঁছানোর ধরণটাও বিকল্প হোক। দর্শক সহজে দেখুক।

জানতে চাইলে সিরিজের অভিনয়শিল্পী ফাইজা শওকত অতশী দৈনিক নওরোজকে বলেন, ক্যাম্পাস রিটার্নস এর মতো একটি সিরিজে অভিনয় করে আমি খুবই আনন্দিত। সমসাময়িক ক্যাম্পাস জীবন নিয়ে নির্মিত এ নাটকটি।

অতশী বলেন, আমাদের অভিনয়শিল্পী দের কারোই পূর্বে এরকম নাটক বা সিরিজে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা ছিল না। এছাড়া পর্যাপ্ত ফান্ডিং না থাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী হওয়ায় অভিনয় করাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল।

সিরিজের চরিত্র প্রসঙ্গে অতসী বলেন, সিরিজে আমার চরিত্রটি একজন সিরিয়াস শিক্ষার্থীর – যে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করে । ব্যাতিক্রমধর্মী এ সিরিজটি দর্শকদের মন জয় করতে সক্ষম হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফাইজা শওকত অতশী।

জানা গেছে, পরিচালক জিৎ এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র থাকাকালীন ক্যাম্পাস ক্লাইমাক্স নামে একটি মুভি নির্মাণ করেছিলেন। সেই সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেছিলেন হালের জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার। সিনেমাটি মুক্তির পর সেই সময় দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিন্তু মুক্তির মাত্র কয়েক দিনের মাথায় সিনেমাটি করোনা ও লকডাউনের কবলে পড়ে। তখন থেমে যায় ছবির দেশ বিদেশে নির্ধারিত সমস্ত প্রচার ও প্রদর্শনী। তবু ইউটিউবে যেসব দর্শক দেখেন তারা ছবিটির প্রশংসা করেন এবং পরিচালককে অনুরোধ করেন ক্যাম্পাস লাইফ নিয়ে নতুন কিছু তৈরি করতে। তাই পরিচালক জিৎ দে এবার ভার্সিটি লাইফ নিয়ে নির্মাণ করলেন ওয়েব সিরিজ ক্যাম্পাস রিটার্নস।


ফেয়ার ফ্লিক্স ইউটিউব চ্যানেলে ক্যাম্পাস রিটার্নস লিখে সার্চ দিলেই সিরিজটি দেখা যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নিয়ে এমন একটি সিরিজ নির্মাণ হওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান এস এম ইমরান হোসেন বলেন, আমি খুবই আনন্দিত যে ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক একটি প্রোডাকশন তৈরি হয়েছে। এখানে অভিনেতা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের। আমি এ সিরিজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানাই।

এ ধরনের নাটক ও সিরিজ আরও হওয়া উচিত বলেও মনে করেন এস এম ইমরান হোসেন।

Please Share This Post in Your Social Media

মুক্তি পেল বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নিয়ে নির্মিত সিরিজ ‘ক্যাম্পাস রিটার্নস’

Update Time : ১২:২৬:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে মুক্তি পেল তরুণ নির্মাতা জিৎ দের পরিচালনায় নির্মিত ওয়েব সিরিজ ‘ক্যাম্পাস রিটার্নস’। বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাস জীবন নিয়ে নির্মিত এ সিরিজটিতে অভিনয় করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সিরিজটির গল্প, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা জিৎ দে। সেই সঙ্গে সিনেমাটোগ্রাফি ও সম্পাদনাও করেছেন পরিচালক নিজে। সিরিজটির এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসেবে কাজ করেছেন এম এ লতিফ।

জানা গেছে, মূল ধারার বাইরে গিয়ে, কোনো স্টার কাস্ট ছাড়া অপেশাদার নতুন মুখ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয় পরিচালককে। তাছাড়া অভিনয় শিল্পীরা সবাই যেহেতু বর্তমান শিক্ষার্থী তাই সবার ক্লাস পরীক্ষার ফাঁকে শিডিউল মিলিয়ে কাজ করাটাও অনেক কঠিন ব্যাপার ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত একটি অডিশনের মাধ্যমে সিরিজটির জন্য অভিনয় শিল্পী নির্বাচন করা হয় । তবে নাটকের জন্য অভিনয়শিল্পীদের কোনো পারিশ্রমিক বা সম্মানী দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ অভিনয়শিল্পীরা সকলেই স্বেচ্ছায় এ কাজ করেছেন।

অডিশন থেকে আসা যেসব অভিনয়শিল্পীরা সিরিজটিতে কাজ করেছেন তারা হলেন অতসী, সোহান, রাগীব, শান্তা, সুমন, মৃত্যুঞ্জয়, জয়ন্ত, নাজমুল, আদৃতা, কৌশিক, উসেন, জ্যাম, সাদেক, শোয়েব, শাওন, অন্তি, মিতু, লাবন্য, তাপসী, প্রিয়, ডাবলু, কুটুম, পিয়াল, রাফি, প্রমুখ।

সিরিজের গল্প নিয়ে পরিচালক জিৎ দে জানান, ক্যাম্পাস রিটার্নস সিরিজে ফুটে উঠেছে সমসাময়িক ক্যাম্পাস জীবনের নানা গল্প। ক্যাম্পাসের গল্প মানেই বিশাল ক্যানভাস। তাই গল্পের বুননের স্বার্থে চিত্রনাট্য কিছুটা হাইপার লিংক করা হয়েছে। তবে আমি সময়টাকে ধরতে চেয়েছি। বিশেষ করে সময়ের অস্থিরতা। যে অস্থিরতা প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করছে তরুণদের।

পরিচালক জিৎ দে বলেন, যেহেতু ক্যাম্পাস লাইফ নিয়ে গল্প তাই আমি মনে করি একটা সত্যিকারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে পর্দায় দেখলে দর্শকের মনে যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে সেটি কোনো স্টার কাস্ট দিয়ে সম্ভব না। আর এসব অপেশাদার অভিনেতাদের নিয়ে নিজের মতো করে নিরীক্ষা করা যায়, চরিত্রের মনস্তত্ত্বকে সহজে ভাঙ্গা যায়।

যেহেতু ভার্সিটি লাইফের গল্প আর অভিনয়শিল্পীও সবাই ভার্সিটির শিক্ষার্থী তাই ‘ক্যাম্পাস রিটার্নস’ সিরিজটির মতো এমন কাজ অবশ্যই বিরল এবং অত্যন্ত নিরীক্ষা সম্পন্ন বলে মনে করেন জিৎ দে।

ইউটিউবে মুক্তি দেওয়া প্রসঙ্গে পরিচালক জিৎ দে জানান, যেহেতু কাজটা মূল ধারার বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ বিকল্প ধারার তাই আমরা চাচ্ছি দর্শকের কাছে পৌঁছানোর ধরণটাও বিকল্প হোক। দর্শক সহজে দেখুক।

জানতে চাইলে সিরিজের অভিনয়শিল্পী ফাইজা শওকত অতশী দৈনিক নওরোজকে বলেন, ক্যাম্পাস রিটার্নস এর মতো একটি সিরিজে অভিনয় করে আমি খুবই আনন্দিত। সমসাময়িক ক্যাম্পাস জীবন নিয়ে নির্মিত এ নাটকটি।

অতশী বলেন, আমাদের অভিনয়শিল্পী দের কারোই পূর্বে এরকম নাটক বা সিরিজে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা ছিল না। এছাড়া পর্যাপ্ত ফান্ডিং না থাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী হওয়ায় অভিনয় করাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল।

সিরিজের চরিত্র প্রসঙ্গে অতসী বলেন, সিরিজে আমার চরিত্রটি একজন সিরিয়াস শিক্ষার্থীর – যে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করে । ব্যাতিক্রমধর্মী এ সিরিজটি দর্শকদের মন জয় করতে সক্ষম হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফাইজা শওকত অতশী।

জানা গেছে, পরিচালক জিৎ এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র থাকাকালীন ক্যাম্পাস ক্লাইমাক্স নামে একটি মুভি নির্মাণ করেছিলেন। সেই সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেছিলেন হালের জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার। সিনেমাটি মুক্তির পর সেই সময় দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিন্তু মুক্তির মাত্র কয়েক দিনের মাথায় সিনেমাটি করোনা ও লকডাউনের কবলে পড়ে। তখন থেমে যায় ছবির দেশ বিদেশে নির্ধারিত সমস্ত প্রচার ও প্রদর্শনী। তবু ইউটিউবে যেসব দর্শক দেখেন তারা ছবিটির প্রশংসা করেন এবং পরিচালককে অনুরোধ করেন ক্যাম্পাস লাইফ নিয়ে নতুন কিছু তৈরি করতে। তাই পরিচালক জিৎ দে এবার ভার্সিটি লাইফ নিয়ে নির্মাণ করলেন ওয়েব সিরিজ ক্যাম্পাস রিটার্নস।


ফেয়ার ফ্লিক্স ইউটিউব চ্যানেলে ক্যাম্পাস রিটার্নস লিখে সার্চ দিলেই সিরিজটি দেখা যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নিয়ে এমন একটি সিরিজ নির্মাণ হওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান এস এম ইমরান হোসেন বলেন, আমি খুবই আনন্দিত যে ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক একটি প্রোডাকশন তৈরি হয়েছে। এখানে অভিনেতা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের। আমি এ সিরিজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানাই।

এ ধরনের নাটক ও সিরিজ আরও হওয়া উচিত বলেও মনে করেন এস এম ইমরান হোসেন।