ঢাকা ০৬:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার” টাঙ্গাইলে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধের মৃত্যু আখেরী মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে জাকের পার্টির বিশ্ব ইসলামি মহা সম্মেলন ও মহা পবিত্র ফাতেহা শরীফের সমাপ্তি টঙ্গীতে পরিবহনে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৮ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবঃ প্রধান বিচারপতি  শত কোটি টাকা আত্মসাৎ: দেশত্যাগের সময় বিমানবন্দরে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক লালপুরে আ,লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ইবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আনসার কর্তৃক শিক্ষক হেনস্তার অভিযোগ

মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে বাল্যবন্ধুকে হত্যার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার

আরিফুল হক নভেল
  • Update Time : ০৭:৫৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৩০ Time View

পিবিআই গাজীপুরের একটি টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি শ্রী জয় চন্দ্র রায় (১৯), পিতা- শ্রী কমল চন্দ্র রায়, সাং-নারায়নপুর দেবপাড়া, থানা- পার্বতীপুর,জেলা- দিনাজপুর বর্তমানে- সাং-কলাবাঁধা (মোঃ রাজিব মিয়ার বাড়ির ভাড়াটে), থানা- কালিয়াকৈর জেলাগাজীপুরকে পলাতক থাকা অবস্থায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার মৌচাক এলাকা থেকে ২৯/১১/২০২৩খ্রিঃ তারিখ রাত ০৫.২৫ মিনিটে গ্রেফতার করে।

নিহত আজাদ

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ মামলার বাদী মোসাঃ মাজেদা খাতুন (৩৮), স্বামী মোঃ শিবলু খান, সাং দেওজানা, থানা-ঘাটাইল, জেলাটাঙ্গাইল, এ/পি সাং কলাবাধা (ইউনুছ আলীর বাড়ীর ভাড়াটে), থানা- কালিয়াকৈর, জেলা- গাজীপুর এর ছেলে আজাদ খান (২০) তাদের সাথে বর্তমান ঠিকানায় থেকে রাজমিন্ত্রির যোগালীর কাজ করতো।

গত ২৪/১১/২০২৩ খ্রিঃ রাত অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকায় তার ছেলে বাসা হতে বের হয়। ঐ দিন রাতে আর বাসায় না ফিরলে তিনি তাঁর ছেলের মোবাইল নং ০১৯৯৩৩৪৯৫০৭-তে ফোন কল করলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে তাকে অশালীন ভাষায় গালি দিয়ে তার ছেলেকে পেতে হলে টাকা দিতে হবে এবং টাকা যোগাড় করে জানাতে বলে।

তিনি লোকজন নিয়ে তাঁর ছেলেকে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ২৭/১১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.০০ ঘটিকায় লোকমুখে সংবাদ পান যে, কলাবাঁধা সাকিনে জনৈক মধু, পিতা-মৃত আফসার এর মাছের খামারে একজন যুবক পুরুষ লোকের লাশ পানিতে ভাসছে। এ সংবাদ পেয়ে তিনি বর্ণিত স্থানে যান এবং পানির মধ্যে একটি পুরুষ লোকের পচন ধরা ফোলা লাশ দেখেন। পরে পুলিশ এসে লাশ পানি হতে উপরে উঠালে লাশের গায়ে থাকা শার্ট, প্যান্ট ও কোমরে থাকা দুটি চাবি দেখে উক্ত লাশটি তার ছেলের লাশ বলে শনাক্ত করেন। তার ছেলের গালের ডান পাশে ছিদ্র যুক্ত জখম ও বুকের ডান পাশে দুটি ছিদ্র যুক্ত রক্তাক্ত জখম দেখতে পান। অজ্ঞাতনামা খুনি বা খুনিরা তার ছেলে আজাদ খানকে গত ২৪/১১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকার পর যে কোনো সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে বা অন্য কোনোভাবে হত্যা করে এবং হত্যা রহস্য গোপন করার উদ্দেশ্য তার ছেলের লাশ বর্ণিত স্থানে মাছের খামারে পানিতে মাটি চাপা দিয়ে ফেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ তার ছেলের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে।

বাদীনির দায়েরকৃত এরূপ এজাহারের ভিত্তিতে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানার মামলা নং-২৭ তারিখ- ২৮/১১/২০২৩ খ্রিঃ ধারা-৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান, বিপিএম এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব মোঃ সালাউদ্দিন মামলাটি তদন্ত করেন।

গ্রফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী ও ভিকটিম আজাদ ছোট বেলার বন্ধু। তারা ছোট থেকেই একই এলাকায় বসবাস করে আসছে। আসামী শ্রী জয় চন্দ্র রায় ও ভিকটিম আজাদ রাজমিস্ত্রির জোগালীর কাজ করতো। আসামী ও ভিকটিম ও তাদের অপর বন্ধু বাধন একসাথে গাঁজা সেবন করতো।

আসামীর অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকায় টাকা রোজগারের কোন উপায় না পেয়ে তার বন্ধু ভিকটিম আজাদকে আটক করে বা হত্যা করে তার পরিবারের নিকট থেকে মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৪/১১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রোজ শুক্রবার আসামী ভিকটিমকে নিয়ে মধুর টেক নামক এলাকায় গাজা সেবন করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। তখন আসামী একটি লাল চাদর গায়ে দিয়ে চাদরের ভিতরে একটি দা সাথে করে নিয়ে যায়। মধুর টেক মাছের খামারের গাছ তলায় বসে গাঁজা সেবনের জন্য গাঁজার স্টিক তৈরী করার সময় আসামী শ্রী জয় চন্দ্র রায় ভিকটিম আজাদের পিছন থেকে গলার ডান পাশে তার সাথে থাকা দা দিয়ে স্বজোরে একটি কোপ দেয়।

তখন ভিকটিম আজাদ মাটিতে লুটিয়ে পরে এবং আর্তনাদ করে বলতে থাকে “জয় এটা তুই কি করলি ? এটা কি করলি!”। আসামী জয় তখন তার হাতের দা ফেলে দিয়ে আজাদকে পাশের পুকুরের পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পরবর্তীতে আসামী জয় চন্দ্র রায় তার বন্ধু ভিকটিম আজাদকে পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে অপরপ্রান্তে থাকা ঝোপের নিচে মাটিচাপা দিয়ে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ও আসামীর চাদরটি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলেও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা’টি ঘটনাস্থলেই ফেলে আসে।

ঘটনাস্থল থেকে আসামী তার অপর বন্ধু বাধনের বাসায় এসে ভেজা কাপড় পরিবর্তন করে বাধনের গেঞ্জি ও লুঙ্গি পড়ে। বাধন কাপড় ভেজার কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামী জানায় যে, ভুতের ভয় পাওয়ায় সে গোসল করেছে। পরবর্তীতে রাত ০৯.৫২ ঘটিকার সময় আজাদের মোবাইল থেকে পর পর দুই বার ভিকটিমের মাকে ফোন দিয়ে তার ছেলের মুক্তিপণের জন্য ৬০ হাজার টাকা চায়। আজাদের মা বিষয়টি আমলে না নেওয়ায় সে ফোন কেটে দেয়।

পরদিন ভোরে আসামী শ্রী জয় চন্দ্র রায় পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা’টি নিয়ে এসে ২৫০/- টাকার বিনিময়ে ফেরিওয়ালার নিকট বিক্রি করে দেয়।

ভিকটিম আজাদের ব্যবহৃত মোবাইলের সিম ভেঙ্গে বাড়ির পাশে লাল মাঠ নামক স্থানে ফেলে দেয় এবং মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে আসামীর মায়ের রুমে রেখে দেয়।

এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান, বিপিএম বলেন এটি একটি হত্যা মামলা।

অত্র মামলার বাদীনির দায়েরকৃত এজাহারের ভিত্তিতে কালিয়াকৈর থানার মামলা ২৭ তারিখ-২৮/১১/২০২৩ খ্রিঃ ধারা-৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হলে আলোচ্য ঘটনার সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে পিবিআই গাজীপুর এর একটি ক্রাইম সিন টীম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে।

তদন্তকালে পিবিআই গাজীপুর মামলার ঘটনা সংক্রান্তে সকল তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অপরাধের কথা স্বীকার করে এবং অদ্য ২৯/১১/২০২৩ তারিখ আদালতে সোপর্দ করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে বাল্যবন্ধুকে হত্যার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার

Update Time : ০৭:৫৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

পিবিআই গাজীপুরের একটি টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি শ্রী জয় চন্দ্র রায় (১৯), পিতা- শ্রী কমল চন্দ্র রায়, সাং-নারায়নপুর দেবপাড়া, থানা- পার্বতীপুর,জেলা- দিনাজপুর বর্তমানে- সাং-কলাবাঁধা (মোঃ রাজিব মিয়ার বাড়ির ভাড়াটে), থানা- কালিয়াকৈর জেলাগাজীপুরকে পলাতক থাকা অবস্থায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার মৌচাক এলাকা থেকে ২৯/১১/২০২৩খ্রিঃ তারিখ রাত ০৫.২৫ মিনিটে গ্রেফতার করে।

নিহত আজাদ

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ মামলার বাদী মোসাঃ মাজেদা খাতুন (৩৮), স্বামী মোঃ শিবলু খান, সাং দেওজানা, থানা-ঘাটাইল, জেলাটাঙ্গাইল, এ/পি সাং কলাবাধা (ইউনুছ আলীর বাড়ীর ভাড়াটে), থানা- কালিয়াকৈর, জেলা- গাজীপুর এর ছেলে আজাদ খান (২০) তাদের সাথে বর্তমান ঠিকানায় থেকে রাজমিন্ত্রির যোগালীর কাজ করতো।

গত ২৪/১১/২০২৩ খ্রিঃ রাত অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকায় তার ছেলে বাসা হতে বের হয়। ঐ দিন রাতে আর বাসায় না ফিরলে তিনি তাঁর ছেলের মোবাইল নং ০১৯৯৩৩৪৯৫০৭-তে ফোন কল করলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে তাকে অশালীন ভাষায় গালি দিয়ে তার ছেলেকে পেতে হলে টাকা দিতে হবে এবং টাকা যোগাড় করে জানাতে বলে।

তিনি লোকজন নিয়ে তাঁর ছেলেকে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ২৭/১১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.০০ ঘটিকায় লোকমুখে সংবাদ পান যে, কলাবাঁধা সাকিনে জনৈক মধু, পিতা-মৃত আফসার এর মাছের খামারে একজন যুবক পুরুষ লোকের লাশ পানিতে ভাসছে। এ সংবাদ পেয়ে তিনি বর্ণিত স্থানে যান এবং পানির মধ্যে একটি পুরুষ লোকের পচন ধরা ফোলা লাশ দেখেন। পরে পুলিশ এসে লাশ পানি হতে উপরে উঠালে লাশের গায়ে থাকা শার্ট, প্যান্ট ও কোমরে থাকা দুটি চাবি দেখে উক্ত লাশটি তার ছেলের লাশ বলে শনাক্ত করেন। তার ছেলের গালের ডান পাশে ছিদ্র যুক্ত জখম ও বুকের ডান পাশে দুটি ছিদ্র যুক্ত রক্তাক্ত জখম দেখতে পান। অজ্ঞাতনামা খুনি বা খুনিরা তার ছেলে আজাদ খানকে গত ২৪/১১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকার পর যে কোনো সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে বা অন্য কোনোভাবে হত্যা করে এবং হত্যা রহস্য গোপন করার উদ্দেশ্য তার ছেলের লাশ বর্ণিত স্থানে মাছের খামারে পানিতে মাটি চাপা দিয়ে ফেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ তার ছেলের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে।

বাদীনির দায়েরকৃত এরূপ এজাহারের ভিত্তিতে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানার মামলা নং-২৭ তারিখ- ২৮/১১/২০২৩ খ্রিঃ ধারা-৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান, বিপিএম এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব মোঃ সালাউদ্দিন মামলাটি তদন্ত করেন।

গ্রফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী ও ভিকটিম আজাদ ছোট বেলার বন্ধু। তারা ছোট থেকেই একই এলাকায় বসবাস করে আসছে। আসামী শ্রী জয় চন্দ্র রায় ও ভিকটিম আজাদ রাজমিস্ত্রির জোগালীর কাজ করতো। আসামী ও ভিকটিম ও তাদের অপর বন্ধু বাধন একসাথে গাঁজা সেবন করতো।

আসামীর অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকায় টাকা রোজগারের কোন উপায় না পেয়ে তার বন্ধু ভিকটিম আজাদকে আটক করে বা হত্যা করে তার পরিবারের নিকট থেকে মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৪/১১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রোজ শুক্রবার আসামী ভিকটিমকে নিয়ে মধুর টেক নামক এলাকায় গাজা সেবন করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। তখন আসামী একটি লাল চাদর গায়ে দিয়ে চাদরের ভিতরে একটি দা সাথে করে নিয়ে যায়। মধুর টেক মাছের খামারের গাছ তলায় বসে গাঁজা সেবনের জন্য গাঁজার স্টিক তৈরী করার সময় আসামী শ্রী জয় চন্দ্র রায় ভিকটিম আজাদের পিছন থেকে গলার ডান পাশে তার সাথে থাকা দা দিয়ে স্বজোরে একটি কোপ দেয়।

তখন ভিকটিম আজাদ মাটিতে লুটিয়ে পরে এবং আর্তনাদ করে বলতে থাকে “জয় এটা তুই কি করলি ? এটা কি করলি!”। আসামী জয় তখন তার হাতের দা ফেলে দিয়ে আজাদকে পাশের পুকুরের পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পরবর্তীতে আসামী জয় চন্দ্র রায় তার বন্ধু ভিকটিম আজাদকে পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে অপরপ্রান্তে থাকা ঝোপের নিচে মাটিচাপা দিয়ে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ও আসামীর চাদরটি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলেও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা’টি ঘটনাস্থলেই ফেলে আসে।

ঘটনাস্থল থেকে আসামী তার অপর বন্ধু বাধনের বাসায় এসে ভেজা কাপড় পরিবর্তন করে বাধনের গেঞ্জি ও লুঙ্গি পড়ে। বাধন কাপড় ভেজার কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামী জানায় যে, ভুতের ভয় পাওয়ায় সে গোসল করেছে। পরবর্তীতে রাত ০৯.৫২ ঘটিকার সময় আজাদের মোবাইল থেকে পর পর দুই বার ভিকটিমের মাকে ফোন দিয়ে তার ছেলের মুক্তিপণের জন্য ৬০ হাজার টাকা চায়। আজাদের মা বিষয়টি আমলে না নেওয়ায় সে ফোন কেটে দেয়।

পরদিন ভোরে আসামী শ্রী জয় চন্দ্র রায় পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা’টি নিয়ে এসে ২৫০/- টাকার বিনিময়ে ফেরিওয়ালার নিকট বিক্রি করে দেয়।

ভিকটিম আজাদের ব্যবহৃত মোবাইলের সিম ভেঙ্গে বাড়ির পাশে লাল মাঠ নামক স্থানে ফেলে দেয় এবং মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে আসামীর মায়ের রুমে রেখে দেয়।

এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান, বিপিএম বলেন এটি একটি হত্যা মামলা।

অত্র মামলার বাদীনির দায়েরকৃত এজাহারের ভিত্তিতে কালিয়াকৈর থানার মামলা ২৭ তারিখ-২৮/১১/২০২৩ খ্রিঃ ধারা-৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হলে আলোচ্য ঘটনার সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে পিবিআই গাজীপুর এর একটি ক্রাইম সিন টীম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে।

তদন্তকালে পিবিআই গাজীপুর মামলার ঘটনা সংক্রান্তে সকল তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অপরাধের কথা স্বীকার করে এবং অদ্য ২৯/১১/২০২৩ তারিখ আদালতে সোপর্দ করা হয়।