ঢাকা ০৬:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার” টাঙ্গাইলে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধের মৃত্যু আখেরী মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে জাকের পার্টির বিশ্ব ইসলামি মহা সম্মেলন ও মহা পবিত্র ফাতেহা শরীফের সমাপ্তি টঙ্গীতে পরিবহনে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৮ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবঃ প্রধান বিচারপতি  শত কোটি টাকা আত্মসাৎ: দেশত্যাগের সময় বিমানবন্দরে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক লালপুরে আ,লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ইবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আনসার কর্তৃক শিক্ষক হেনস্তার অভিযোগ

মির্জাগঞ্জে বেদখলের কবলে আশ্রয়ণ, আতঙ্কে বরাদ্দপ্রাপ্তরা

রফিকুল ইসলাম জোমাদ্দার,মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৬:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৯০ Time View

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর বেদখলের অভিযোগ উঠেছে। এতে আতঙ্কে রয়েছে বরাদ্দপ্রাপ্ত পরিবারের সদস্যরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন ও মির্জাগঞ্জ উপজেলাকে গৃহ ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেন। এসময় ৪র্থ পর্যায়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ৩ জন উপকারভোগীকে দলিলসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। এর আগে উপজেলায় আশ্রয়ন-২ প্রকল্প থেকে ১ম পর্যায়ে ৪৭ টি, ২য় পর্যায়ে ২২৫টি এবং ৩য় পর্যায়ে ৯৮ টি ঘরের মালিকানা উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়। এসব ঘরের মধ্যে উপজেলার ঝাটিবুনিয়া আবাসনে ৬৫ টি ঘর রয়েছে। তার ভিতর থেকে ইতোমধ্যে ৮/১০ টি ঘর দখলকারীরা বেদখল করে নিয়েছে বলে জানান উপকারভোগীরা। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দখলের ঘটনা। দখল আতঙ্কে ঘর তালাবদ্ধ করে কোথাও কাজে বা বেড়াতে যেতে পারছে না উপকারভোগীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই আবাসন এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেক ঘরে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। বিশুদ্ধ খাবার পানিরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ৬৫ টি পরিবারের জন্য ৮ টি টিউবওয়েল আছে, তার ভিতরে ৬ টি টিউবওয়েল থেকে পানি ওঠে না। এসমস্ত কারণে এবং সেখানে আয়-রোজগারের কোনো বন্দোবস্ত না করতে পারায় কিছু উপকারভোগী ঘরে শুধু তাদের মালামাল রেখে গেছে, তারা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেননি। মাঝেমধ্যে এসে শুধু ঘর দেখে চলে যায়। আবার অনেক উপকারভোগী ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর তালাবদ্ধ করে রেখে গেছে। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের কোনো খোঁজখবর নাই। সেই সুযোগে দখলকারীরা ঘরের তালা ভেঙে দখল করে নিচ্ছে। প্রশাসনের নজরে দিয়েও এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে জানান ভুক্তভোগী উপকারভোগী পরিবারের সদস্যরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক উপকারভোগী বলেন, আমাদের থাকার মতো কোনো ঘরদুয়ার ছিলো না। মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বসবাসের জন্য জমিসহ ঘর উপহার দিছে। আমাদের নামে ঘরের দলিল-পর্চা। সেই ঘর অন্য মানুষ এসে দখল করছে এবং দখলের চেষ্টা চালায়। এজন্য আমরা খুব ভয়ে ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। ঘর খালী রেখে কোথাও কাজকর্মের জন্য যেতে পারছি না। অনেক ঘরই মানুষে বেদখল করে নিয়েছে এবং প্রায় প্রতিদিনই মানুষ আসে ঘর দখল করতে। আমরা বাঁধা দিলে আমাদের বিভিন্ন গালিগালাজ করে এবং মারধরের হুমকি দেয়। এব্যাপারে আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ ব্যাপারে কয়েকজন দখলকারীর সাথে কথা বললে তারা জানান, আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাদেরকে ঘরে উঠতে বলেছে। তাই তারা পরিবার নিয়ে ঘরে উঠেছে।

ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এটিএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার কাছে অনেকে এসে বলে তাদের থাকার মতো কোনো ঘরদুয়ার নাই। তাই আমি তাদেরকে বলেছি ওখানে যদি কোনো খালি ঘর পান তাহলে গিয়ে থাকেন। আমি কাউকে তালা ভেঙে ঘরে উঠতে বলিনি।

এবিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. সাইয়েমা হাসান বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। লিখত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ঘর তালাবদ্ধ করে রাখা যাবে না। ঘর বন্দোবস্ত গ্রহণকারীকে আবশ্যিকভাবে ঘরে বসবাস করতে হবে। নয়তো তার বন্দোবস্ত বাতিল করে নতুন উপকারভোগী নির্বাচন করে তাকে দেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

মির্জাগঞ্জে বেদখলের কবলে আশ্রয়ণ, আতঙ্কে বরাদ্দপ্রাপ্তরা

Update Time : ০৬:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর বেদখলের অভিযোগ উঠেছে। এতে আতঙ্কে রয়েছে বরাদ্দপ্রাপ্ত পরিবারের সদস্যরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন ও মির্জাগঞ্জ উপজেলাকে গৃহ ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেন। এসময় ৪র্থ পর্যায়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ৩ জন উপকারভোগীকে দলিলসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। এর আগে উপজেলায় আশ্রয়ন-২ প্রকল্প থেকে ১ম পর্যায়ে ৪৭ টি, ২য় পর্যায়ে ২২৫টি এবং ৩য় পর্যায়ে ৯৮ টি ঘরের মালিকানা উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়। এসব ঘরের মধ্যে উপজেলার ঝাটিবুনিয়া আবাসনে ৬৫ টি ঘর রয়েছে। তার ভিতর থেকে ইতোমধ্যে ৮/১০ টি ঘর দখলকারীরা বেদখল করে নিয়েছে বলে জানান উপকারভোগীরা। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দখলের ঘটনা। দখল আতঙ্কে ঘর তালাবদ্ধ করে কোথাও কাজে বা বেড়াতে যেতে পারছে না উপকারভোগীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই আবাসন এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেক ঘরে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। বিশুদ্ধ খাবার পানিরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ৬৫ টি পরিবারের জন্য ৮ টি টিউবওয়েল আছে, তার ভিতরে ৬ টি টিউবওয়েল থেকে পানি ওঠে না। এসমস্ত কারণে এবং সেখানে আয়-রোজগারের কোনো বন্দোবস্ত না করতে পারায় কিছু উপকারভোগী ঘরে শুধু তাদের মালামাল রেখে গেছে, তারা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেননি। মাঝেমধ্যে এসে শুধু ঘর দেখে চলে যায়। আবার অনেক উপকারভোগী ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর তালাবদ্ধ করে রেখে গেছে। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের কোনো খোঁজখবর নাই। সেই সুযোগে দখলকারীরা ঘরের তালা ভেঙে দখল করে নিচ্ছে। প্রশাসনের নজরে দিয়েও এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে জানান ভুক্তভোগী উপকারভোগী পরিবারের সদস্যরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক উপকারভোগী বলেন, আমাদের থাকার মতো কোনো ঘরদুয়ার ছিলো না। মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বসবাসের জন্য জমিসহ ঘর উপহার দিছে। আমাদের নামে ঘরের দলিল-পর্চা। সেই ঘর অন্য মানুষ এসে দখল করছে এবং দখলের চেষ্টা চালায়। এজন্য আমরা খুব ভয়ে ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। ঘর খালী রেখে কোথাও কাজকর্মের জন্য যেতে পারছি না। অনেক ঘরই মানুষে বেদখল করে নিয়েছে এবং প্রায় প্রতিদিনই মানুষ আসে ঘর দখল করতে। আমরা বাঁধা দিলে আমাদের বিভিন্ন গালিগালাজ করে এবং মারধরের হুমকি দেয়। এব্যাপারে আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ ব্যাপারে কয়েকজন দখলকারীর সাথে কথা বললে তারা জানান, আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাদেরকে ঘরে উঠতে বলেছে। তাই তারা পরিবার নিয়ে ঘরে উঠেছে।

ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এটিএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার কাছে অনেকে এসে বলে তাদের থাকার মতো কোনো ঘরদুয়ার নাই। তাই আমি তাদেরকে বলেছি ওখানে যদি কোনো খালি ঘর পান তাহলে গিয়ে থাকেন। আমি কাউকে তালা ভেঙে ঘরে উঠতে বলিনি।

এবিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. সাইয়েমা হাসান বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। লিখত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ঘর তালাবদ্ধ করে রাখা যাবে না। ঘর বন্দোবস্ত গ্রহণকারীকে আবশ্যিকভাবে ঘরে বসবাস করতে হবে। নয়তো তার বন্দোবস্ত বাতিল করে নতুন উপকারভোগী নির্বাচন করে তাকে দেওয়া হবে।