ঢাকা ১১:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার” টাঙ্গাইলে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধের মৃত্যু আখেরী মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে জাকের পার্টির বিশ্ব ইসলামি মহা সম্মেলন ও মহা পবিত্র ফাতেহা শরীফের সমাপ্তি টঙ্গীতে পরিবহনে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৮ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবঃ প্রধান বিচারপতি  শত কোটি টাকা আত্মসাৎ: দেশত্যাগের সময় বিমানবন্দরে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক লালপুরে আ,লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ইবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আনসার কর্তৃক শিক্ষক হেনস্তার অভিযোগ

বিএনপি মানুষের জাত না: প্রধানমন্ত্রী

কামরুল হাসান টিটু,রংপুর
  • Update Time : ০৬:৩৪:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অগাস্ট ২০২৩
  • / ১৫৭ Time View

বিএনপি কত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এরা মানুষের জাত না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকলে লুট করে তারা। না থাকলেও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা শুধু জ্বালাও-পোড়াও আর ধ্বংসই করতে পারে। খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক জিয়া লুটপাট করতে জানে। তারা ধ্বংস করে আর আমরা সৃষ্টি করি।

বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন।

বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাস্তায় চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এরা কি মানুষের জাত? এরা মানুষের জাত নয়। ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করেছে। আর ক্ষমতার বাইরে থেকে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। রাস্তাঘাট ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ হত্যা করেছে। নতুন রেল কিনেছি পুড়িয়ে দিয়েছে। বাস কিনেছি পুড়িয়ে দিয়েছে। ওই খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংস করতে পারে। এরা মানুষের কল্যাণ করতে জানে না। দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে নিয়ে এখন সেই টাকা ব্যবহার করে যাচ্ছে। কোত্থেকে আসে এত বিলাসিতা! সেটাই আমার প্রশ্ন। দেশের মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছে।

তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের মামলায় শাস্তির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের দুর্নীতির মামলা। এই মামলা তো আমরা করিনি। তাদের প্রিয় ইয়েস উদ্দিন-ফখরুদ্দিন করেছে। সেই মামলায় তারা শাস্তি পেয়েছে। তারা দেশ ধ্বংস করে। আমরা সৃষ্টি করি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নিজে ফেল করা বলে ভাবে কেউ পাস করবে না। এ জন্য শিক্ষার হার তারা কমিয়ে ফেলেছে। আমরা আবার উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার হার বাড়িয়েছি। আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে দিচ্ছি।

অনেকেই ক্ষমতায় ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি কেউ এই রংপুরের উন্নয়নে কাজ করেনি। এই নৌকা মার্কা ক্ষমতায় আসলে কাজ হয়। নৌকা মার্কা ছাড়া হয় না। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজ দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। হতদরিদ্র মাত্র ৫ শতাংশ। এটাও থাকবে না। যারা এক বেলা খাবার পেতো না, এখন দুই-তিন বেলা খাবার সুযোগ হয়েছে। দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ প্রত্যেকের ভাগ্য পরিবর্তনে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। যার সুফল আপনারা পাচ্ছেন। দেশের মানুষ পাচ্ছে।

এত বছর পর রংপুরে খালি হাতে আসেননি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। আপনারা দেখেছেন কিছুক্ষণ আগে কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের যেন উন্নয়ন হয় সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে অনেক আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছি। মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিতে পারে। ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার তালিকাও করেছি। আমারা প্রত্যেক এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। নারীদের জন্য কাজের সুবিধা করে দিয়েছি। আমাদের কাজের লক্ষ্য দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নতি করা। এ অঞ্চলে জীবনেও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে না, মঙ্গা দেখা দেবে না। বাংলাদেশে কোনো ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করবো।

সমাবেশে আসা মানুষকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এই মাঠ ছোট বলে অনেকে দূরে বসে আমার কথা শুনছেন। আপনাদের চোখের দেখায় দেখতে পাচ্ছি না। তবে আপনারা আছেন আমার হৃদয়ে। হৃদয় দিয়ে আপনাদের ভালোবাসা উপলব্ধি করি।

সরকার প্রধান বলেন, সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কয়লার দাম ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েকদিন কষ্ট হয়েছে। এরপর এখন ঠিক হয়ে গেছে। বিদ্যুতের আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আমি খালি হাতে আসিনি। আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। যাতে প্রত্যেকটা উন্নয়ন তরান্বিত হয় তার ব্যবস্থা করেছি।

জাতির পিতাকে অবৈধভাবে হত্যার পর মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছিল। সে সময় বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরেছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেখিছে মানুষের হাহাকার। আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল যখন সরকার গঠন করতে পারবো তখন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবো। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব স্বপ্ন দেখে গেছেন তা পূরণ করছি। দেশের দারিদ্র্যের হার কামাতে পেরেছি। খুদামুক্ত দেশ করতে পেরেছি।

আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় রংপুর কোনোদিন মঙ্গা হয় নাই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলে, এ দল সরকারে এলে এবং নৌকায় ভোট দিলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় আমরা তা প্রমাণ করেছি। খালেদা জিয়া মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এসবের পরিবর্তন হয়েছে। সাড়ে ১৪ বছর যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান আমরা করতে পেরেছি। ট্রেনিং দিয়েছি, কাজের ব্যবস্থা করেছি।

তিনি বলেন, রংপুরকে বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ কৃষকের বন্ধু। কুষকদের জন্য কুড়িগ্রামে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম কমিয়ে দিয়েছি। অথচ খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে কৃষক সার চাইলে গুলি করে হত্যা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর আগে দুপুর ২টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর সেনানিবাস হেলিপ্যাডে পৌঁছায়। এরপর সড়কপথে সার্কিট হাউজে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে জনসভার কার্যক্রম। রংপুরের ঐতিহাসিক জিলা স্কুল মাঠ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায়। মাঠ ছাড়িয়ে প্রধান সড়কের দুদিকে অবস্থান নেন বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। নানা রঙের পোশাক আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে গান গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছি‌লেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এছাড়া সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, নৌ পরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দীসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

বিএনপি মানুষের জাত না: প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০৬:৩৪:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অগাস্ট ২০২৩

বিএনপি কত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এরা মানুষের জাত না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকলে লুট করে তারা। না থাকলেও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা শুধু জ্বালাও-পোড়াও আর ধ্বংসই করতে পারে। খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক জিয়া লুটপাট করতে জানে। তারা ধ্বংস করে আর আমরা সৃষ্টি করি।

বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন।

বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাস্তায় চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এরা কি মানুষের জাত? এরা মানুষের জাত নয়। ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করেছে। আর ক্ষমতার বাইরে থেকে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। রাস্তাঘাট ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ হত্যা করেছে। নতুন রেল কিনেছি পুড়িয়ে দিয়েছে। বাস কিনেছি পুড়িয়ে দিয়েছে। ওই খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংস করতে পারে। এরা মানুষের কল্যাণ করতে জানে না। দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে নিয়ে এখন সেই টাকা ব্যবহার করে যাচ্ছে। কোত্থেকে আসে এত বিলাসিতা! সেটাই আমার প্রশ্ন। দেশের মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছে।

তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের মামলায় শাস্তির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের দুর্নীতির মামলা। এই মামলা তো আমরা করিনি। তাদের প্রিয় ইয়েস উদ্দিন-ফখরুদ্দিন করেছে। সেই মামলায় তারা শাস্তি পেয়েছে। তারা দেশ ধ্বংস করে। আমরা সৃষ্টি করি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নিজে ফেল করা বলে ভাবে কেউ পাস করবে না। এ জন্য শিক্ষার হার তারা কমিয়ে ফেলেছে। আমরা আবার উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার হার বাড়িয়েছি। আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে দিচ্ছি।

অনেকেই ক্ষমতায় ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি কেউ এই রংপুরের উন্নয়নে কাজ করেনি। এই নৌকা মার্কা ক্ষমতায় আসলে কাজ হয়। নৌকা মার্কা ছাড়া হয় না। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজ দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। হতদরিদ্র মাত্র ৫ শতাংশ। এটাও থাকবে না। যারা এক বেলা খাবার পেতো না, এখন দুই-তিন বেলা খাবার সুযোগ হয়েছে। দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ প্রত্যেকের ভাগ্য পরিবর্তনে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। যার সুফল আপনারা পাচ্ছেন। দেশের মানুষ পাচ্ছে।

এত বছর পর রংপুরে খালি হাতে আসেননি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। আপনারা দেখেছেন কিছুক্ষণ আগে কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের যেন উন্নয়ন হয় সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে অনেক আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছি। মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিতে পারে। ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার তালিকাও করেছি। আমারা প্রত্যেক এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। নারীদের জন্য কাজের সুবিধা করে দিয়েছি। আমাদের কাজের লক্ষ্য দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নতি করা। এ অঞ্চলে জীবনেও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে না, মঙ্গা দেখা দেবে না। বাংলাদেশে কোনো ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করবো।

সমাবেশে আসা মানুষকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এই মাঠ ছোট বলে অনেকে দূরে বসে আমার কথা শুনছেন। আপনাদের চোখের দেখায় দেখতে পাচ্ছি না। তবে আপনারা আছেন আমার হৃদয়ে। হৃদয় দিয়ে আপনাদের ভালোবাসা উপলব্ধি করি।

সরকার প্রধান বলেন, সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কয়লার দাম ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েকদিন কষ্ট হয়েছে। এরপর এখন ঠিক হয়ে গেছে। বিদ্যুতের আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আমি খালি হাতে আসিনি। আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। যাতে প্রত্যেকটা উন্নয়ন তরান্বিত হয় তার ব্যবস্থা করেছি।

জাতির পিতাকে অবৈধভাবে হত্যার পর মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছিল। সে সময় বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরেছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেখিছে মানুষের হাহাকার। আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল যখন সরকার গঠন করতে পারবো তখন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবো। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব স্বপ্ন দেখে গেছেন তা পূরণ করছি। দেশের দারিদ্র্যের হার কামাতে পেরেছি। খুদামুক্ত দেশ করতে পেরেছি।

আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় রংপুর কোনোদিন মঙ্গা হয় নাই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলে, এ দল সরকারে এলে এবং নৌকায় ভোট দিলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় আমরা তা প্রমাণ করেছি। খালেদা জিয়া মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এসবের পরিবর্তন হয়েছে। সাড়ে ১৪ বছর যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান আমরা করতে পেরেছি। ট্রেনিং দিয়েছি, কাজের ব্যবস্থা করেছি।

তিনি বলেন, রংপুরকে বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ কৃষকের বন্ধু। কুষকদের জন্য কুড়িগ্রামে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম কমিয়ে দিয়েছি। অথচ খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে কৃষক সার চাইলে গুলি করে হত্যা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর আগে দুপুর ২টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর সেনানিবাস হেলিপ্যাডে পৌঁছায়। এরপর সড়কপথে সার্কিট হাউজে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে জনসভার কার্যক্রম। রংপুরের ঐতিহাসিক জিলা স্কুল মাঠ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায়। মাঠ ছাড়িয়ে প্রধান সড়কের দুদিকে অবস্থান নেন বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। নানা রঙের পোশাক আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে গান গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছি‌লেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এছাড়া সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, নৌ পরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দীসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।