ঢাকা ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
আজ সেই ভয়াল ৩ মে! প্রবাসীদের সেবার মান বাড়াতে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হবে – ড. মোমেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের উপস্থিতি হার ৯০ শতাংশ ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করুন: বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ অজ্ঞান করে স্বর্ণ ও টাকা চুরির রহস্য উদঘাটন ও চোরাই মালামালসহ গ্রেফতার ১ কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার”

পাওনা টাকা না দেয়ায় ইজিবাইক চালককে হত্যা, গ্রেফতার ৩

শরিফুল হক পাভেল
  • Update Time : ০৯:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৮ Time View

রাজধানী ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানা এলাকায় ইজিবাইক চালককে নির্মমভাবে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রধান আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারী ১। আরিফ (২২), ২। পারভেজ বেপারী (২৬), ৩। সজিব বেপারী (২২) কে বৃহস্পতিবার ১৮ জানুয়ারি গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, অটোরিকশা চালক হাবিবুর রহমান ওরফে হাবু মাদবর এর সাথে আসামি আরিফ এর টাকা পয়সার লেনদেন ছিল । তাদের মধ্যে দেনা পাওনা নিয়ে তর্ক বিতর্ক এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরিফ হাবিবের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। গ্রেফতারকৃত আরিফ তার বন্ধু নাহিদ সরদার, পারভেজ বেপারী, সজিব বেপারী সহ তার আরও বেশ কয়েকজন সহযোগীর সাথে এ ব্যাপারে গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে মূল পরিকল্পনাকারী আরিফ এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা একত্রিত হয়ে সুইচ গিয়ার, চাকু, চাপাতি সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সখিপুর থানাধীন কাচিকাটা ইউনিয়নের ৮৯ নং হাজিয়াবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অপেক্ষা করে। ভিকটিম হাবিব অটোরিক্সায় যাত্রী নিয়ে নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার বাজার থেকে সখিপুর থানার চর দুলার চর এলাকায় যাওয়ার পথে অটোরিকশা থামিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি শুরু করে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভিকটিমের উপর তারা হামলা চালায়। হামলার মধ্যে নাহিদ সরদার তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে ভিকটিম হাবিবুর রহমানের মাথায় সজোরে কোপ দেয়। হাবিবুর রহমান মাথা সরিয়ে নিলে তার কাধেঁ চাপাতির কোপ লাগে। পরবর্তীতে ধৃত পারভেজ ও সজিব সহ অন্যান্য সহযোগীরা ভিকটিমকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে এবং আরিফ হাবুর পেটের মধ্যে সুইচ গিয়ার দিয়ে ছুরিকাঘাত করতে থাকে।

আঘাতের ফলে ভিকটিম হাবু গুরুতর জখম প্রাপ্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। তারপর আসামিসহ তাদের অন্যান্য সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন নাহিদ সরদার কে আটক করে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। বিজ্ঞ আদালতের নিকট ধৃত নাহিদ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে উক্ত ঘটনার নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে এবং এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আরিফ ও অন্যান্য আসামিদের ভূমিকাসহ তাদের নাম উল্লেখ করে।

স্থানীয় লোকজন ভিকটিম হাবুকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তৎক্ষনাৎ স্থানীয় একটি সরকারী হাসাপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই জসিম মাদবর বাদী হয়ে ০৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

মামলার অন্য তিন জন এজাহারনামীয় আসামি আশরাফুল দেওয়ান, মাহাবুব বেপারী ও ইউসুফ সহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযান অব্যহত রয়েছে।

গ্রেফতার আরিফ সখিপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের একজন সক্রিয় সদস্য এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। সে মাঝে মাঝে অটোরিকশা চালাতো, কখনো কখনো ট্রাকের হেলপারী করতো কিন্তু তার মূল কাজ ছিল কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করা।

গ্রেফতার পারভেজ এবং সজিব বেপারী আপন দুই ভাই। পারভেজ ৮ম শ্রেণী এবং সজিব ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। তাদের মা একজন জর্ডান প্রবাসী এবং বাবার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। অল্প বয়সে বাবা-মা কে কাছে না পেয়ে পড়াশোনা না করে তারা এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তারা আরিফের নেতৃত্বে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলো।

ধৃত আরিফ এর পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত পারভেজ সকলকে ফোন করে একত্রিত করে এবং নিজে এই নির্মম হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করে।

Please Share This Post in Your Social Media

পাওনা টাকা না দেয়ায় ইজিবাইক চালককে হত্যা, গ্রেফতার ৩

Update Time : ০৯:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৪

রাজধানী ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানা এলাকায় ইজিবাইক চালককে নির্মমভাবে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রধান আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারী ১। আরিফ (২২), ২। পারভেজ বেপারী (২৬), ৩। সজিব বেপারী (২২) কে বৃহস্পতিবার ১৮ জানুয়ারি গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, অটোরিকশা চালক হাবিবুর রহমান ওরফে হাবু মাদবর এর সাথে আসামি আরিফ এর টাকা পয়সার লেনদেন ছিল । তাদের মধ্যে দেনা পাওনা নিয়ে তর্ক বিতর্ক এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরিফ হাবিবের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। গ্রেফতারকৃত আরিফ তার বন্ধু নাহিদ সরদার, পারভেজ বেপারী, সজিব বেপারী সহ তার আরও বেশ কয়েকজন সহযোগীর সাথে এ ব্যাপারে গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে মূল পরিকল্পনাকারী আরিফ এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা একত্রিত হয়ে সুইচ গিয়ার, চাকু, চাপাতি সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সখিপুর থানাধীন কাচিকাটা ইউনিয়নের ৮৯ নং হাজিয়াবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অপেক্ষা করে। ভিকটিম হাবিব অটোরিক্সায় যাত্রী নিয়ে নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার বাজার থেকে সখিপুর থানার চর দুলার চর এলাকায় যাওয়ার পথে অটোরিকশা থামিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি শুরু করে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভিকটিমের উপর তারা হামলা চালায়। হামলার মধ্যে নাহিদ সরদার তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে ভিকটিম হাবিবুর রহমানের মাথায় সজোরে কোপ দেয়। হাবিবুর রহমান মাথা সরিয়ে নিলে তার কাধেঁ চাপাতির কোপ লাগে। পরবর্তীতে ধৃত পারভেজ ও সজিব সহ অন্যান্য সহযোগীরা ভিকটিমকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে এবং আরিফ হাবুর পেটের মধ্যে সুইচ গিয়ার দিয়ে ছুরিকাঘাত করতে থাকে।

আঘাতের ফলে ভিকটিম হাবু গুরুতর জখম প্রাপ্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। তারপর আসামিসহ তাদের অন্যান্য সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন নাহিদ সরদার কে আটক করে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। বিজ্ঞ আদালতের নিকট ধৃত নাহিদ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে উক্ত ঘটনার নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে এবং এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আরিফ ও অন্যান্য আসামিদের ভূমিকাসহ তাদের নাম উল্লেখ করে।

স্থানীয় লোকজন ভিকটিম হাবুকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তৎক্ষনাৎ স্থানীয় একটি সরকারী হাসাপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই জসিম মাদবর বাদী হয়ে ০৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

মামলার অন্য তিন জন এজাহারনামীয় আসামি আশরাফুল দেওয়ান, মাহাবুব বেপারী ও ইউসুফ সহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযান অব্যহত রয়েছে।

গ্রেফতার আরিফ সখিপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের একজন সক্রিয় সদস্য এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। সে মাঝে মাঝে অটোরিকশা চালাতো, কখনো কখনো ট্রাকের হেলপারী করতো কিন্তু তার মূল কাজ ছিল কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করা।

গ্রেফতার পারভেজ এবং সজিব বেপারী আপন দুই ভাই। পারভেজ ৮ম শ্রেণী এবং সজিব ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। তাদের মা একজন জর্ডান প্রবাসী এবং বাবার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। অল্প বয়সে বাবা-মা কে কাছে না পেয়ে পড়াশোনা না করে তারা এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তারা আরিফের নেতৃত্বে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলো।

ধৃত আরিফ এর পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত পারভেজ সকলকে ফোন করে একত্রিত করে এবং নিজে এই নির্মম হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করে।