ঢাকা ০৩:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঢাবির 'টিচিং ইভ্যালুয়েশন' সিস্টেম

নিজস্ব প্রোফাইল থেকে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ করবেন শিক্ষার্থীরা, হতে হবে কলেজিয়েট

মুহাম্মদ ইমাম-উল-জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:১৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৮৫ Time View

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওয়েবসাইট থেকে ব্যাক্তিগত প্রোফাইলে লগ ইন করে টিচিং ইভ্যালুয়েশন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। ২২ টি প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের মূল্যায়নের এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।

জানা গেছে, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই হবে কনফিডেন্সিয়াল। অর্থাৎ কে, কাকে, কীভাবে মূল্যায়ন করছে এটি জানা যাবে না। এ কাজের জন্য প্রতিটি বিভাগে ২ জন করে এডমিন থাকবেন। আর পুরো বিষয়টিই থাকবে প্রো-ভিসি (শিক্ষা) -এর নিয়ন্ত্রণে।

তবে শুধু কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরাই ‘টিভিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমে যুক্ত হবেন। অর্থাৎ একটি কোর্সে কমপক্ষে ৭৫% উপস্থিতি না থাকলে একজন শিক্ষার্থী ঐ কোর্স টিচারকে মূল্যায়ন করতে পারবেন না।

১. ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর প্রস্তুতি সম্পন্ন, অপেক্ষা শুধু প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ।
২. ঢাবির ওয়েবসাইটে ব্যাক্তিগত প্রোফাইলে লগ ইন করে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ করবেন শিক্ষার্থীরা।
৩. শিক্ষকরা নিজেদের প্রোফাইলে শিক্ষার্থীদের করা মূল্যায়ন দেখতে পারবেন।
৪. নন-কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরা এ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না।
৫. সম্পূর্ণ মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি হবে কনফিডেন্সিয়াল এবং শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানার কোনো সুযোগ থাকবে না।
৬. সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি থাকবে প্রো-ভিসি(শিক্ষা) এর অধীনে।

সম্প্রতি, গত ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর উদ্যোগে ঢাবির অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন-প্রস্তুতি’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উক্ত অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আইকিউএসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ
শাহরিয়ার রহমান, অধ্যাপক ড. এ টি এম সামছুজ্জোহাসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. এ টি এম সামছুজ্জোহা দৈনিক নওরোজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজেদের প্রোফাইলের ড্যাশ বোর্ড থেকে ২২ টি প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পারবেন। আমরা ইতোমধ্যে আইসিটি সেলের সহায়তায় ৩ মিনিটের একটি টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরি করেছি যা দেখে শিক্ষার্থীরা সহজেই টিভিং ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন করতে পারবে।

ড. এ টি এম সামছুজ্জোহা আরও বলেন, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) -এর অধীনে এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হবে এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই হবে কনফিডেন্সিয়াল। অর্থাৎ কে কাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছে এটি জানা যাবে না। সুষ্ঠুভাবে কাজটি সম্পাদনের জন্য প্রতিটি বিভাগে ২ জন করে এডমিন থাকবেন।

শিক্ষার্থীদের কর্তৃক গৃহীত এ মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে অবহিতকরণ প্রসঙ্গে অধ্যাপক সামছুজ্জোহা বলেন, যদি কোনো শিক্ষকের মূল্যায়ন নিন্মমানের হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন কিংবা বিভাগের চেয়ারম্যান ঐ শিক্ষককে ডেকে কোন জায়গায় তার উন্নতি করতে হবে তা বলবেন।

জানতে চাইলে ঢাবি আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান দৈনিক নওরোজকে বলেন, ঢাবি আইসিটি সেল ইতোমধ্যেই ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম বাস্তবায়নের জন্য সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে৷ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে স্ব স্ব প্রোফাইলে লগ ইন করে ড্যাশ বোর্ড থেকে তাদের বিভাগের শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত পেলেই এটি ওপেন করা হবে।

তবে শুধু কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরাই ‘টিভিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমে যুক্ত হবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই কলেজিয়েট হতে হবে। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কোর্স টিচারের কোর্সে ৭৫% উপস্থিতি থাকতে হবে নতুবা, ঐ শিক্ষার্থী মূল্যায়ন করতে পারবে না৷

টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেমের গোপনীয়তা সম্পর্কে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান বলেন, এই প্রক্রিয়ায় কোন শিক্ষার্থী কাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন তা অন্য কেউ জানার সুযোগ নেই। এমনকি একবার ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন করলে সেটা নির্দিষ্ট সময় পর তার প্রোফাইল থেকেও মুছে যাবে।

শিক্ষকরা কীভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে অবহিত হবেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই সিস্টেমটির মূল দায়িত্ব থাকবে প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) এর উপর। তিনি সকল শিক্ষকের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন। একটি অনুষদের ডিন তার অনুষদের সকল শিক্ষকের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন। চেয়ারম্যান তার বিভাগের সকল শিক্ষকের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন। আবার শিক্ষকরা তাদের নিজ নিজ প্রোফাইলে তাদের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন।

তবে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর সম্ভাব্য তারিখ ও অন্যান্য বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেন নি তিনি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১ নভেম্বর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় এই টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে ২০২৩ এর জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালু করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

এদিকে শিক্ষার সামগ্রিক গুণগতমান উন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের অভিমত, ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন বাড়বে এবং শিক্ষকদের রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি বাড়বে।
পাশাপাশি এ ব্যবস্থা চালু হলে কোন শিক্ষক কেমন পড়ান, তাঁর কোর্সের বিষয়বস্তু কেমন, তিনি সময়মতো ক্লাসে যাচ্ছেন কি-না, কোর্স ম্যাটারিয়ালস সরবরাহ করছে কিনা, মিডটার্ম, এসাইনমেন্ট ঠিকমতো নিচ্ছেন কিনা এবং সেগুলো ঠিকমতো মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা- এ সকল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সামগ্রিক গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেম কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাবির 'টিচিং ইভ্যালুয়েশন' সিস্টেম

নিজস্ব প্রোফাইল থেকে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ করবেন শিক্ষার্থীরা, হতে হবে কলেজিয়েট

Update Time : ০৫:১৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওয়েবসাইট থেকে ব্যাক্তিগত প্রোফাইলে লগ ইন করে টিচিং ইভ্যালুয়েশন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। ২২ টি প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের মূল্যায়নের এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।

জানা গেছে, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই হবে কনফিডেন্সিয়াল। অর্থাৎ কে, কাকে, কীভাবে মূল্যায়ন করছে এটি জানা যাবে না। এ কাজের জন্য প্রতিটি বিভাগে ২ জন করে এডমিন থাকবেন। আর পুরো বিষয়টিই থাকবে প্রো-ভিসি (শিক্ষা) -এর নিয়ন্ত্রণে।

তবে শুধু কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরাই ‘টিভিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমে যুক্ত হবেন। অর্থাৎ একটি কোর্সে কমপক্ষে ৭৫% উপস্থিতি না থাকলে একজন শিক্ষার্থী ঐ কোর্স টিচারকে মূল্যায়ন করতে পারবেন না।

১. ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর প্রস্তুতি সম্পন্ন, অপেক্ষা শুধু প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ।
২. ঢাবির ওয়েবসাইটে ব্যাক্তিগত প্রোফাইলে লগ ইন করে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ করবেন শিক্ষার্থীরা।
৩. শিক্ষকরা নিজেদের প্রোফাইলে শিক্ষার্থীদের করা মূল্যায়ন দেখতে পারবেন।
৪. নন-কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরা এ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না।
৫. সম্পূর্ণ মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি হবে কনফিডেন্সিয়াল এবং শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানার কোনো সুযোগ থাকবে না।
৬. সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি থাকবে প্রো-ভিসি(শিক্ষা) এর অধীনে।

সম্প্রতি, গত ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর উদ্যোগে ঢাবির অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন-প্রস্তুতি’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উক্ত অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আইকিউএসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ
শাহরিয়ার রহমান, অধ্যাপক ড. এ টি এম সামছুজ্জোহাসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. এ টি এম সামছুজ্জোহা দৈনিক নওরোজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজেদের প্রোফাইলের ড্যাশ বোর্ড থেকে ২২ টি প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পারবেন। আমরা ইতোমধ্যে আইসিটি সেলের সহায়তায় ৩ মিনিটের একটি টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরি করেছি যা দেখে শিক্ষার্থীরা সহজেই টিভিং ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন করতে পারবে।

ড. এ টি এম সামছুজ্জোহা আরও বলেন, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) -এর অধীনে এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হবে এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই হবে কনফিডেন্সিয়াল। অর্থাৎ কে কাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছে এটি জানা যাবে না। সুষ্ঠুভাবে কাজটি সম্পাদনের জন্য প্রতিটি বিভাগে ২ জন করে এডমিন থাকবেন।

শিক্ষার্থীদের কর্তৃক গৃহীত এ মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে অবহিতকরণ প্রসঙ্গে অধ্যাপক সামছুজ্জোহা বলেন, যদি কোনো শিক্ষকের মূল্যায়ন নিন্মমানের হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন কিংবা বিভাগের চেয়ারম্যান ঐ শিক্ষককে ডেকে কোন জায়গায় তার উন্নতি করতে হবে তা বলবেন।

জানতে চাইলে ঢাবি আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান দৈনিক নওরোজকে বলেন, ঢাবি আইসিটি সেল ইতোমধ্যেই ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম বাস্তবায়নের জন্য সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে৷ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে স্ব স্ব প্রোফাইলে লগ ইন করে ড্যাশ বোর্ড থেকে তাদের বিভাগের শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত পেলেই এটি ওপেন করা হবে।

তবে শুধু কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরাই ‘টিভিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমে যুক্ত হবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই কলেজিয়েট হতে হবে। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কোর্স টিচারের কোর্সে ৭৫% উপস্থিতি থাকতে হবে নতুবা, ঐ শিক্ষার্থী মূল্যায়ন করতে পারবে না৷

টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেমের গোপনীয়তা সম্পর্কে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান বলেন, এই প্রক্রিয়ায় কোন শিক্ষার্থী কাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন তা অন্য কেউ জানার সুযোগ নেই। এমনকি একবার ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন করলে সেটা নির্দিষ্ট সময় পর তার প্রোফাইল থেকেও মুছে যাবে।

শিক্ষকরা কীভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে অবহিত হবেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই সিস্টেমটির মূল দায়িত্ব থাকবে প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) এর উপর। তিনি সকল শিক্ষকের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন। একটি অনুষদের ডিন তার অনুষদের সকল শিক্ষকের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন। চেয়ারম্যান তার বিভাগের সকল শিক্ষকের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন। আবার শিক্ষকরা তাদের নিজ নিজ প্রোফাইলে তাদের মূল্যায়ন দেখতে পারবেন।

তবে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালুর সম্ভাব্য তারিখ ও অন্যান্য বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেন নি তিনি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১ নভেম্বর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় এই টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে ২০২৩ এর জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেম চালু করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

এদিকে শিক্ষার সামগ্রিক গুণগতমান উন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের অভিমত, ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ সিস্টেমের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন বাড়বে এবং শিক্ষকদের রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি বাড়বে।
পাশাপাশি এ ব্যবস্থা চালু হলে কোন শিক্ষক কেমন পড়ান, তাঁর কোর্সের বিষয়বস্তু কেমন, তিনি সময়মতো ক্লাসে যাচ্ছেন কি-না, কোর্স ম্যাটারিয়ালস সরবরাহ করছে কিনা, মিডটার্ম, এসাইনমেন্ট ঠিকমতো নিচ্ছেন কিনা এবং সেগুলো ঠিকমতো মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা- এ সকল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সামগ্রিক গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে টিচিং ইভ্যালুয়েশন সিস্টেম কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে ।