ব্যার্থ উত্তরখান থানা পুলিশ
নিখোঁজের ২১ দিন পর ও উদ্বার হয়নি ১৩ বছরের কিশোরী
- Update Time : ০৭:২৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩
- / ১১৪ Time View
নিখোঁজ হওয়ার ২১ দিনের মাথায়ও উদ্বার হয়নি উত্তরখান থানার অন্তগত বাবুপাড়া নিবাসী মৃত আলমাস আমিনের একমাত্র কন্যা আবিদা আলমাস।
এই বিষয়ে তার মা তৌহিদ বেগম বাদী হয়ে গত ৯/০৭/২০২৩ ইং উত্তরখান থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন যাহার নং ৩৩০।
ঘটনার বিবরনে মেয়ের মা তৌহিদা বেগম বলেন বেশকিছুদিন আগে আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে বাসার পাশের এক হোটেল ব্যাবসায়ীর ছেলে শান্ত (১৬) আমার মেয়েকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে বিরক্ত করতো। মেয়ে আমাকে প্রথম প্রথম জানালে পরবর্তীতে আমি তার বাবা শহিদুল ও তার মা সাজেদা বেগম কে অবহিত করি।
তারা বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলেকে প্রশ্রয় দিয়ে বিভিন্ন সময় আমার মেয়েকে স্কুলে গিয়ে সাজেদা ফুসলিয়ে এর আগেও ২ বার নিয়ে যায়। তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা অস্বীকার করার পর দুই দুই বার তাদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা সদরের খোসাইহাটি ইউনিয়নের ফরাজিপাড়ার নওগাঁর বাড়ি থেকে নিয়ে আসি। তৃতীয় বারের মত তারা বাবু পাড়া থেকে তাদের হোটেল বিক্রয করে স্ব পরিবারে গাইবান্ধা চলে যাওয়ায় আমি নিঃচিন্তে আমার মেয়েকে চাইল্ড কেয়ার স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করি।
কিন্তু আসে পাসের লোকজন আমাকে বলেন শান্ত এবং শান্তর মাকে আটি পাড়ায় দেখেছে তাদের কথায় কান না দিয়ে আমি মেয়েকে স্কুলে পাঠাই। স্কুলের টিফিনের সময় আমি আমার ছোট ছেলেকে আনতে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে ক্লাসে নেই। তার ক্লাসের সহপাঠীদের কাছে জিজ্ঞেস করিলে বলেন বিদ্যালয়ের নিচে একটি ছেলের সাথে কথা বলতে দেখেছে। কোথায় গেছে তারা জানেনা।
বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে তার কোন সন্ধান না পেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করি। যাহার তদন্ত ভারপড়ে এসআই সোলাইমান সাহেবের উপর।
সোলাইমান সাহেব ছেলের বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করে মেয়ে আছে বলে জানতে পেরে আমাকে রাত ১ টার সময় ফোন করলে আমি তাদের কথায় গাড়ি ভাড়া করি এবং আমার ভগ্নিপতি পলাশকে সাথে নিয়ে পুলিশ সহ গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই।
সেখানে পৌঁছালে শহিদুল প্রায় দুই আড়াইশ লোক নিয়ে আমাদের সামনে তার ছেলেকে হাজির করে বলেন মেয়ে আসেনি। পরবর্তীতে পুলিশ সহ আমরা শুন্য হাতে ফেরত আসি। আমার প্রায় ৩০ হাজার টাকার মত খরচ হয়। আমি একজন বিধবা নারী কোথায় পাবো টাকা কোথায় আছে আমার মেয়ে জীবিত না মৃত কিছুই জানিনা।
তিনি আরো বলেন নিখোজ হওয়ার কিছু দিন আগ শহিদুলের ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে দুইজন লোক আমাদের বাসায় আসেন তাদের মধ্যে একজন নিজেকে উত্তরখান থানার এএসআই সায়েম বলে পরিচয় দেন।
পরবর্তীতে মেয়েকে উদ্ধার করার জন্য ১১/০৭/২৩ ইং গাইবান্ধা যাওয়ার সময় তারসাথে আমার ২য় বার দেখা হয়। তার প্রস্তাবের উত্তরে আমি তাকে বলেছিলাম আমার মেয়ের বয়স মাত্র ১৩ বছর। তখন তিনি মুখে হাত দিয়ে আমার বাসা থেকে বেরিয়ে যান।
পরবর্তীতে লোকমাফত জানতে পারি যে ঐ পুলিশ শহিদুলের হোটেলে খাওয়া দাওয়া করতেন। তাকে শহিদুলের স্ত্রী এই প্রস্তাব দিয়ে পাঠান।
বিষয়টি আমি দক্ষিনখান জোনের এসি রাকিবা ইয়াসমিন ম্যাডামকে জানালে তিনি আমাকে শান্তনা দিয়ে বলেন আমিও একজন মা আমি আপনার ব্যাথা বুঝি। তিনি অত্যান্ত ভালো মনের মানুষ। তিনি আমাকে বলেন আপনি মামলা করতে চাইলে আমি ওসিকে বলে দিব।
পরবর্তীতে আমি নিরুপায় হয়ে গত ১৭/০৭/২০২৩ ইং শিশু ও নারীপাচার আইনে একটি মামলা রুজু করি যাহার নং ১৩।
আমি আমার এক আত্নীয়ের মাধ্যমে মামলার কপি র্যাব ১ ও র্যাব ১৩ তে পাঠাই। তারা প্রত্যেকে আমাকে শান্তনা দিয়ে বলেন আমরা আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করছি। কিন্তু আমিতো মা আমার মন মানেনা আমার বুকের মানিক জীবিত না মৃত শুধু আল্লাহ ভালো জানেন।
শহিদুল ও তার ছেলে শান্তর যে দুইটা নাম্বার আমি পেয়েছি তা বর্তমানে বন্ধ পাচ্ছি। নাম্বার গুলো নিম্নরুপ +8801870747296, 01883390866।
দারোগা সোলেমান আমাকে বলেন কোন খোঁজ পেলে তাকে জানাতে। আমি খোঁজ পেলেতো নিজেই নিয়ে আসতাম।
মামলার ব্যাপারে উত্তরখান থানার ওসি কাজী আবুল কালাম বলেন মেয়েটি ইতিপূর্বেও ২ বার স্বেচ্ছায় তাদের কাছে চলে গিয়েছে। তবুও মেয়েটি নাবালিকা হওয়ায় আমরা আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করছি।
অপরদিকে মামলা ব্যাপারে উত্তরখান থানা কি পদক্ষেপে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে বলে জানান। সঠিক লোকেশন পেলেই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হবে। ওসিকে আন্তরিকতার সাথে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেওয়া আছে।
তৌহিদা বেগম বলেন পুলিশের লোক হয়ে সায়েম সাহেব কেনই বা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলেন তার কাজ কি এটা।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়