ঢাকা ১২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার” টাঙ্গাইলে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধের মৃত্যু আখেরী মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে জাকের পার্টির বিশ্ব ইসলামি মহা সম্মেলন ও মহা পবিত্র ফাতেহা শরীফের সমাপ্তি টঙ্গীতে পরিবহনে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৮ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবঃ প্রধান বিচারপতি  শত কোটি টাকা আত্মসাৎ: দেশত্যাগের সময় বিমানবন্দরে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক লালপুরে আ,লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ইবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আনসার কর্তৃক শিক্ষক হেনস্তার অভিযোগ

দার্জিলিংকে ডিজিটাল করতে লড়ছেন যে নারী উদ্যোক্তা

নওরোজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৩৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩
  • / ৪৪ Time View

জন্মভূমির জন্য কিছু করার তাগিদে ২০১৮ সালের শেষের দিকে মুম্বাইতে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও সাংবাদিকতার মতো পেশাকে পেছনে ফেলে দার্জিলিং চলে আসেন ৩৫ বছর বয়সী প্রশংসা গুরুং। চা, পর্যটন ও কাঠের জন্য বিখ্যাত দার্জিলিংয়ের মানুষদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করার আসায় এখানে আসেন তিনি। এখানকার অনেক যুবকই কাজের খোঁজে চলে যায় পার্শ্ববর্তী শহরে। তাদেরকে এখানেই কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

এ উদ্দেশ্যে তিনি স্থাপন করেন দার্জিঙ্ক, যা মূলত প্রযুক্তিভিত্তিক একটি স্টার্ট আপ। এখানে বিভিন্ন উদ্যোক্তারা তাদের পরিকল্পনা খুঁজতে, তহবিল খুঁজতে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবেন। তাছাড়া এর মাধ্যমে দার্জিলিং এর বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচার ব্যবস্থাও রয়েছে।

প্রশংসার লক্ষ্য হলো দার্জিলিংকে ডিজিটালভাবে উন্নত করা। স্কুলে থাকাকালীন সময়েই দিল্লিতে বেড়াতে গেলে সেখানকার পণ্যসামগ্রী দেখে প্রশংসার মনে হয় দার্জিলিংয়ের পণ্য দিয়েও এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা সম্ভব।

স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি দিল্লিতে ইতিহাস বিষয়ে অনার্স শেষ করেন এবং পরবর্তীতে সাংবাদিকতার জন্য মুম্বাইয়ে চলে যান। সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিষয়ে তিনি কোর্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে টাইমস নাও, ফেমিনা ও এমটিভির মতো বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে তিনি তার গল্প বলে যান। বিভিন্ন ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি প্রজেক্টেও কাজ করেছেন তিনি। সেসময়েও তিনি দার্জিঙ্কের কথাই ভাবতেন। ২০১৬ সালে তিনি দার্জিলিংয়ে এসে দার্জিঙ্ক কোম্পানিটি নিবন্ধিত করেন। পরবর্তীতে এক বছরের জন্য তাকে মুম্বাই ফিরে যেতে হয়।

২০১৯ সালে পুনরায় দার্জিলিংয়ে ফিরে তিনি তার কাজ শুরু করেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে যখন তিনি ব্যবসার কাজে মন দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত তখন করোনা মহামারী আকস্মিক আঘাত হানে। এর মাঝেই তিনি দার্জিলিংয়ের স্থানীয় আচার তৈরির কাজ শুরু করেন এবং এ কাজের জন্য স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। ধার করা স্কুটার এবং ১৪০০ রুপি দিয়ে শুরু হয় তার ব্যবসা।

প্রথম মাসে কোনো প্রকার চার্জ ছাড়াই পণ্য সরবরাহ করেন তিনি। ধীরে ধীরে চারপাশের মানুষদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হন তিনি। প্রথম দিকে কেউই তার সঙ্গে কাজ করতে চাইতো না এবং ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়ে এমন ব্যবসা কাজে একটি মেয়ের জড়িত হওয়াকে কেউই ভালো দৃষ্টিতে দেখেনি।

তবে ধীরে ধীরে দার্জিঙ্ক মানুষের ভরসার জায়গা হয়ে উঠে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কোম্পানিটি ১১ লাখ রুপি আয় করেছে। এখন দার্জিলিংয়ের লোকেরা বুঝতে পেরেছে তাদের আর কাজ খোঁজার জন্য বাইরে যেতে হবে না। বর্তমানে প্রশংসা দার্জিঙ্ক নিয়ে আরও অভিনব চিন্তাভাবনা করছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

দার্জিলিংকে ডিজিটাল করতে লড়ছেন যে নারী উদ্যোক্তা

Update Time : ১০:৩৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩

জন্মভূমির জন্য কিছু করার তাগিদে ২০১৮ সালের শেষের দিকে মুম্বাইতে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও সাংবাদিকতার মতো পেশাকে পেছনে ফেলে দার্জিলিং চলে আসেন ৩৫ বছর বয়সী প্রশংসা গুরুং। চা, পর্যটন ও কাঠের জন্য বিখ্যাত দার্জিলিংয়ের মানুষদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করার আসায় এখানে আসেন তিনি। এখানকার অনেক যুবকই কাজের খোঁজে চলে যায় পার্শ্ববর্তী শহরে। তাদেরকে এখানেই কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

এ উদ্দেশ্যে তিনি স্থাপন করেন দার্জিঙ্ক, যা মূলত প্রযুক্তিভিত্তিক একটি স্টার্ট আপ। এখানে বিভিন্ন উদ্যোক্তারা তাদের পরিকল্পনা খুঁজতে, তহবিল খুঁজতে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবেন। তাছাড়া এর মাধ্যমে দার্জিলিং এর বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচার ব্যবস্থাও রয়েছে।

প্রশংসার লক্ষ্য হলো দার্জিলিংকে ডিজিটালভাবে উন্নত করা। স্কুলে থাকাকালীন সময়েই দিল্লিতে বেড়াতে গেলে সেখানকার পণ্যসামগ্রী দেখে প্রশংসার মনে হয় দার্জিলিংয়ের পণ্য দিয়েও এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা সম্ভব।

স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি দিল্লিতে ইতিহাস বিষয়ে অনার্স শেষ করেন এবং পরবর্তীতে সাংবাদিকতার জন্য মুম্বাইয়ে চলে যান। সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিষয়ে তিনি কোর্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে টাইমস নাও, ফেমিনা ও এমটিভির মতো বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে তিনি তার গল্প বলে যান। বিভিন্ন ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি প্রজেক্টেও কাজ করেছেন তিনি। সেসময়েও তিনি দার্জিঙ্কের কথাই ভাবতেন। ২০১৬ সালে তিনি দার্জিলিংয়ে এসে দার্জিঙ্ক কোম্পানিটি নিবন্ধিত করেন। পরবর্তীতে এক বছরের জন্য তাকে মুম্বাই ফিরে যেতে হয়।

২০১৯ সালে পুনরায় দার্জিলিংয়ে ফিরে তিনি তার কাজ শুরু করেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে যখন তিনি ব্যবসার কাজে মন দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত তখন করোনা মহামারী আকস্মিক আঘাত হানে। এর মাঝেই তিনি দার্জিলিংয়ের স্থানীয় আচার তৈরির কাজ শুরু করেন এবং এ কাজের জন্য স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। ধার করা স্কুটার এবং ১৪০০ রুপি দিয়ে শুরু হয় তার ব্যবসা।

প্রথম মাসে কোনো প্রকার চার্জ ছাড়াই পণ্য সরবরাহ করেন তিনি। ধীরে ধীরে চারপাশের মানুষদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হন তিনি। প্রথম দিকে কেউই তার সঙ্গে কাজ করতে চাইতো না এবং ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়ে এমন ব্যবসা কাজে একটি মেয়ের জড়িত হওয়াকে কেউই ভালো দৃষ্টিতে দেখেনি।

তবে ধীরে ধীরে দার্জিঙ্ক মানুষের ভরসার জায়গা হয়ে উঠে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কোম্পানিটি ১১ লাখ রুপি আয় করেছে। এখন দার্জিলিংয়ের লোকেরা বুঝতে পেরেছে তাদের আর কাজ খোঁজার জন্য বাইরে যেতে হবে না। বর্তমানে প্রশংসা দার্জিঙ্ক নিয়ে আরও অভিনব চিন্তাভাবনা করছেন।