ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবিতে যৌন হয়রানি মারধর ও গবেষণাপত্রে চুরির দায়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০১:২৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৯৯ Time View

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি মারধর ও গবেষণাপত্রে চুরির দায়ে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটউটের (আইবিএ) শিক্ষক ওয়াসেল বিন সাদাত, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল-ইসলাম, ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাবি সিন্ডিকেট।

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটউটের (আইবিএ) শিক্ষক ওয়াসেল বিন সাদাতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগে এক অধ্যাপককে মারধরের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল-ইসলামকে পদানবতি  ও পিএইচডি গবেষণাপত্রে (অভিসন্দর্ভে) চুরির দায়ে দুই অধ্যাপকের পদাবনতি তিন বছর স্থায়ী করা হয়েছে।

বুধবার(২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত আগস্ট মাসে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী শিক্ষক ওয়াসেল বিন সাদাতের কক্ষে থিসিস জমা দিতে এসে যৌন হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। শিক্ষক ওয়াসেল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কোর্সের এক্সটারনাল হিসেবে দায়িত্বরত।

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, অধ্যাপক ওয়াসেল তার থিসিস সুপারভাইজার।গত ১৫ আগস্ট থিসিসের বিষয়ে দেখা করতে এলে তিনি অত্যন্ত অমার্জিত আচরণ করতে শুরু করেন। পরে শিক্ষক মৌখিক ও শারীরিকভাবে হ্যারাস (হয়রানি) করেন। ওইদিন অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পুরো ভবন খালি ছিল ।

সিন্ডিকেট সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে, ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তাকে আপাতত সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ছাড়া তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল-ইসলামকে পাঁচ বছরের জন্য অধ্যাপক থেকে পদাবনতি দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক করা হয়েছে।

পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভ (থিসিস) জালিয়াতির মাধ্যমে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নেওয়া ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীরের ডিগ্রি বাতিল ও সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপকে পদাবনতি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল ও প্রভাষক পদাবনতির সিদ্ধান্ত তিন বছর স্থায়ী করা হয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় ১৬ গবেষককে পিএইচডি এবং ১৪ গবেষককে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৯৯ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে পরীক্ষাসহ ৪ বছর, ৫৩ জনকে পরীক্ষাসহ তিন বছর এবং ৩৯ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষাসহ দুই বছর মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। দুই শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্ট কোর্সের মিডটার্ম/ইনকোর্স পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ সিন্ডিকেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাবিতে যৌন হয়রানি মারধর ও গবেষণাপত্রে চুরির দায়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

Update Time : ০১:২৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি মারধর ও গবেষণাপত্রে চুরির দায়ে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটউটের (আইবিএ) শিক্ষক ওয়াসেল বিন সাদাত, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল-ইসলাম, ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাবি সিন্ডিকেট।

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটউটের (আইবিএ) শিক্ষক ওয়াসেল বিন সাদাতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগে এক অধ্যাপককে মারধরের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল-ইসলামকে পদানবতি  ও পিএইচডি গবেষণাপত্রে (অভিসন্দর্ভে) চুরির দায়ে দুই অধ্যাপকের পদাবনতি তিন বছর স্থায়ী করা হয়েছে।

বুধবার(২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত আগস্ট মাসে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী শিক্ষক ওয়াসেল বিন সাদাতের কক্ষে থিসিস জমা দিতে এসে যৌন হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। শিক্ষক ওয়াসেল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কোর্সের এক্সটারনাল হিসেবে দায়িত্বরত।

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, অধ্যাপক ওয়াসেল তার থিসিস সুপারভাইজার।গত ১৫ আগস্ট থিসিসের বিষয়ে দেখা করতে এলে তিনি অত্যন্ত অমার্জিত আচরণ করতে শুরু করেন। পরে শিক্ষক মৌখিক ও শারীরিকভাবে হ্যারাস (হয়রানি) করেন। ওইদিন অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পুরো ভবন খালি ছিল ।

সিন্ডিকেট সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে, ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তাকে আপাতত সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ছাড়া তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল-ইসলামকে পাঁচ বছরের জন্য অধ্যাপক থেকে পদাবনতি দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক করা হয়েছে।

পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভ (থিসিস) জালিয়াতির মাধ্যমে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নেওয়া ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীরের ডিগ্রি বাতিল ও সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপকে পদাবনতি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল ও প্রভাষক পদাবনতির সিদ্ধান্ত তিন বছর স্থায়ী করা হয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় ১৬ গবেষককে পিএইচডি এবং ১৪ গবেষককে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৯৯ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে পরীক্ষাসহ ৪ বছর, ৫৩ জনকে পরীক্ষাসহ তিন বছর এবং ৩৯ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষাসহ দুই বছর মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। দুই শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্ট কোর্সের মিডটার্ম/ইনকোর্স পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ সিন্ডিকেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।