ঢাকা ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ফেসবুকে অপপ্রচার: জবি শিক্ষককের বিচার চেয়ে ভিসির কাছে ডীনের অভিযোগ কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড সাইকেল চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েছেন “দিদার” টাঙ্গাইলে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ, বৃদ্ধের মৃত্যু আখেরী মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে জাকের পার্টির বিশ্ব ইসলামি মহা সম্মেলন ও মহা পবিত্র ফাতেহা শরীফের সমাপ্তি টঙ্গীতে পরিবহনে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৮ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভবঃ প্রধান বিচারপতি  শত কোটি টাকা আত্মসাৎ: দেশত্যাগের সময় বিমানবন্দরে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক লালপুরে আ,লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ইবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আনসার কর্তৃক শিক্ষক হেনস্তার অভিযোগ

অনাস্থা ভোটে মোদির জয়

নওরোজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১১:৩০:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৯১ Time View

মণিপুরে জাতিগত সংঘাত নিয়ে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ভালোভাবেই উৎরে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মোদি বক্তৃতা দেওয়ার পর সরকারদলীয় এমপিদের কণ্ঠভোটে খারিজ হয়ে যায় এই প্রস্তাব।

প্রসঙ্গত, ভারতের জনজাতি অধ্যুষিত রাজ্য মণিপুরে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় সরকার গাফিলতির পরিচয় দিয়েছে— অভিযোগ তুলে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো।

টানা তিনদিন এই প্রস্তাব নিয়ে বিজেপি ও বিরোধীদলীয় এমপিদের পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বক্তব্য দেন নরেন্দ্র মোদি।

নিজ বক্তব্যে মোদি বলেন, ‘আমি মণিপুরের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে পুরো দেশ তাদের পাশে রয়েছে এবং দ্রুত সেই রাজ্যে শান্তি ফিরে আসবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে মণিপুরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী জাতিগোষ্ঠী মেইতিদের সাংবিধানিকভাবে তফসিলি জাতির স্বীকৃতি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দেন রাজধানী ইম্ফলের হাইকোর্ট। হাইকোর্ট এই সুপারিশ জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংঘাত শুরু হয় মেইতি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি-চিন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে।

বিজেপিশাসিত মণিপুরে দাঙ্গা থামাতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর রিজার্ভ ফোর্স পাঠানো ব্যতীত এতদিন দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। গত দুই মাসের দাঙ্গায় অন্তত ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি মানুষ। সেই সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর, গির্জা, মন্দির ও সরকারি স্থাপনা, বাড়ি-ঘর ছেড়ে মিজোরাম, আসাম ও নিকটবর্তী অন্যান্য রাজ্যের আশ্রয়শিবিরগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।

গত ১৯ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, কুকি-চিন জাতিগোষ্ঠীর তিন নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটতে বাধ্য করেছে একদল দাঙ্গাকারী। ওই নারীদের মধ্যে একজন গণধর্ষণেরও শিকার হয়েছিলেন।

এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরদিন, ২০ জুলাই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রথমবারের মতো মণিপপুর ইস্যুতে মুখ খোলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু মোদি বক্তব্য দেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি নিতে থাকে কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলো এবং সোমবার ছিল তার শেষ ধাপ। আনুষ্ঠানিকভাবে সেদিন অনাস্থা প্রস্তাব তোলা হয় মোদি ও তার নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবারের বক্তৃতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মণিপুরে বেশ কয়েকজন নারী গুরুতর অপরাধের শিকার হয়েছেন। অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনতে কেন্দ্র ও মণিপুর রাজ্য সরকার সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমি ভারতবাসীকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, মণিপুরে শিগগিরই শান্তি ফিরে আসবে এবং এই রাজ্য আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে।’

‘আমি মণিপুরের নারীদের আরও বলতে চাই যে, পুরো দেশ তাদের পাশে রয়েছে। যে সংকট মণিপুরকে এই অবস্থার দিকে পরিচালিত করেছে, পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হলে তারও সমাধান হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

অনাস্থা ভোটে মোদির জয়

Update Time : ১১:৩০:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩

মণিপুরে জাতিগত সংঘাত নিয়ে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ভালোভাবেই উৎরে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মোদি বক্তৃতা দেওয়ার পর সরকারদলীয় এমপিদের কণ্ঠভোটে খারিজ হয়ে যায় এই প্রস্তাব।

প্রসঙ্গত, ভারতের জনজাতি অধ্যুষিত রাজ্য মণিপুরে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় সরকার গাফিলতির পরিচয় দিয়েছে— অভিযোগ তুলে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো।

টানা তিনদিন এই প্রস্তাব নিয়ে বিজেপি ও বিরোধীদলীয় এমপিদের পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বক্তব্য দেন নরেন্দ্র মোদি।

নিজ বক্তব্যে মোদি বলেন, ‘আমি মণিপুরের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে পুরো দেশ তাদের পাশে রয়েছে এবং দ্রুত সেই রাজ্যে শান্তি ফিরে আসবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে মণিপুরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী জাতিগোষ্ঠী মেইতিদের সাংবিধানিকভাবে তফসিলি জাতির স্বীকৃতি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দেন রাজধানী ইম্ফলের হাইকোর্ট। হাইকোর্ট এই সুপারিশ জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংঘাত শুরু হয় মেইতি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি-চিন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে।

বিজেপিশাসিত মণিপুরে দাঙ্গা থামাতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর রিজার্ভ ফোর্স পাঠানো ব্যতীত এতদিন দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। গত দুই মাসের দাঙ্গায় অন্তত ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি মানুষ। সেই সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর, গির্জা, মন্দির ও সরকারি স্থাপনা, বাড়ি-ঘর ছেড়ে মিজোরাম, আসাম ও নিকটবর্তী অন্যান্য রাজ্যের আশ্রয়শিবিরগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।

গত ১৯ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, কুকি-চিন জাতিগোষ্ঠীর তিন নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটতে বাধ্য করেছে একদল দাঙ্গাকারী। ওই নারীদের মধ্যে একজন গণধর্ষণেরও শিকার হয়েছিলেন।

এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরদিন, ২০ জুলাই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রথমবারের মতো মণিপপুর ইস্যুতে মুখ খোলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু মোদি বক্তব্য দেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি নিতে থাকে কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলো এবং সোমবার ছিল তার শেষ ধাপ। আনুষ্ঠানিকভাবে সেদিন অনাস্থা প্রস্তাব তোলা হয় মোদি ও তার নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবারের বক্তৃতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মণিপুরে বেশ কয়েকজন নারী গুরুতর অপরাধের শিকার হয়েছেন। অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনতে কেন্দ্র ও মণিপুর রাজ্য সরকার সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমি ভারতবাসীকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, মণিপুরে শিগগিরই শান্তি ফিরে আসবে এবং এই রাজ্য আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে।’

‘আমি মণিপুরের নারীদের আরও বলতে চাই যে, পুরো দেশ তাদের পাশে রয়েছে। যে সংকট মণিপুরকে এই অবস্থার দিকে পরিচালিত করেছে, পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হলে তারও সমাধান হবে।’