ঢাকা ০৫:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মা হলেন চতুর্থ শ্রেণির সেই শিশুটি

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ০৬:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১০১ Time View

চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। সমাজের বিকৃত মস্তিস্কের একজন এই পৈচাশিক ঘটনা ঘটিয়েছে।

একদিনের প্রচেষ্টায় র‌্যাব ধর্ষক জাহিদুলকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে। এখন ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতেও র‌্যাব কাজ করছে।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. ক. শাহরিয়ার নির্যাতিত শিশুর বাড়িতে গিয়ে এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, ঘটনাটি হৃদয়ে দাগ কেটেছে।

র‌্যাবের ডিজির নির্দেশনায় শিশুর পেটে জন্ম নেওয়া নবজাতক ও তার পরিবারের পাশে সার্বিকভাবে রয়েছে র‌্যাব। একইসঙ্গে নির্যাতিত শিশু ও তার গর্ভে জন্ম নেওয়া নিষ্পাপ নবজাতকের পাশে জেলা-উপজেলা প্রশাসন এবং সমাজের বৃত্তশালীদের দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।

দুপুর ১২টার দিকে র‌্যাব-৫ এর সিপিসি-২ নাটোর ক্যাম্পের মাধ্যমে র‌্যাবের নারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে নগদ অর্থ এবং খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন অধিনায়ক লে. ক. শাহরিয়ার।

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানি কমান্ডার মেজর আশিকুর রহমান, ডিএডি সাইফুল ইসলামসহ অনেকে।

এর আগে গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরকারি খরচে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ১১ বছরের শিশুটি।

জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নার্গিস তানজিমা ফেরদৌস ও এ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ফেরদৌস রহমানসহ ছয় সদস্যের চিকিৎসক টিম শিশুটির সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সহায়তা করা হয়। দুইদিন আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে ফিরে শিশুটি।

শিশুটির দাদি জানান, র‌্যাব এভাবে তাদের পাশে দাঁড়াবে, তা তারা ভাবতে পারেননি।আসামি গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে সার্বিক খোঁজখবর রাখা এবং বাড়িতে এসে সহায়তাও করছে র‌্যাব।

সাংবাদিকরাও বাড়িতে আসছেন। এতে তারা সমাজে মাথা উচু করে বাঁচার প্রেরণা পাচ্ছেন। র‌্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এখন অপরাধী জাহিদুলের শাস্তি নিশ্চিত হলেই তারা স্বস্তি পাবেন।

এর আগে ২৩ আগস্ট ইত্তেফাকে ‘চতুর্থ শ্রেণির শিশুটি এখন দশ মাসের অন্তঃসত্ত্বা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।

সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের। তার ৩ দিনের মাথায় র‌্যাবের অভিযানে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা গ্রাম থেকে ধর্ষক জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ধর্ষক জাহিদুল খাঁ গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁর ছেলে। জাহিদুল কারাগারে আছেন।

শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হলেও শিশুটির দাদি বাদী হয়ে ১৮ জুন ধর্ষণ মামলা করেন।

পরদিন ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৬৪ ধারায় শিশুটির জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত।

শিশুর চাচা জানান, শিশুটির পিতা-মাতা দুজনেই আলাদাভাবে বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। ছোট থেকে শিশুটিকে তারাই লালন পালন করছেন। স্থানীয় একটি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে সে।

Please Share This Post in Your Social Media

মা হলেন চতুর্থ শ্রেণির সেই শিশুটি

Update Time : ০৬:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। সমাজের বিকৃত মস্তিস্কের একজন এই পৈচাশিক ঘটনা ঘটিয়েছে।

একদিনের প্রচেষ্টায় র‌্যাব ধর্ষক জাহিদুলকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে। এখন ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতেও র‌্যাব কাজ করছে।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. ক. শাহরিয়ার নির্যাতিত শিশুর বাড়িতে গিয়ে এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, ঘটনাটি হৃদয়ে দাগ কেটেছে।

র‌্যাবের ডিজির নির্দেশনায় শিশুর পেটে জন্ম নেওয়া নবজাতক ও তার পরিবারের পাশে সার্বিকভাবে রয়েছে র‌্যাব। একইসঙ্গে নির্যাতিত শিশু ও তার গর্ভে জন্ম নেওয়া নিষ্পাপ নবজাতকের পাশে জেলা-উপজেলা প্রশাসন এবং সমাজের বৃত্তশালীদের দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।

দুপুর ১২টার দিকে র‌্যাব-৫ এর সিপিসি-২ নাটোর ক্যাম্পের মাধ্যমে র‌্যাবের নারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে নগদ অর্থ এবং খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন অধিনায়ক লে. ক. শাহরিয়ার।

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানি কমান্ডার মেজর আশিকুর রহমান, ডিএডি সাইফুল ইসলামসহ অনেকে।

এর আগে গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরকারি খরচে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ১১ বছরের শিশুটি।

জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নার্গিস তানজিমা ফেরদৌস ও এ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ফেরদৌস রহমানসহ ছয় সদস্যের চিকিৎসক টিম শিশুটির সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সহায়তা করা হয়। দুইদিন আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে ফিরে শিশুটি।

শিশুটির দাদি জানান, র‌্যাব এভাবে তাদের পাশে দাঁড়াবে, তা তারা ভাবতে পারেননি।আসামি গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে সার্বিক খোঁজখবর রাখা এবং বাড়িতে এসে সহায়তাও করছে র‌্যাব।

সাংবাদিকরাও বাড়িতে আসছেন। এতে তারা সমাজে মাথা উচু করে বাঁচার প্রেরণা পাচ্ছেন। র‌্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এখন অপরাধী জাহিদুলের শাস্তি নিশ্চিত হলেই তারা স্বস্তি পাবেন।

এর আগে ২৩ আগস্ট ইত্তেফাকে ‘চতুর্থ শ্রেণির শিশুটি এখন দশ মাসের অন্তঃসত্ত্বা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।

সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের। তার ৩ দিনের মাথায় র‌্যাবের অভিযানে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা গ্রাম থেকে ধর্ষক জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ধর্ষক জাহিদুল খাঁ গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁর ছেলে। জাহিদুল কারাগারে আছেন।

শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হলেও শিশুটির দাদি বাদী হয়ে ১৮ জুন ধর্ষণ মামলা করেন।

পরদিন ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৬৪ ধারায় শিশুটির জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত।

শিশুর চাচা জানান, শিশুটির পিতা-মাতা দুজনেই আলাদাভাবে বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। ছোট থেকে শিশুটিকে তারাই লালন পালন করছেন। স্থানীয় একটি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে সে।