ঢাকা ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

হজ শেষে করণীয় কী?

নওরোজ ধর্ম ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
  • / ১০৭ Time View

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোনো গাজওয়া বা হজ কিংবা ওমরা থেকে প্রত্যাবর্তনকালে কোনো টিলা বা উচুঁ স্থানে উঠতেন তখন তিনি তিনবার ❛আল্লাহু আকবার❜ বলে এই দোয়া পাঠ করতেন-
لَا اِلَهَ اِلَّا الله وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لُهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَئ قَدِيْر
আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক তাঁর কোনো শরিক নেই, সকল সাম্রাজ্য তাঁরই, সব প্রশংসা তাঁরই, তিনি সব বিষয়ের উপর শক্তিশালী।’

এছাড়াও আল্লাহর কাছে এভাবে বলা, হে আল্লাহ! আমরা ফিরছি, আমরা তওবাকারী, আমরা ইবাদত পালনকারী, আমাদের প্রেমাষ্পদ আল্লাহর পথে ঘুরি, আমরা আমাদের প্রভুরই প্রশংসাকারী। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা সত্যে পরিণত করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন, তাঁর সব বিরুদ্ধবাদী দলকে একাই পরাজিত করেছেন। হে আল্লাহ! আপনিই সর্ব শক্তিমান।

হজ থেকে ফিরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ গ্রাম বা শহর দেখার সময় এ দোয়া পড়তেন-
أَيِبُوْنَ انْ شَاءِ اللهِ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ سَاجِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ
‘আয়িবুনা তায়িবুনা আবিদুনা সাজিদুনা লি-রাব্বিনা হামিদুন।’
অর্থ: ‘আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী, নিজ রবের প্রশংসাকারী।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সফর থেকে বাড়ি ফিরতেন, তখন সর্বপ্রথম মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। তাই হজের দীর্ঘ সফর শেষে হজ পালনকারীরা যখন নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছবে, তখন তারা নবিজির সুন্নত অনুযায়ী নিজ নিজ মহল্লার মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। এরপর ঘরে যাবে। আর যদি কেউ ঘরে যায় তবে সফরের ক্লান্তি সেরে পরিচ্ছন্ন হয়ে হলেও মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবেন।

হজরত কাব বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো সফর থেকে ফিরে আসতেন, তখন মসজিদে (নফল) নামাজ আদায় করতেন।’ (বুখারি)
ঘরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা মোস্তাহাব। মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ঘরে এসেই আরও দুই রাকাত নামাজ পড়া। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তুমি ঘর থেকে বের হবে, তখন দু রাকাত নামাজ পড়বে। এ নামাজ তোমাকে ঘরের বাইরের বিপদাপদ থেকে হেফাজত করবে। আর যখন ঘরে ফিরবে, তখনও দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। এ নামাজ তোমাকে ঘরের অভ্যন্তরীণ বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করবে।’ (মুসনাদে বাজ্জার)

নিরাপদে দেশে ফেরার পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ে গরিব-মিসকিন ও আত্মীয়-স্বজনকে খাবারের দাওয়াত দেয়াও বৈধ। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত জাবের বিন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় এসেছেন, তখন একটি পশু জবাইয়ের নির্দেশ দেন। জবাইয়ের পর সাহাবায়ে কেরাম তা থেকে আহার করেছেন।’ (বুখারি)

হজ পালনকারীরা যদি জমজমের পানি নিয়ে আসেন তবে তা লোকদেরকে পান করানো মোস্তাহাব। অসুস্থ ব্যক্তিদের আরোগ্য লাভের নিয়তে পান করানোও বৈধ।

হাদিসে এসেছে- ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (বাইতুল্লাহ জেয়ারত করে আসার সময়) জমজমের পানি সঙ্গে নিয়ে আসতেন।’ (তিরমিজি)

সুস্থ শরীরে সুন্দর ও নিরাপদে হজ পালন করে বাড়ি ফেরার পর বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণে নিজেকে নিয়োজিত করাই হবে একজন হজ পালনকারীর কাজ। শুধু তা-ই নয়, হজ পরবর্তী জীবনের প্রতিটি কাজই হবে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে।
হজের পর বেশি বেশি জিকির করা এবং আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে দোয়া করা। আল্লাহ তাআলা বলেন-
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখেরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’
অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর এবং পরকালেও কল্যাণ দান কর। আর আমাদেরকে দোজখের যন্ত্রণাদায়ক আগুণ থেকে রক্ষা কর।’
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণ: রাব্বানা লা তুযেগ কুলুবানা বা’দা ইজ হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লাদুনকা রাহমাতান ইন্নাকা আংতাল ওয়াহহাব।’
অর্থ: হে আমাদের প্রভু! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে প্রবৃত্ত করো না; এবং তোমার নিকট থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর; নিশ্চয় তুমিই সবকিছুর দাতা।
বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া-
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لاَ إلَهَ إلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ وَأَتُوبُ إلَيْهِ ، رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ، إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُورُ
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি; রাব্বিগফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আংতাত তাওয়্যাবুল গাফুর।
সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়া-
أَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّيْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্বতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিং শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বি-নিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউ বিজান্মি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’
মনে রাখা জরুরি
প্রত্যেক হজ পালনকারীর জন্য এ কথা মনে রাখা জরুরি যে, হজ লোক দেখানো কোনো ইবাদত নয়, তাই হজ পরবর্তী সময়ে বিশাল আয়োজন করে হজের প্রচার-প্রচরণা কিংবা যে কোনো আয়োজন ইসলাম সমর্থন করে না।
যে আয়োজনে সমাজের উঁচু থেকে নিচু সব শ্রেণির মানুষ আসবে আর আয়োজনকারীকে বা হজ পালনকারীকে বাহবা দেবে। এমনটি যেন না হয়। মূল কথা হলো- হজ পালনকারীর প্রতিটি কাজই হবে আল্লাহ সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে।
হজ পালন শেষে দেশে ফেরার পর অনুষ্ঠান আয়োজন কিংবা অনুষ্ঠান ছাড়াও কোনোভাবেই ফুল দিয়ে বরণ বা ফুলের মালা বিনিময় কিংবা স্লোগান দেয়াসহ ইত্যাদি আয়োজন করা ঠিক নয়।
বরং হজ থেকে ফিরে আসার পর স্থানীয় লোকজন যেমন হজ পালনকারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, হাজিকে শুভেচ্ছা জানাবে; তেমনি হজ পালনকারী ব্যক্তিও তার শুভাকাক্সক্ষীদের জন্য কল্যাণের দোয়া করবেন। পরস্পর মুসাহাফা ও কোলাকুলি করবেন। দোয়া করবেন। এমনটি করা মোস্তাহাব।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ পালনকারীকে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক আমৃত্যু জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। লোক দেখানো ইবাদত ও আত্ম-সম্মান লাভের ভ্রান্ত চিন্তা-চেতনা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Please Share This Post in Your Social Media

হজ শেষে করণীয় কী?

Update Time : ১০:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোনো গাজওয়া বা হজ কিংবা ওমরা থেকে প্রত্যাবর্তনকালে কোনো টিলা বা উচুঁ স্থানে উঠতেন তখন তিনি তিনবার ❛আল্লাহু আকবার❜ বলে এই দোয়া পাঠ করতেন-
لَا اِلَهَ اِلَّا الله وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لُهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَئ قَدِيْر
আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক তাঁর কোনো শরিক নেই, সকল সাম্রাজ্য তাঁরই, সব প্রশংসা তাঁরই, তিনি সব বিষয়ের উপর শক্তিশালী।’

এছাড়াও আল্লাহর কাছে এভাবে বলা, হে আল্লাহ! আমরা ফিরছি, আমরা তওবাকারী, আমরা ইবাদত পালনকারী, আমাদের প্রেমাষ্পদ আল্লাহর পথে ঘুরি, আমরা আমাদের প্রভুরই প্রশংসাকারী। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা সত্যে পরিণত করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন, তাঁর সব বিরুদ্ধবাদী দলকে একাই পরাজিত করেছেন। হে আল্লাহ! আপনিই সর্ব শক্তিমান।

হজ থেকে ফিরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ গ্রাম বা শহর দেখার সময় এ দোয়া পড়তেন-
أَيِبُوْنَ انْ شَاءِ اللهِ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ سَاجِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ
‘আয়িবুনা তায়িবুনা আবিদুনা সাজিদুনা লি-রাব্বিনা হামিদুন।’
অর্থ: ‘আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী, নিজ রবের প্রশংসাকারী।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সফর থেকে বাড়ি ফিরতেন, তখন সর্বপ্রথম মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। তাই হজের দীর্ঘ সফর শেষে হজ পালনকারীরা যখন নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছবে, তখন তারা নবিজির সুন্নত অনুযায়ী নিজ নিজ মহল্লার মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। এরপর ঘরে যাবে। আর যদি কেউ ঘরে যায় তবে সফরের ক্লান্তি সেরে পরিচ্ছন্ন হয়ে হলেও মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবেন।

হজরত কাব বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো সফর থেকে ফিরে আসতেন, তখন মসজিদে (নফল) নামাজ আদায় করতেন।’ (বুখারি)
ঘরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা মোস্তাহাব। মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ঘরে এসেই আরও দুই রাকাত নামাজ পড়া। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তুমি ঘর থেকে বের হবে, তখন দু রাকাত নামাজ পড়বে। এ নামাজ তোমাকে ঘরের বাইরের বিপদাপদ থেকে হেফাজত করবে। আর যখন ঘরে ফিরবে, তখনও দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। এ নামাজ তোমাকে ঘরের অভ্যন্তরীণ বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করবে।’ (মুসনাদে বাজ্জার)

নিরাপদে দেশে ফেরার পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ে গরিব-মিসকিন ও আত্মীয়-স্বজনকে খাবারের দাওয়াত দেয়াও বৈধ। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত জাবের বিন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় এসেছেন, তখন একটি পশু জবাইয়ের নির্দেশ দেন। জবাইয়ের পর সাহাবায়ে কেরাম তা থেকে আহার করেছেন।’ (বুখারি)

হজ পালনকারীরা যদি জমজমের পানি নিয়ে আসেন তবে তা লোকদেরকে পান করানো মোস্তাহাব। অসুস্থ ব্যক্তিদের আরোগ্য লাভের নিয়তে পান করানোও বৈধ।

হাদিসে এসেছে- ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (বাইতুল্লাহ জেয়ারত করে আসার সময়) জমজমের পানি সঙ্গে নিয়ে আসতেন।’ (তিরমিজি)

সুস্থ শরীরে সুন্দর ও নিরাপদে হজ পালন করে বাড়ি ফেরার পর বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণে নিজেকে নিয়োজিত করাই হবে একজন হজ পালনকারীর কাজ। শুধু তা-ই নয়, হজ পরবর্তী জীবনের প্রতিটি কাজই হবে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে।
হজের পর বেশি বেশি জিকির করা এবং আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে দোয়া করা। আল্লাহ তাআলা বলেন-
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখেরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’
অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর এবং পরকালেও কল্যাণ দান কর। আর আমাদেরকে দোজখের যন্ত্রণাদায়ক আগুণ থেকে রক্ষা কর।’
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণ: রাব্বানা লা তুযেগ কুলুবানা বা’দা ইজ হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লাদুনকা রাহমাতান ইন্নাকা আংতাল ওয়াহহাব।’
অর্থ: হে আমাদের প্রভু! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে প্রবৃত্ত করো না; এবং তোমার নিকট থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর; নিশ্চয় তুমিই সবকিছুর দাতা।
বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া-
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لاَ إلَهَ إلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ وَأَتُوبُ إلَيْهِ ، رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ، إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُورُ
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি; রাব্বিগফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আংতাত তাওয়্যাবুল গাফুর।
সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়া-
أَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّيْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্বতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিং শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বি-নিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউ বিজান্মি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’
মনে রাখা জরুরি
প্রত্যেক হজ পালনকারীর জন্য এ কথা মনে রাখা জরুরি যে, হজ লোক দেখানো কোনো ইবাদত নয়, তাই হজ পরবর্তী সময়ে বিশাল আয়োজন করে হজের প্রচার-প্রচরণা কিংবা যে কোনো আয়োজন ইসলাম সমর্থন করে না।
যে আয়োজনে সমাজের উঁচু থেকে নিচু সব শ্রেণির মানুষ আসবে আর আয়োজনকারীকে বা হজ পালনকারীকে বাহবা দেবে। এমনটি যেন না হয়। মূল কথা হলো- হজ পালনকারীর প্রতিটি কাজই হবে আল্লাহ সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে।
হজ পালন শেষে দেশে ফেরার পর অনুষ্ঠান আয়োজন কিংবা অনুষ্ঠান ছাড়াও কোনোভাবেই ফুল দিয়ে বরণ বা ফুলের মালা বিনিময় কিংবা স্লোগান দেয়াসহ ইত্যাদি আয়োজন করা ঠিক নয়।
বরং হজ থেকে ফিরে আসার পর স্থানীয় লোকজন যেমন হজ পালনকারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, হাজিকে শুভেচ্ছা জানাবে; তেমনি হজ পালনকারী ব্যক্তিও তার শুভাকাক্সক্ষীদের জন্য কল্যাণের দোয়া করবেন। পরস্পর মুসাহাফা ও কোলাকুলি করবেন। দোয়া করবেন। এমনটি করা মোস্তাহাব।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ পালনকারীকে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক আমৃত্যু জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। লোক দেখানো ইবাদত ও আত্ম-সম্মান লাভের ভ্রান্ত চিন্তা-চেতনা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।