ঢাকা ১২:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গণধর্ষণ

পাবনা প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৯:০০:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪০ Time View

পাবনার সুজানগরে স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

২৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে সুজানগর উপজেলা ও আমিনপুর থানার অন্তর্গত সাগরকান্দি ইউনিয়নের কেষ্টপুর গ্রামে গণধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আমিনপুর থানার ওসি হারুনুর রশিদ বৃহস্পতিবার জানান, এ ঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন- চর কেষ্টপুর গ্রামের মাজেদ প্রামাণিকের ছেলে সেলিম প্রামাণিক, আনিছ সরদারের ছেলে রাজীব সরদার, তালেব মণ্ডলের ছেলে রুহুল মণ্ডল, শফিক সরদারের ছেলে লালন সরদার, মো. শামসুল হোসেনের ছেলে সিরাজুল ও একই গ্রামের মো. শরীফ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চর কেষ্টপুর গ্রামের একটি ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করা হয়। মাহফিলের ডেকোরেশনের কাজের দায়িত্বে ছিলেন আমিনপুর থানার রুপপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী। নিজ বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় সেখান থেকে ওয়াজ শুনে স্ত্রীসহ রাত ১১টার দিকে পাশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে তাদের গতিরোধ করেন অভিযুক্ত ওই ৬ যুবক।

একপর্যায়ে ওই নারীর স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে ভুট্টাখেতে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ওই নারীর স্বামী তাদের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে স্থানীয়দের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা দ্রুত পালিয়ে যান। এ সময় ধর্ষিত ওই নারীকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওয়াজ শুনতে আসা স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আমাদের ওয়াজ মাহফিল চলা অবস্থায় ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী ছুটে এসে বলেন- কিছু যুবক তাকে মারধর করে তার স্ত্রীকে ধরে নিয়ে গেছে। এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় অভিযুক্তরা দ্রুত পালিয়ে যান। পরে মেয়েটাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেনের কাছে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমরা আত্মীয় বাড়িতে যাওয়া পথে কয়েকজন যুবক আমাদের পথ আটকায়। আমাদের জিজ্ঞেস করে, তোরা স্বামী-স্ত্রী কিনা। আমরা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী দাবি করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে ব্যাপক মারধর করে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাকে ভুট্টাখেতে নিয়ে ধর্ষণ করে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী ৩ মাসের গর্ভবতী ছিল। ধর্ষণে আমাদের গর্ভের সন্তানটা পর্যন্ত মরে গেছে; আমি আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ এবং আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে পাবনা সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর সার্কেল) রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি অতিদ্রুতই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গণধর্ষণ

Update Time : ০৯:০০:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাবনার সুজানগরে স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

২৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে সুজানগর উপজেলা ও আমিনপুর থানার অন্তর্গত সাগরকান্দি ইউনিয়নের কেষ্টপুর গ্রামে গণধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আমিনপুর থানার ওসি হারুনুর রশিদ বৃহস্পতিবার জানান, এ ঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন- চর কেষ্টপুর গ্রামের মাজেদ প্রামাণিকের ছেলে সেলিম প্রামাণিক, আনিছ সরদারের ছেলে রাজীব সরদার, তালেব মণ্ডলের ছেলে রুহুল মণ্ডল, শফিক সরদারের ছেলে লালন সরদার, মো. শামসুল হোসেনের ছেলে সিরাজুল ও একই গ্রামের মো. শরীফ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চর কেষ্টপুর গ্রামের একটি ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করা হয়। মাহফিলের ডেকোরেশনের কাজের দায়িত্বে ছিলেন আমিনপুর থানার রুপপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী। নিজ বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় সেখান থেকে ওয়াজ শুনে স্ত্রীসহ রাত ১১টার দিকে পাশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে তাদের গতিরোধ করেন অভিযুক্ত ওই ৬ যুবক।

একপর্যায়ে ওই নারীর স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে ভুট্টাখেতে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ওই নারীর স্বামী তাদের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে স্থানীয়দের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা দ্রুত পালিয়ে যান। এ সময় ধর্ষিত ওই নারীকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওয়াজ শুনতে আসা স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আমাদের ওয়াজ মাহফিল চলা অবস্থায় ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী ছুটে এসে বলেন- কিছু যুবক তাকে মারধর করে তার স্ত্রীকে ধরে নিয়ে গেছে। এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় অভিযুক্তরা দ্রুত পালিয়ে যান। পরে মেয়েটাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেনের কাছে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমরা আত্মীয় বাড়িতে যাওয়া পথে কয়েকজন যুবক আমাদের পথ আটকায়। আমাদের জিজ্ঞেস করে, তোরা স্বামী-স্ত্রী কিনা। আমরা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী দাবি করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে ব্যাপক মারধর করে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাকে ভুট্টাখেতে নিয়ে ধর্ষণ করে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী ৩ মাসের গর্ভবতী ছিল। ধর্ষণে আমাদের গর্ভের সন্তানটা পর্যন্ত মরে গেছে; আমি আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ এবং আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে পাবনা সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর সার্কেল) রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি অতিদ্রুতই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে।