ঢাকা ০২:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারের সময় শেষ : মির্জা ফখরুল

নওরোজ রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৪:২২:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩
  • / ৬৬ Time View

সেন্টমার্টিন বিক্রি করে কেউ ক্ষমতায় যেতে পারবে না-এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ এই দেশের মাটি। দেশের সার্বভৌমত্ব কারও বাবার না। এই দেশের মানুষ সেটা রক্ষা করবে।

সোমবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব এক সমাবেশে এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, নিজেদের দুর্নীতি হালাল করতে সবকিছুর দাম বাড়াচ্ছে সরকার। ক্ষমতায় চিরদিন টিকে থাকতে নীলনকশা শুরু করেছে।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, কথা খুব পরিষ্কার-অবিলম্বে পদত্যাগ করেন এবং সংসদ বিলুপ্ত করেন। তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যে নামেই বলেন না কেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের হাতে ক্ষমতা দেন, তারা নতুন নির্বাচন কমিশন করে নির্বাচন করবে। এটাই একমাত্র পথ, আর কোনো পথ নেই। না হলে পালানোরও পথ খুঁজে পাবেন না। কারণ, এর আগে বলেছি, সময় আর নেই, সময় শেষ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ নির্বাচন চায়। আর সেই নির্বাচনে ভোট দিতে চায়। সেই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। কারণ প্রমাণিত হয়ে গেছে, এই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার থাকলে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই- আপনি আসুন, দেখুন, এই সাধারণ শ্রমিক, কৃষকরা কী বলেন। আর শুধু কাঁচা মরিচ না বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানিসহ সবকিছুর দাম আপনারা বাড়িয়ে যাচ্ছেন।

প্রধামন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বলছি- আপনাকে আর প্রয়োজন নাই। গত ১৪-১৫ বছর ধরে আপনার এই দল এদেশকে যেভাবে শাসন করছে- যেভাবে বাংলাদেশের সম্পদকে লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন, যেভাবে রাজনৈতিক কর্মীদেরকে হত্যা করেছেন, যেভাবে মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখেছেন, তাতে কি আন্দোলন ঠেকানো যাচ্ছে?

সরকার পতনের চলমান আন্দোলনে ‘জনগণকে সম্পৃক্ত করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি মহাসচিব।

নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সভাপতি খালিদ হোসেন জ্যাকীসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ মিছিল হয়।

এতে ছাত্রদল ছাড়াও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধা এবং লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ বক্তব্য দেন। পরে নয়াপল্টন থেকে একটি মিছিল বের হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর মোড় ঘুরে আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, অতীতে নির্বাচনের আগে যে কাজ করেছিল, আজ তারা একই কাজ শুরু করেছে। ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক করেছে, এখনো তিনি আটকাবস্থায় আছেন। সেদিনও গায়েবি মামলা দিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে বন্দি করেছিল। আজ আবার অনেক আগে থেকেই নির্বাচনের কাজ শুরু করেছে, নৌকায় ভোট চাইছেন। এখন বাংলাদেশের মানুষ বলছে, আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। এই ভাঙা নৌকায় মানুষ আর উঠবে না।

তিনি বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতা নেওয়ার জন্য নয়, দেশের মানুষ তার অধিকার ফিরে পেতে চায়। সেই অধিকারটা হচ্ছে-ভোটের অধিকার, বাঁচার অধিকার, কথা বলার অধিকার, মানুষের সংগঠন করার অধিকার, এক হাজার টাকার কাঁচামরিচ একশ টাকায় খাওয়ার অধিকার। কাঁচামরিচের কেজি হাজার টাকায় উঠেছে। কাঁচামরিচের ঝাঁজ আর এখন সহ্য করতে পারছেন না। শুধু কাঁচামরিচ নয়, চাল-ডাল-তেল-লবণ প্রতিটি জিনিসের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। বিদেশে টাকা পাচার করতে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার এখন ভয়ে সারা দেশে পুলিশের এসপি, ডিআইজি এবং ডিসিকে বদলি করছে, তবে যতই বদলি করেন না কেন, পতনের সময় কোনো লোক কাছে পাবেন না। আস্তে আস্তে সব সরে যাবে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এবার ভয় পাইছে, ভালোই ভয় পাইছে, আমেরিকা থেকে এসে ভয় পেয়ে গেছে। তাই এখন আবোলতাবোল বকছে, দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকিমূলক কথা বলছে। আমেরিকা থেকে এসে বলে, তারা আমাকে দুই দিনেই ক্ষমতায় থেকে সরিয়ে দিতে পারে। আবার বলে, সেন্টমার্টিন দিলে নাকি ক্ষমতায় থাকতে পারবে। আপনাকে (শেখ হাসিনা) এখন আর প্রয়োজন নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

সরকারের সময় শেষ : মির্জা ফখরুল

Update Time : ০৪:২২:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩

সেন্টমার্টিন বিক্রি করে কেউ ক্ষমতায় যেতে পারবে না-এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ এই দেশের মাটি। দেশের সার্বভৌমত্ব কারও বাবার না। এই দেশের মানুষ সেটা রক্ষা করবে।

সোমবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব এক সমাবেশে এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, নিজেদের দুর্নীতি হালাল করতে সবকিছুর দাম বাড়াচ্ছে সরকার। ক্ষমতায় চিরদিন টিকে থাকতে নীলনকশা শুরু করেছে।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, কথা খুব পরিষ্কার-অবিলম্বে পদত্যাগ করেন এবং সংসদ বিলুপ্ত করেন। তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যে নামেই বলেন না কেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের হাতে ক্ষমতা দেন, তারা নতুন নির্বাচন কমিশন করে নির্বাচন করবে। এটাই একমাত্র পথ, আর কোনো পথ নেই। না হলে পালানোরও পথ খুঁজে পাবেন না। কারণ, এর আগে বলেছি, সময় আর নেই, সময় শেষ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ নির্বাচন চায়। আর সেই নির্বাচনে ভোট দিতে চায়। সেই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। কারণ প্রমাণিত হয়ে গেছে, এই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার থাকলে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই- আপনি আসুন, দেখুন, এই সাধারণ শ্রমিক, কৃষকরা কী বলেন। আর শুধু কাঁচা মরিচ না বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানিসহ সবকিছুর দাম আপনারা বাড়িয়ে যাচ্ছেন।

প্রধামন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বলছি- আপনাকে আর প্রয়োজন নাই। গত ১৪-১৫ বছর ধরে আপনার এই দল এদেশকে যেভাবে শাসন করছে- যেভাবে বাংলাদেশের সম্পদকে লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন, যেভাবে রাজনৈতিক কর্মীদেরকে হত্যা করেছেন, যেভাবে মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখেছেন, তাতে কি আন্দোলন ঠেকানো যাচ্ছে?

সরকার পতনের চলমান আন্দোলনে ‘জনগণকে সম্পৃক্ত করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি মহাসচিব।

নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সভাপতি খালিদ হোসেন জ্যাকীসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ মিছিল হয়।

এতে ছাত্রদল ছাড়াও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধা এবং লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ বক্তব্য দেন। পরে নয়াপল্টন থেকে একটি মিছিল বের হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর মোড় ঘুরে আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, অতীতে নির্বাচনের আগে যে কাজ করেছিল, আজ তারা একই কাজ শুরু করেছে। ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক করেছে, এখনো তিনি আটকাবস্থায় আছেন। সেদিনও গায়েবি মামলা দিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে বন্দি করেছিল। আজ আবার অনেক আগে থেকেই নির্বাচনের কাজ শুরু করেছে, নৌকায় ভোট চাইছেন। এখন বাংলাদেশের মানুষ বলছে, আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। এই ভাঙা নৌকায় মানুষ আর উঠবে না।

তিনি বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতা নেওয়ার জন্য নয়, দেশের মানুষ তার অধিকার ফিরে পেতে চায়। সেই অধিকারটা হচ্ছে-ভোটের অধিকার, বাঁচার অধিকার, কথা বলার অধিকার, মানুষের সংগঠন করার অধিকার, এক হাজার টাকার কাঁচামরিচ একশ টাকায় খাওয়ার অধিকার। কাঁচামরিচের কেজি হাজার টাকায় উঠেছে। কাঁচামরিচের ঝাঁজ আর এখন সহ্য করতে পারছেন না। শুধু কাঁচামরিচ নয়, চাল-ডাল-তেল-লবণ প্রতিটি জিনিসের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। বিদেশে টাকা পাচার করতে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার এখন ভয়ে সারা দেশে পুলিশের এসপি, ডিআইজি এবং ডিসিকে বদলি করছে, তবে যতই বদলি করেন না কেন, পতনের সময় কোনো লোক কাছে পাবেন না। আস্তে আস্তে সব সরে যাবে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এবার ভয় পাইছে, ভালোই ভয় পাইছে, আমেরিকা থেকে এসে ভয় পেয়ে গেছে। তাই এখন আবোলতাবোল বকছে, দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকিমূলক কথা বলছে। আমেরিকা থেকে এসে বলে, তারা আমাকে দুই দিনেই ক্ষমতায় থেকে সরিয়ে দিতে পারে। আবার বলে, সেন্টমার্টিন দিলে নাকি ক্ষমতায় থাকতে পারবে। আপনাকে (শেখ হাসিনা) এখন আর প্রয়োজন নেই।