ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রান্না নিয়ে বউ-শাশুড়ী ঝগড়ার কারণে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যা

Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৪০:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩
  • / ৯৮ Time View

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো: রংপুরের তারাগঞ্জে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূর স্বামী হাশমত আলী ও শ্বাশুড়ি জরিনা বেগমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যার মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ মার্চ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কাঠগাড়ি গ্রামের আলম মিয়ার মেয়ে আমেনা বেগমের (২৫) সঙ্গে বিয়ে হয় তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের খিয়ারচড়া গ্রামেে হাসান আলীর ছেলে হাশমত আলীর (৩০)। বিয়ের পর তাদের সংসারে মেয়ে হাসফি খাতুন (৪) ও ছেলে আরমান হোসেন (৩) জন্ম হয়। আমেনা বেগম চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাই কাজ কাম একটু ধীরে করেন। গত ৫ মে সকাল ৭ টার দিকে রান্নার কাজ নিয়ে আমেনার সঙ্গে শ্বশুড়ি জরিনা বেগমের ঝগড়া হয়।

ওই দিন রাত ৯ টার দিকে আমেনার স্বামী হাশমত আলী বাড়িতে এসে তাঁর মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার কারণে আমেনাকে লাঠি দিয়ে মারপিট করেন। এ সময় শ্বাশুড়ি জরিনা বেগম, দেবর জুয়েল রানা, সোহেল রানাও কিল ঘুষি ও পেটে লাথি মারেন। এতে আমেনা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থা স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে সে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। পরদিন ৬ মে সকাল আমেনার পেটে ব্যথা ও ব্লাডিং শুরু হলে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থা সংকটাপন্ন দেখলে চিকিৎসকেরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) পাঠান। ৮ মে দিবাগত রাত ২ দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমেনা রমেক হাসপাতালেন মারা যান।

এ ঘটনায় ৯ মে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহত গৃহবধূর মা ছামিতন বেগম বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় হাশমত আলী, জরিনা বেগম (৪৭), জুয়েল রানা, সোহেল রানাসহ পাঁচনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত আমেনা ভাই আবু সাঈদ বলেন, বিয়ের পর আমার বোনকে প্রায় নির্যাতন করত শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কারণে অকারণে মারপিট করত। গত শুক্রবার বিনা কারণে আমার বোনকে হাশমত আলী ও তার মা ভাইয়েরা পিটিয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় আমার বোন দুই শিশুকে এতিম করে না ফেরার দেশে চলে গেছে। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় আমেনার মা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেছেন। আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

রান্না নিয়ে বউ-শাশুড়ী ঝগড়ার কারণে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যা

Update Time : ০৭:৪০:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো: রংপুরের তারাগঞ্জে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূর স্বামী হাশমত আলী ও শ্বাশুড়ি জরিনা বেগমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যার মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ মার্চ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কাঠগাড়ি গ্রামের আলম মিয়ার মেয়ে আমেনা বেগমের (২৫) সঙ্গে বিয়ে হয় তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের খিয়ারচড়া গ্রামেে হাসান আলীর ছেলে হাশমত আলীর (৩০)। বিয়ের পর তাদের সংসারে মেয়ে হাসফি খাতুন (৪) ও ছেলে আরমান হোসেন (৩) জন্ম হয়। আমেনা বেগম চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাই কাজ কাম একটু ধীরে করেন। গত ৫ মে সকাল ৭ টার দিকে রান্নার কাজ নিয়ে আমেনার সঙ্গে শ্বশুড়ি জরিনা বেগমের ঝগড়া হয়।

ওই দিন রাত ৯ টার দিকে আমেনার স্বামী হাশমত আলী বাড়িতে এসে তাঁর মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার কারণে আমেনাকে লাঠি দিয়ে মারপিট করেন। এ সময় শ্বাশুড়ি জরিনা বেগম, দেবর জুয়েল রানা, সোহেল রানাও কিল ঘুষি ও পেটে লাথি মারেন। এতে আমেনা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থা স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে সে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। পরদিন ৬ মে সকাল আমেনার পেটে ব্যথা ও ব্লাডিং শুরু হলে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থা সংকটাপন্ন দেখলে চিকিৎসকেরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) পাঠান। ৮ মে দিবাগত রাত ২ দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমেনা রমেক হাসপাতালেন মারা যান।

এ ঘটনায় ৯ মে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহত গৃহবধূর মা ছামিতন বেগম বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় হাশমত আলী, জরিনা বেগম (৪৭), জুয়েল রানা, সোহেল রানাসহ পাঁচনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত আমেনা ভাই আবু সাঈদ বলেন, বিয়ের পর আমার বোনকে প্রায় নির্যাতন করত শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কারণে অকারণে মারপিট করত। গত শুক্রবার বিনা কারণে আমার বোনকে হাশমত আলী ও তার মা ভাইয়েরা পিটিয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় আমার বোন দুই শিশুকে এতিম করে না ফেরার দেশে চলে গেছে। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় আমেনার মা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেছেন। আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।