ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুনিয়াকে ধর্ষণ-হত্যা: অব্যাহতি পেলেন বসুন্ধরার এমডিসহ ৮ জন

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:২৪:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪
  • / ৫৪ Time View

কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জন।

বুধবার (২০ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলীর আদালত বাদীপক্ষের নারাজির আবেদন নাকচ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমলে গ্রহন করে এ আদেশ দেন।

অব্যাহতি পাওয়া অপর আসামিরা হলেন-আনভীরের বাবা আহমেদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা সোবহান, স্ত্রী সাবরিনা, শারমিন, সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এবং ইব্রাহিম আহমেদ রিপন। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, মোসারাত জাহান (মুনিয়া) রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যার পর গুলশান-২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় রাতেই মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে একমাত্র আসামি করা হয়। আনভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটি দায়ের করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। আদালত গুলশান থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০২২ সালে বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনকে অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। পরে এ প্রতিবেদনে নারাজি দাখিল করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান।

গত ১০ মার্চ নারাজির বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন (২০ মার্চ) ধার্য করেন। পরে আদালত এ আদেশ দিলেন।

অন্যদিকে বাদীর নারাজি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী বলেন, ‘এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে যাব।’

মামলার বাদী নুসরাত জাহানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারবার ফোন দেওয়ার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

গত বছর ১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে নারাজি আবেদন দাখিল করেছিলেন বাদী। এক বছরেরও বেশি সময় পর নারাজি আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি। পরে আদেশের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল গুলশানে নিজের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ২১ বছর বয়সী মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। তাঁর বড় বোন নুসরাত জাহান কুমিল্লা থেকে এসে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।

ওই বছরের ১৯ জুলাই সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে তিনি আনভীরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন।

এরপর ওই বছরের ১৮ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী থানা পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আনভীরকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

এরপর নুসরাত একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেন।

এই মামলায় আনভীরের সঙ্গে তাঁর বাবা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, আনভীরের মা আফরোজা সোবহান, স্ত্রী সাবরিনা সায়েম, মডেল সাইফা রহমান মিম, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও ইব্রাহিম আহমেদ রিপনকে আসামি করা হয়।

ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন। তাতে বলা হয়, আনভীরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তদন্ত কর্মকর্তা আনভীরসহ অন্যদের মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

মুনিয়াকে ধর্ষণ-হত্যা: অব্যাহতি পেলেন বসুন্ধরার এমডিসহ ৮ জন

Update Time : ০৭:২৪:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জন।

বুধবার (২০ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলীর আদালত বাদীপক্ষের নারাজির আবেদন নাকচ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমলে গ্রহন করে এ আদেশ দেন।

অব্যাহতি পাওয়া অপর আসামিরা হলেন-আনভীরের বাবা আহমেদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা সোবহান, স্ত্রী সাবরিনা, শারমিন, সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এবং ইব্রাহিম আহমেদ রিপন। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, মোসারাত জাহান (মুনিয়া) রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যার পর গুলশান-২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় রাতেই মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে একমাত্র আসামি করা হয়। আনভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটি দায়ের করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। আদালত গুলশান থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০২২ সালে বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনকে অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। পরে এ প্রতিবেদনে নারাজি দাখিল করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান।

গত ১০ মার্চ নারাজির বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন (২০ মার্চ) ধার্য করেন। পরে আদালত এ আদেশ দিলেন।

অন্যদিকে বাদীর নারাজি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী বলেন, ‘এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে যাব।’

মামলার বাদী নুসরাত জাহানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারবার ফোন দেওয়ার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

গত বছর ১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে নারাজি আবেদন দাখিল করেছিলেন বাদী। এক বছরেরও বেশি সময় পর নারাজি আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি। পরে আদেশের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল গুলশানে নিজের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ২১ বছর বয়সী মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। তাঁর বড় বোন নুসরাত জাহান কুমিল্লা থেকে এসে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।

ওই বছরের ১৯ জুলাই সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে তিনি আনভীরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন।

এরপর ওই বছরের ১৮ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী থানা পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আনভীরকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

এরপর নুসরাত একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেন।

এই মামলায় আনভীরের সঙ্গে তাঁর বাবা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, আনভীরের মা আফরোজা সোবহান, স্ত্রী সাবরিনা সায়েম, মডেল সাইফা রহমান মিম, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও ইব্রাহিম আহমেদ রিপনকে আসামি করা হয়।

ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন। তাতে বলা হয়, আনভীরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তদন্ত কর্মকর্তা আনভীরসহ অন্যদের মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন।