ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত কুষ্টিয়া দৌলতপুরে সাংবাদিকের উপর হামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামী গ্রেফতার তীব্র দাবদাহের জন্য ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা আছে: ইসি আনিছুর রহমান রাশিয়ার বিরুদ্ধে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে ইউক্রেন দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ছাড়িয়ে বিএনপি যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের কুষ্টিয়ায় ফেন্সিডিল তৈরির সময় ফেন্সিডিল সহ আটক ২ অস্ত্র মামলায় গোল্ডেন মনির খালাস তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণ-নির্যাতনে গ্রেপ্তার যুবক কারাগারে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

ভোট নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৭:২৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৯ Time View

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে হওয়ায় ভোট নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ দাবি করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারও নির্বাচিত করায় দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র নয়, সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল। তারা নির্বাচন প্রতিহতের চেষ্টা করেছে। ভোট বর্জনের জন্য লিফলেট বিতরণ করলেও সরকার কোনো বাধা দেয়নি৷ ভোট ঠেকাতে হরতাল-অবরোধ করেছে৷ কিন্তু জনগণ তাদের ডাকে সাড়া না দিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের মতো ভোট দিয়েছে৷ তাই এবারের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে কেউ বলতে পারবে না যে, রাতে ভোট দিয়েছে, দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, কারচুপি হয়েছে। তা বলার ক্ষমতা কারও নেই।’

‘অত্যন্ত স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন এইবার অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন আইন করে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই নির্বাচন কমিশনকে আমরা নির্বাচন পরিচালনা করতে দিয়েছি। কোনো রকম হস্তক্ষেপ আমরা করিনি, সহযোগিতা করেছি।’

টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন থেকে শুরু করে সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত, যেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। আমরা কখনো হস্তক্ষেপ করিনি।’

‘আমি ধন্যবাদ জানাই, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীসহ যারা নির্বাচন কমিশনকে সর্বোত সহযোগিতা করেছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে। তাদের সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘অনেকেরই অনেক রকম স্বপ্ন আছে, অনেকেই নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট দিতে না আসে, সেটা ঠেকাতে চেয়েছিল। তারপরও ৪১.৮ ভাগ ভোট পড়েছে সাধারণ নির্বাচনে। এটা সোজা কথা না, খুবই বড় কথা। আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সমমনা দল যখন নির্বাচন করেছে, আরেকটি দল তখন নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারছে বলেই বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, এই অগ্রযাত্রা আর কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। আপনাদের এই মিটিং থেকে সরাসরি বঙ্গভবনে যাবো, মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আমার চিঠি হস্তান্তর করব এবং এর পর আমরা সরকার গঠন করব।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করেছিল বলেও জনসভায় অভিযোগ করেছেন দলটির সভাপতি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবৈধভাবে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা বসেছে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে কিছু দল সৃষ্টি করে, আর কিছু এলিট শ্রেণি তৈরি করে। তার ওপর নির্ভর করে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার চেষ্টা করে। এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী, যদিও ১৯৭৫ সালের পরে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করে। বেশিরভাগ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করানো হয়। তারা মুক্তি পেয়ে দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করেন।’

‘১৯৮১ সালে আমাকে দলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন। আমি ফিরে আসি এমন একটি দেশে, যেখানে আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের বিচার করবে না বলে ইনডেমনিটি জারি করে, তাদেরকে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের চাকরি দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের যে দোসর— আল বদর ও রাজাকারের সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে লুটপাট করেছিল। আমাদের দেশে মা-বোনদেরকে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে তুলে দিয়েছিল, ক্যাম্পে নিয়ে মাসের পর মাস নির্যাতন করেছিল। সেই সমস্ত যুদ্ধাপরাধী, তাদের বিচার শুরু জাতির পিতা করেছিলেন, ১৫ আগস্ট এর পর যারা ক্ষমতা আছে, তারা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে মন্ত্রী বানায়, প্রধানমন্ত্রী বানায়, তাদেরকে ক্ষমতা বসায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে খুনি, আরেকদিকে যুদ্ধাপরাধী, তারাই ক্ষমতায়। সেই অবস্থায় আমি ফিরে আসি। জনগণের ভোট ও ভাত নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে ফিরে আসি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এ দেশে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কী কী কাজ করা দরকার, একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশকে কীভাবে তিনি (বঙ্গবন্ধু) গড়ে তুলবেন, সে ভাষণ এ জায়গায় দিয়েছিলেন। এই ভাষণ যখন শুনি, আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই। দীর্ঘ ৯ মাস কারাগারে বন্দি, সে মিলওয়ালা জেল, শীতের সময় বরফ, গরমের সময় গরম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে কিভাবে রেখেছিল তারা, সঠিকভাবে খাবারও দিত না। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, কোনো পত্রিকা-কাগজ কিছুই ছিল না। তার বিরুদ্ধে মামলা এবং ফাঁসির হুকুম। সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে, লন্ডন থেকে বাংলাদেশের মাটিতে যখন নামেন, তিনি ছুটে এসেছিলেন বাংলার জনগণের সামনে।’

‘১০ জানুয়ারি এখানেই তিনি ভাষণ দেন। সেই ভাষণে একটি দেশের ভবিষ্যত, উন্নয়ন, সব পরিকল্পনা, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চিন্তা, মহান মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ, সেটাই তিনি তুলে ধরেছিলেন।’

জাতির ভাগ্য গড়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনটা উৎসর্গ করেছিলেন, জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কোনো কিছু ছিল না। থাকার ঘর নেই, বাড়ি নেই, তাদের ভবিষ্যৎ নেই, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। সেই জাতির জন্য, তাদের ভাগ্য গড়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জীবন উৎসর্গ করেন। অনেক সংগ্রাম-ত্যাগের মধ্যে দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেন।’

দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশেরই কিছু মানুষ ভাবে অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসাই মনে হয় ভালো ছিল। অথচ গোটা বিশ্ব আজ বাংলাদেশের সুনাম করে৷

১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ এক কদমও এগোয়নি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাকে অকার্যকর করতেই ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটানো হয় ৷ এরপর বিকৃত ইতিহাস দিয়ে বিকৃত করা হয়েছে মানুষের মানসিকতাও ৷ আওয়ামী লীগ সরকারে না এলে এই দেশ এগোতে পারত না৷ এই দল ক্ষমতায় ফিরেছে বলেই অগ্রযাত্রা আর ব্যাহত হবে না৷

Please Share This Post in Your Social Media

ভোট নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই : প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০৭:২৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে হওয়ায় ভোট নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ দাবি করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারও নির্বাচিত করায় দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র নয়, সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল। তারা নির্বাচন প্রতিহতের চেষ্টা করেছে। ভোট বর্জনের জন্য লিফলেট বিতরণ করলেও সরকার কোনো বাধা দেয়নি৷ ভোট ঠেকাতে হরতাল-অবরোধ করেছে৷ কিন্তু জনগণ তাদের ডাকে সাড়া না দিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের মতো ভোট দিয়েছে৷ তাই এবারের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে কেউ বলতে পারবে না যে, রাতে ভোট দিয়েছে, দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, কারচুপি হয়েছে। তা বলার ক্ষমতা কারও নেই।’

‘অত্যন্ত স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন এইবার অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন আইন করে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই নির্বাচন কমিশনকে আমরা নির্বাচন পরিচালনা করতে দিয়েছি। কোনো রকম হস্তক্ষেপ আমরা করিনি, সহযোগিতা করেছি।’

টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন থেকে শুরু করে সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত, যেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। আমরা কখনো হস্তক্ষেপ করিনি।’

‘আমি ধন্যবাদ জানাই, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীসহ যারা নির্বাচন কমিশনকে সর্বোত সহযোগিতা করেছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে। তাদের সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘অনেকেরই অনেক রকম স্বপ্ন আছে, অনেকেই নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট দিতে না আসে, সেটা ঠেকাতে চেয়েছিল। তারপরও ৪১.৮ ভাগ ভোট পড়েছে সাধারণ নির্বাচনে। এটা সোজা কথা না, খুবই বড় কথা। আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সমমনা দল যখন নির্বাচন করেছে, আরেকটি দল তখন নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারছে বলেই বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, এই অগ্রযাত্রা আর কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। আপনাদের এই মিটিং থেকে সরাসরি বঙ্গভবনে যাবো, মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আমার চিঠি হস্তান্তর করব এবং এর পর আমরা সরকার গঠন করব।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করেছিল বলেও জনসভায় অভিযোগ করেছেন দলটির সভাপতি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবৈধভাবে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা বসেছে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে কিছু দল সৃষ্টি করে, আর কিছু এলিট শ্রেণি তৈরি করে। তার ওপর নির্ভর করে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার চেষ্টা করে। এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী, যদিও ১৯৭৫ সালের পরে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করে। বেশিরভাগ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করানো হয়। তারা মুক্তি পেয়ে দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করেন।’

‘১৯৮১ সালে আমাকে দলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন। আমি ফিরে আসি এমন একটি দেশে, যেখানে আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের বিচার করবে না বলে ইনডেমনিটি জারি করে, তাদেরকে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের চাকরি দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের যে দোসর— আল বদর ও রাজাকারের সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে লুটপাট করেছিল। আমাদের দেশে মা-বোনদেরকে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে তুলে দিয়েছিল, ক্যাম্পে নিয়ে মাসের পর মাস নির্যাতন করেছিল। সেই সমস্ত যুদ্ধাপরাধী, তাদের বিচার শুরু জাতির পিতা করেছিলেন, ১৫ আগস্ট এর পর যারা ক্ষমতা আছে, তারা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে মন্ত্রী বানায়, প্রধানমন্ত্রী বানায়, তাদেরকে ক্ষমতা বসায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে খুনি, আরেকদিকে যুদ্ধাপরাধী, তারাই ক্ষমতায়। সেই অবস্থায় আমি ফিরে আসি। জনগণের ভোট ও ভাত নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে ফিরে আসি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এ দেশে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কী কী কাজ করা দরকার, একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশকে কীভাবে তিনি (বঙ্গবন্ধু) গড়ে তুলবেন, সে ভাষণ এ জায়গায় দিয়েছিলেন। এই ভাষণ যখন শুনি, আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই। দীর্ঘ ৯ মাস কারাগারে বন্দি, সে মিলওয়ালা জেল, শীতের সময় বরফ, গরমের সময় গরম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে কিভাবে রেখেছিল তারা, সঠিকভাবে খাবারও দিত না। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, কোনো পত্রিকা-কাগজ কিছুই ছিল না। তার বিরুদ্ধে মামলা এবং ফাঁসির হুকুম। সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে, লন্ডন থেকে বাংলাদেশের মাটিতে যখন নামেন, তিনি ছুটে এসেছিলেন বাংলার জনগণের সামনে।’

‘১০ জানুয়ারি এখানেই তিনি ভাষণ দেন। সেই ভাষণে একটি দেশের ভবিষ্যত, উন্নয়ন, সব পরিকল্পনা, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চিন্তা, মহান মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ, সেটাই তিনি তুলে ধরেছিলেন।’

জাতির ভাগ্য গড়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনটা উৎসর্গ করেছিলেন, জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কোনো কিছু ছিল না। থাকার ঘর নেই, বাড়ি নেই, তাদের ভবিষ্যৎ নেই, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। সেই জাতির জন্য, তাদের ভাগ্য গড়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জীবন উৎসর্গ করেন। অনেক সংগ্রাম-ত্যাগের মধ্যে দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেন।’

দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশেরই কিছু মানুষ ভাবে অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসাই মনে হয় ভালো ছিল। অথচ গোটা বিশ্ব আজ বাংলাদেশের সুনাম করে৷

১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ এক কদমও এগোয়নি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাকে অকার্যকর করতেই ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটানো হয় ৷ এরপর বিকৃত ইতিহাস দিয়ে বিকৃত করা হয়েছে মানুষের মানসিকতাও ৷ আওয়ামী লীগ সরকারে না এলে এই দেশ এগোতে পারত না৷ এই দল ক্ষমতায় ফিরেছে বলেই অগ্রযাত্রা আর ব্যাহত হবে না৷