ঢাকা ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বে প্রথম মায়ের গর্ভেই শিশুর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করলেন চিকিৎসকরা

Reporter Name
  • Update Time : ১০:১৯:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩
  • / ১১০ Time View

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মায়ের গর্ভে অনাগত শিশুর মস্তিষ্কে জটিল অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকরা। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের এক হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল অনলাইন।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বোস্টন চিলড্রেন’স হসপিটাল এবং ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের ১০ জনের একটি দল জটিল অস্ত্রোপচারটি করেছেন। পুরো এই দলটি গর্ভ, শিশুর মাথার খুলি কেটে ফেলা এবং বিকাশমান মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করেছেন।

মায়ের গর্ভে শিশুটির বয়স যখন ৩০ মাস তখন তার মস্তিষ্কের রক্তনালিতে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম ‘ভেনাস অব গ্যালেন ম্যালফরমেশন’। মস্তিষ্ক থেকে যেসব রক্তনালি হৃৎপিণ্ডে রক্ত পৌঁছে দেয়, সেগুলো সঠিকভাবে গঠিত না হলে এই সমস্যা তৈরি হয়। এর ফলে রক্তনালি ও হৃৎপিণ্ডে চাপ পড়ে। মস্তিষ্কের ধমনীগুলি কৈশিকের পরিবর্তে সরাসরি শিরাগুলোতে রক্ত প্রবাহিত করে এবং এর ফলে বিপজ্জনকভাবে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এর ফলে একাধিক শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এই অবস্থা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের ১১ বছর বয়সে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ। প্রতি ৬০ হাজার শিশুর মধ্যে এক জনের বেলায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

বোস্টনের চিকিৎসকরা তাই জন্মের আগেই শিশুটির মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা ওই নারীর তলপেটে ছিদ্র করতে সুই ব্যবহার করেছিলেন। জরায়ুর যে স্থানটি কাটতে হবে সেটি চিহ্নিত করতে তারা আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করেন। শিশুর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর রক্ত প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ধমনীর কাছে একটি কয়েল বসান তারা।

অস্ত্রোপচারের দুদিন পরে ওই নারী সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন। গবেষকরা এই অস্ত্রোপচারের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) সাথে কাজ করছেন।

বোস্টন চিলড্রেন’স হাসপাতালের ডা. ড্যারেন অরবাচ বলেন, ‘এই পদ্ধতি ভেনাস অব গ্যালেন ম্যালফরমেশন চিকিৎসার একটি দৃষ্টান্ত। জন্মের পরে এটি বিপরীতমুখী করার পরিবর্তে আমরা জন্মের আগে অস্বাভাবিকতা (ঠিক) করেছি এবং হৃদরোগ হওয়ার আগেই তার চিকিৎসা করেছি। এটি এসব শিশুর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী মস্তিষ্কের ক্ষতি, অক্ষমতা বা মৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।’

Please Share This Post in Your Social Media

বিশ্বে প্রথম মায়ের গর্ভেই শিশুর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করলেন চিকিৎসকরা

Update Time : ১০:১৯:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মায়ের গর্ভে অনাগত শিশুর মস্তিষ্কে জটিল অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকরা। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের এক হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল অনলাইন।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বোস্টন চিলড্রেন’স হসপিটাল এবং ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের ১০ জনের একটি দল জটিল অস্ত্রোপচারটি করেছেন। পুরো এই দলটি গর্ভ, শিশুর মাথার খুলি কেটে ফেলা এবং বিকাশমান মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করেছেন।

মায়ের গর্ভে শিশুটির বয়স যখন ৩০ মাস তখন তার মস্তিষ্কের রক্তনালিতে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম ‘ভেনাস অব গ্যালেন ম্যালফরমেশন’। মস্তিষ্ক থেকে যেসব রক্তনালি হৃৎপিণ্ডে রক্ত পৌঁছে দেয়, সেগুলো সঠিকভাবে গঠিত না হলে এই সমস্যা তৈরি হয়। এর ফলে রক্তনালি ও হৃৎপিণ্ডে চাপ পড়ে। মস্তিষ্কের ধমনীগুলি কৈশিকের পরিবর্তে সরাসরি শিরাগুলোতে রক্ত প্রবাহিত করে এবং এর ফলে বিপজ্জনকভাবে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এর ফলে একাধিক শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এই অবস্থা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের ১১ বছর বয়সে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ। প্রতি ৬০ হাজার শিশুর মধ্যে এক জনের বেলায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

বোস্টনের চিকিৎসকরা তাই জন্মের আগেই শিশুটির মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা ওই নারীর তলপেটে ছিদ্র করতে সুই ব্যবহার করেছিলেন। জরায়ুর যে স্থানটি কাটতে হবে সেটি চিহ্নিত করতে তারা আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করেন। শিশুর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর রক্ত প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ধমনীর কাছে একটি কয়েল বসান তারা।

অস্ত্রোপচারের দুদিন পরে ওই নারী সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন। গবেষকরা এই অস্ত্রোপচারের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) সাথে কাজ করছেন।

বোস্টন চিলড্রেন’স হাসপাতালের ডা. ড্যারেন অরবাচ বলেন, ‘এই পদ্ধতি ভেনাস অব গ্যালেন ম্যালফরমেশন চিকিৎসার একটি দৃষ্টান্ত। জন্মের পরে এটি বিপরীতমুখী করার পরিবর্তে আমরা জন্মের আগে অস্বাভাবিকতা (ঠিক) করেছি এবং হৃদরোগ হওয়ার আগেই তার চিকিৎসা করেছি। এটি এসব শিশুর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী মস্তিষ্কের ক্ষতি, অক্ষমতা বা মৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।’