ঢাকা ০৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত কুষ্টিয়া দৌলতপুরে সাংবাদিকের উপর হামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামী গ্রেফতার তীব্র দাবদাহের জন্য ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা আছে: ইসি আনিছুর রহমান রাশিয়ার বিরুদ্ধে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে ইউক্রেন দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ছাড়িয়ে বিএনপি যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের কুষ্টিয়ায় ফেন্সিডিল তৈরির সময় ফেন্সিডিল সহ আটক ২ অস্ত্র মামলায় গোল্ডেন মনির খালাস তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণ-নির্যাতনে গ্রেপ্তার যুবক কারাগারে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৭ Time View

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। বাংলা একাডেমি আমাদের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির সত্তা জাগ্রত হয়। এই পথ বেয়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। এই অধিকারটাও আমাদের রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।

বই হাতে নিয়ে পড়ার আনন্দ আলাদা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও এখন আমাদের যুগ হয়ে গেছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগ। তবু বই প্রকাশ অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, হাতে নিয়ে বই পড়ার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ আছে। তবে আজকালকার ছেলে-মেয়েরা ট্যাবে বই পড়ে, আবার ল্যাপটপেও পড়ে।

এসময় নিজের স্কুল-কলেজ জীবনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বেশ আফসোস করে বলেন, এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বইমেলায় আসায় কোনো মজা নেই। কারণ, স্বাধীনতা নেই। ডানে তাকাব নিরাপত্তা, বাঁয়েও নিরাপত্তা, পেছনে গেলে নিরাপত্তা, সামনে নিরাপত্তা; এই নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে আসলে মনে পড়ে স্কুল জীবনের কথা, ছোটবেলার কথা। এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে সবকিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন সেই স্বাধীনতাটা নেই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতা পাব।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পর যখন জাতিসংঘ আমাদের স্বীকৃতি দিল, তিনি কিন্তু তখন সেখানে গিয়ে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। বাংলা ভাষায় ভাষণ অর্থাৎ বাংলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আমার বাবার পথ অনুসরণ করে এই পর্যন্ত যতবার ভাষণ দিয়েছি, বাংলায় ভাষণ দিয়েছি।

ভাষা-সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকাশকদের অনুরোধ করে বলব— শুধু কাগজে প্রকাশ করলে হবে না, ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল প্রকাশক হলে এটা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও পৌঁছাবে। মনমানসিকতা পরিবর্তন করে আধুনিক প্রযুক্তিও রপ্ত করতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে আমার এগিয়ে যাব।

অনুবাদ সাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, একসময় দাবি উঠেছিল— অনুবাদ করা যাবে না। কিন্তু আমি অনুবাদের পক্ষে। অনুবাদ যদি না হয় পৃথিবীর এত ভাষা আমরা কোথা থেকে জানব। একটা দেশকে, তার সংস্কৃতিকে জানতে হলে তার ভাষার মধ্য দিয়ে জানতে হবে।

এবারের মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। বরাবরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকছে মেলার আয়োজন।

মেলায় ৬৩৫ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০ প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫ প্রতিষ্ঠান।

বইমেলার সময়সূচি

এবারের বইমেলা অধিবর্ষের বইমেলা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবার বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।

Please Share This Post in Your Social Media

বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা : প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০৯:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। বাংলা একাডেমি আমাদের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির সত্তা জাগ্রত হয়। এই পথ বেয়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। এই অধিকারটাও আমাদের রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।

বই হাতে নিয়ে পড়ার আনন্দ আলাদা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও এখন আমাদের যুগ হয়ে গেছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগ। তবু বই প্রকাশ অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, হাতে নিয়ে বই পড়ার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ আছে। তবে আজকালকার ছেলে-মেয়েরা ট্যাবে বই পড়ে, আবার ল্যাপটপেও পড়ে।

এসময় নিজের স্কুল-কলেজ জীবনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বেশ আফসোস করে বলেন, এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বইমেলায় আসায় কোনো মজা নেই। কারণ, স্বাধীনতা নেই। ডানে তাকাব নিরাপত্তা, বাঁয়েও নিরাপত্তা, পেছনে গেলে নিরাপত্তা, সামনে নিরাপত্তা; এই নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে আসলে মনে পড়ে স্কুল জীবনের কথা, ছোটবেলার কথা। এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে সবকিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন সেই স্বাধীনতাটা নেই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতা পাব।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পর যখন জাতিসংঘ আমাদের স্বীকৃতি দিল, তিনি কিন্তু তখন সেখানে গিয়ে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। বাংলা ভাষায় ভাষণ অর্থাৎ বাংলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আমার বাবার পথ অনুসরণ করে এই পর্যন্ত যতবার ভাষণ দিয়েছি, বাংলায় ভাষণ দিয়েছি।

ভাষা-সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকাশকদের অনুরোধ করে বলব— শুধু কাগজে প্রকাশ করলে হবে না, ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল প্রকাশক হলে এটা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও পৌঁছাবে। মনমানসিকতা পরিবর্তন করে আধুনিক প্রযুক্তিও রপ্ত করতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে আমার এগিয়ে যাব।

অনুবাদ সাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, একসময় দাবি উঠেছিল— অনুবাদ করা যাবে না। কিন্তু আমি অনুবাদের পক্ষে। অনুবাদ যদি না হয় পৃথিবীর এত ভাষা আমরা কোথা থেকে জানব। একটা দেশকে, তার সংস্কৃতিকে জানতে হলে তার ভাষার মধ্য দিয়ে জানতে হবে।

এবারের মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। বরাবরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকছে মেলার আয়োজন।

মেলায় ৬৩৫ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০ প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫ প্রতিষ্ঠান।

বইমেলার সময়সূচি

এবারের বইমেলা অধিবর্ষের বইমেলা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবার বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।