ঢাকা ০৩:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তুরস্কে সাপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবর্তনের দাবি

নওরোজ ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : ০৯:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩
  • / ২০৩ Time View

মুসলিম জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তুরস্কে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি শনিবার ও রবিবার। এ নিয়ে দীর্ঘ ক্ষোভ রয়েছে দেশটির মুসলিমদের মধ্যে। সম্প্রতি সাপ্তাহিক ছুটি রবিবারের বদলে শুক্রবার করার দাবি উঠেছে।

কারণ এ দিন মুসলিমরা জুমার নামাজসহ বিভিন্ন ইসলামী আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন।এসব কাজে সবার অংশগ্রহণ সহজ করতেই এ দাবি তুলছেন তারা।

অতীতেও নানা সময়ে দেশটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবর্তনের দাবি উঠেছিল। সর্বশেষ গত শুক্রবার দেশটির ধর্মবিষয়ক প্রধান ড. আলি আরবাশ জুমার বক্তব্যে নামাজে সবার অংশগ্রহণ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেছেন, ‘আসুন, আমরা কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী বন্ধুদের জন্য জুমার নামাজে অংশ গ্রহণের সুযোগ তৈরি করি।

তা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আসুন, আমরা জুমার নামাজের আলোকে কর্মঘণ্টা ও স্কুলের ক্লাসের সময়সূচি তৈরি করি।’
এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার করার দাবি ওঠে। অবশ্য তুরস্কের বিরোধী দল পিপলস লিবারেশন পার্টি (ডিএইচকেপি) এ দাবির বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। তারা এটিকে রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতা লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করে।

১৯৩৫ সালের ২৭ এপ্রিল সরকারি ছুটি পরিবর্তনের একটি আইন করা হয়। এরপর থেকেই শুক্রবারের বদলে রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। মূলত বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ ও পশ্চিমা রীতি অনুকরণের অংশ হিসেবে তা করা হয়েছিল।

এদিকে শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটি করার বিপক্ষ অবস্থানকারীদের সমালোচনা করেছেন আয়া সোফিয়ার সাবেক ইমাম বুইয়ানুকালিন।

সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ তিনি লিখেছেন, ‘আশ্চর্যের বিষয় হলো, তারা এমন একটি দেশে বসবাস করে যেখানকার অধিকাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। অথচ সেখানে শুক্রবার নয়; বরং শনিবার ও রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন, যা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছে সম্মানিত দিন। অতএব তারা এই দাবির প্রতি ইতিবাচক না হলে ধর্মীয় বিষয়গুলো নিজস্ব গতিতে চলতে থাকবে।’
উলিফিয়া নামে একজন এক্স-এ লিখেছেন, ‘সম্মানিত প্রেসিডেন্ট, আপনি আয়া সোফিয়ার শেখ ভেঙেছেন। এখন সময় এসেছে শুক্রবারকে ছুটির দিন ঘোষণা করার।’

অপরদিকে তুরস্কের ফেডারেশন অব উইম্যানস এসোসিয়েশন সাপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবর্তন করার দাবির বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে। তুরস্কের ধর্মীয় অধিদপ্তর কর্তৃক জুমার নামাজের সময় অনুসারে কর্মঘণ্টা ও ক্লাসের রুটিন সাজানোর দাবিকে সংগঠনটি ‘ধর্মনিরপেক্ষতা পরিপন্থী অভিমত’ বলে আখ্যায়িত করে।

এদিকে দেশটির বিরোধী দল পিপলস লিবারেশন পার্টি (ডিএইচকেপি) ধর্ম বিষয়ক প্রধানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। তার বিরুদ্ধে সংবিধান অবমাননা ও পদের অপব্যবহারের অভিযোগ আনে দলটি। ডিএইচকেপি-এর আইনজীবী আয়েশা উকুর বলেছেন, ‘আমাদের দেশ ধীরে ধীরে ফ্যাসিবাদী মধ্যযুগীয় ধর্মতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একথা স্পষ্ট যে, প্রেসিডেন্সি অফ রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স কর্তৃক প্রকাশিত শুক্রবারের খুতবা সাধারণ মানুষের জীবনে ধর্মীয় হস্তক্ষেপের শামিল। পিপলস লিবারেশন পার্টি হিসেবে আমরা ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করে যাব।’

সূত্র : আল-জাজিরা মুবাশির

Please Share This Post in Your Social Media

তুরস্কে সাপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবর্তনের দাবি

Update Time : ০৯:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩

মুসলিম জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তুরস্কে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি শনিবার ও রবিবার। এ নিয়ে দীর্ঘ ক্ষোভ রয়েছে দেশটির মুসলিমদের মধ্যে। সম্প্রতি সাপ্তাহিক ছুটি রবিবারের বদলে শুক্রবার করার দাবি উঠেছে।

কারণ এ দিন মুসলিমরা জুমার নামাজসহ বিভিন্ন ইসলামী আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন।এসব কাজে সবার অংশগ্রহণ সহজ করতেই এ দাবি তুলছেন তারা।

অতীতেও নানা সময়ে দেশটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবর্তনের দাবি উঠেছিল। সর্বশেষ গত শুক্রবার দেশটির ধর্মবিষয়ক প্রধান ড. আলি আরবাশ জুমার বক্তব্যে নামাজে সবার অংশগ্রহণ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেছেন, ‘আসুন, আমরা কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী বন্ধুদের জন্য জুমার নামাজে অংশ গ্রহণের সুযোগ তৈরি করি।

তা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আসুন, আমরা জুমার নামাজের আলোকে কর্মঘণ্টা ও স্কুলের ক্লাসের সময়সূচি তৈরি করি।’
এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার করার দাবি ওঠে। অবশ্য তুরস্কের বিরোধী দল পিপলস লিবারেশন পার্টি (ডিএইচকেপি) এ দাবির বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। তারা এটিকে রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতা লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করে।

১৯৩৫ সালের ২৭ এপ্রিল সরকারি ছুটি পরিবর্তনের একটি আইন করা হয়। এরপর থেকেই শুক্রবারের বদলে রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। মূলত বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ ও পশ্চিমা রীতি অনুকরণের অংশ হিসেবে তা করা হয়েছিল।

এদিকে শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটি করার বিপক্ষ অবস্থানকারীদের সমালোচনা করেছেন আয়া সোফিয়ার সাবেক ইমাম বুইয়ানুকালিন।

সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ তিনি লিখেছেন, ‘আশ্চর্যের বিষয় হলো, তারা এমন একটি দেশে বসবাস করে যেখানকার অধিকাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। অথচ সেখানে শুক্রবার নয়; বরং শনিবার ও রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন, যা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছে সম্মানিত দিন। অতএব তারা এই দাবির প্রতি ইতিবাচক না হলে ধর্মীয় বিষয়গুলো নিজস্ব গতিতে চলতে থাকবে।’
উলিফিয়া নামে একজন এক্স-এ লিখেছেন, ‘সম্মানিত প্রেসিডেন্ট, আপনি আয়া সোফিয়ার শেখ ভেঙেছেন। এখন সময় এসেছে শুক্রবারকে ছুটির দিন ঘোষণা করার।’

অপরদিকে তুরস্কের ফেডারেশন অব উইম্যানস এসোসিয়েশন সাপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবর্তন করার দাবির বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে। তুরস্কের ধর্মীয় অধিদপ্তর কর্তৃক জুমার নামাজের সময় অনুসারে কর্মঘণ্টা ও ক্লাসের রুটিন সাজানোর দাবিকে সংগঠনটি ‘ধর্মনিরপেক্ষতা পরিপন্থী অভিমত’ বলে আখ্যায়িত করে।

এদিকে দেশটির বিরোধী দল পিপলস লিবারেশন পার্টি (ডিএইচকেপি) ধর্ম বিষয়ক প্রধানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। তার বিরুদ্ধে সংবিধান অবমাননা ও পদের অপব্যবহারের অভিযোগ আনে দলটি। ডিএইচকেপি-এর আইনজীবী আয়েশা উকুর বলেছেন, ‘আমাদের দেশ ধীরে ধীরে ফ্যাসিবাদী মধ্যযুগীয় ধর্মতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একথা স্পষ্ট যে, প্রেসিডেন্সি অফ রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স কর্তৃক প্রকাশিত শুক্রবারের খুতবা সাধারণ মানুষের জীবনে ধর্মীয় হস্তক্ষেপের শামিল। পিপলস লিবারেশন পার্টি হিসেবে আমরা ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করে যাব।’

সূত্র : আল-জাজিরা মুবাশির