ঢাকা ০৪:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢেলে সাজানো হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ০৯:০৯:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১০৮ Time View

বদলে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম। গতানুগতিক ধারা পরিবর্তন করে দক্ষতাভিত্তিক, কর্মমুখী এবং বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশের সঙ্গে মিল রেখে দ্রুত কর্মসংস্থানমুখী একটি কারিকুলাম তৈরি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।

অনার্স, মাস্টার্স এবং ডিগ্রি পর্যায় থেকে শুরু করে অধিভুক্ত সব স্তরের কারিকুলাম পরিমার্জন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

এরই মধ্যে সম্মান পর্যায়ের কারিকুলাম পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করতে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অনার্স পর্যায়ের ৩১টি বিষয়ের কারিকুলাম উন্নয়নে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩১টি স্বনামধন্য কলেজে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ শিক্ষকদের সমন্বয়ে টিম গঠন করে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ কর্মশালাগুলোর তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য টিম পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কলেজ শিক্ষকদের ক্লাসে পাঠদান অভিজ্ঞতা এবং কী ধরনের কারিকুলাম শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত হতে পারে, কীভাবে শিক্ষকরা যথোপযুক্তভাবে ক্লাসে পাঠদান করাতে পারে সে বিষয়ে সম্মক ধারণাজ্ঞান এবং তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি কলেজে দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করেছে কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, নতুন এ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নতুন কারিকুলামে পাঠদানের দীর্ঘদিনের যে আশা সেটি পূরণ হবে।

একই সঙ্গে একটি পৃথক লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এলএমএস) চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন,এ কারিকুলামে ইন্ডাস্ট্রি এবং অ্যাকাডেমিয়ার মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি কার্যকর করা সম্ভব হলে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এছাড়া কারিকুলাম উন্নয়নের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করে নতুন কারিকুলামের ভিত্তিতেই পৃথক এলএমএস ডেভেলপমেন্ট করে একটি সফটওয়্যার এবং এর কনটেন্ট তৈরি করা হবে। এতে প্রযুক্তিভিত্তিক এলএমএস তৈরি হবে।

শিক্ষার্থীরা তাদের ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠের রিসোর্সগুলো সহজেই পাবে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে লার্নিং ম্যানেজমেন্টে নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল এবং বিএনকিউএফ-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-নতুন সিলেবাস হবে প্রতিটি বিষয়ে কমপক্ষে ১৩২ ক্রেডিটের।

নতুন সিলেবাসে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস, ইংরেজি, আইসিটি, সফট স্কিল সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য করা হয়েছে। ২০টি শর্টকোর্স বাছাই করা হয়েছে, যা থেকে ২/১টি বিষয়ভিত্তিক অন্তর্ভুক্ত হবে।

এ লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষকদের মতামত নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্দিষ্ট একটি কলেজে ওই এলাকার একই বিষয়ে অনার্সে পাঠদানকারী ১০ জন অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছেন, যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক একজন শিক্ষক সমন্বয় করে থাকেন।

একেকটি কর্মশালা তদারকি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠানো হয়।

এদিকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী কলেজে ইসলামের ইতিহাস, রাজশাহী নিউ গভ কলেজে ব্যবস্থাপনা ও প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়ে কর্মশালা হয়েছে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

গত ২৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখ খুলনা ব্রজলাল (বিএল) কলেজে ইংরেজি এবং আজম খান কমার্স কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

এ দুটি বিষয়ে তদারকির দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার।

২৮ আগস্ট বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ইতিহাস, ময়মনসিংহে আনন্দ মোহন কলেজে উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ঢাকায় শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজে সমাজকর্ম বিষয়ে কর্মশালা হয়।

১০ সেপ্টেম্বর বগুড়া আজিজুল হক কলেজে অর্থনীতি এবং রংপুর কারমাইকেল কলেজে রসায়ন ও আরবি বিষয়ে কর্মশালা হয়।

১২ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে বাংলা, ১৩ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে গণিত, নোয়াখালী সরকারি কলেজে ইসলাম শিক্ষা, ঢাকার তেজগাঁও কলেজে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিষয়ে কর্মশালা হয়েছে।

তেজগাঁও কলেজে কর্মশালা তদারকিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ।

১৬ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজে মনোবিজ্ঞান, আলহাজ মকবুল হোসেন কলেজে ভূগোল বিষয়ে কর্মশালা হয়েছে। এসব কলেজে সরাসরি গিয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

ঢেলে সাজানো হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম

Update Time : ০৯:০৯:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বদলে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম। গতানুগতিক ধারা পরিবর্তন করে দক্ষতাভিত্তিক, কর্মমুখী এবং বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশের সঙ্গে মিল রেখে দ্রুত কর্মসংস্থানমুখী একটি কারিকুলাম তৈরি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।

অনার্স, মাস্টার্স এবং ডিগ্রি পর্যায় থেকে শুরু করে অধিভুক্ত সব স্তরের কারিকুলাম পরিমার্জন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

এরই মধ্যে সম্মান পর্যায়ের কারিকুলাম পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করতে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অনার্স পর্যায়ের ৩১টি বিষয়ের কারিকুলাম উন্নয়নে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩১টি স্বনামধন্য কলেজে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ শিক্ষকদের সমন্বয়ে টিম গঠন করে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ কর্মশালাগুলোর তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য টিম পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কলেজ শিক্ষকদের ক্লাসে পাঠদান অভিজ্ঞতা এবং কী ধরনের কারিকুলাম শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত হতে পারে, কীভাবে শিক্ষকরা যথোপযুক্তভাবে ক্লাসে পাঠদান করাতে পারে সে বিষয়ে সম্মক ধারণাজ্ঞান এবং তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি কলেজে দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করেছে কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, নতুন এ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নতুন কারিকুলামে পাঠদানের দীর্ঘদিনের যে আশা সেটি পূরণ হবে।

একই সঙ্গে একটি পৃথক লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এলএমএস) চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন,এ কারিকুলামে ইন্ডাস্ট্রি এবং অ্যাকাডেমিয়ার মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি কার্যকর করা সম্ভব হলে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এছাড়া কারিকুলাম উন্নয়নের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করে নতুন কারিকুলামের ভিত্তিতেই পৃথক এলএমএস ডেভেলপমেন্ট করে একটি সফটওয়্যার এবং এর কনটেন্ট তৈরি করা হবে। এতে প্রযুক্তিভিত্তিক এলএমএস তৈরি হবে।

শিক্ষার্থীরা তাদের ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠের রিসোর্সগুলো সহজেই পাবে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে লার্নিং ম্যানেজমেন্টে নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল এবং বিএনকিউএফ-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-নতুন সিলেবাস হবে প্রতিটি বিষয়ে কমপক্ষে ১৩২ ক্রেডিটের।

নতুন সিলেবাসে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস, ইংরেজি, আইসিটি, সফট স্কিল সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য করা হয়েছে। ২০টি শর্টকোর্স বাছাই করা হয়েছে, যা থেকে ২/১টি বিষয়ভিত্তিক অন্তর্ভুক্ত হবে।

এ লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষকদের মতামত নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্দিষ্ট একটি কলেজে ওই এলাকার একই বিষয়ে অনার্সে পাঠদানকারী ১০ জন অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছেন, যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক একজন শিক্ষক সমন্বয় করে থাকেন।

একেকটি কর্মশালা তদারকি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠানো হয়।

এদিকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী কলেজে ইসলামের ইতিহাস, রাজশাহী নিউ গভ কলেজে ব্যবস্থাপনা ও প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়ে কর্মশালা হয়েছে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

গত ২৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখ খুলনা ব্রজলাল (বিএল) কলেজে ইংরেজি এবং আজম খান কমার্স কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

এ দুটি বিষয়ে তদারকির দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার।

২৮ আগস্ট বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ইতিহাস, ময়মনসিংহে আনন্দ মোহন কলেজে উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ঢাকায় শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজে সমাজকর্ম বিষয়ে কর্মশালা হয়।

১০ সেপ্টেম্বর বগুড়া আজিজুল হক কলেজে অর্থনীতি এবং রংপুর কারমাইকেল কলেজে রসায়ন ও আরবি বিষয়ে কর্মশালা হয়।

১২ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে বাংলা, ১৩ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে গণিত, নোয়াখালী সরকারি কলেজে ইসলাম শিক্ষা, ঢাকার তেজগাঁও কলেজে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিষয়ে কর্মশালা হয়েছে।

তেজগাঁও কলেজে কর্মশালা তদারকিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ।

১৬ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজে মনোবিজ্ঞান, আলহাজ মকবুল হোসেন কলেজে ভূগোল বিষয়ে কর্মশালা হয়েছে। এসব কলেজে সরাসরি গিয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা হয়েছে।