ঢাকা ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সন্তানদের নতুন জামা পরিয়ে রাতে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরলেন না বাবা প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির ফলে দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মুল হয়েছেঃ সিলেটে আইজিপি বড় পরিসরে আর. কে. মিশন রোডে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন সৌদিতে প্রথমবারের মতো সুইমস্যুট পরে র‌্যাম্পে হাঁটলেন মডেলরা ‘আয়রনম্যান’ চরিত্রে ফিরতে ‘আপত্তি নেই’ রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য ভারত সরকার দায়ী : কর্নেল অলি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে শঙ্কা কাঠালিয়ায় ডাকাতের গুলিতে আহত ২ বিএনপি একটা জালিয়ত রাজনৈতিক দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেয়র তাপস মনগড়া ও অসত্য বক্তব্য দিচ্ছেন : সাঈদ খোকন

ঢাবিতে আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে মধ্যরাতে অবস্থান ছাত্রীদের, উপাচার্যের আশ্বাসে হলে ফেরা

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০২:৫৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৬ Time View

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে মধ্যরাতে উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান করেছেন ঐ আবাসিক শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্রীদের অবস্থানের খবর শুনে গভীর রাতে বাসা থেকে নেমে এসে উপাচার্য ৭ দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিলে রাত পৌনে ২টার দিকে হলে ফিরে যান তারা।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৮টায় মাস্টার্সের মেয়েদের ডাবলিং করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ, রিডিংরুমের বিকল্প ব্যবস্থা না করে মনোয়ারা ভবন ভাঙার প্রতিবাদ সহ হলের নানা সংকট সমাধানের দাবিতে হল অফিসের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রীরা। তাঁরা হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।

কিন্তু শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও হল কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাই হল প্রশাসনের কাছ থেকে দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস বা সাড়া না পেয়ে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের দিকে আসতে চাইলে মূল ফটকে তালা দেয় প্রক্টরিয়াল টিম। এরপর মেয়েরা তালা ভেঙে মিছিল নিয়ে উপাচার্য ভবনের সামনে এসে জড়ো হয়।

শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির কথা শুনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বাসা থেকে নেমে এসে শিক্ষার্থীদের কথা শুনেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের সকল সমস্যার কথা উপাচার্যের সামনে তুলে ধরেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আবাসন সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তারা হলে নতুন শিক্ষার্থী বরাদ্দ কমানো ও চলতি শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। গত বছরের ১৪ আগস্ট রাতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তৎকালীন উপাচার্য তাদের দাবি মেনে কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটি বাস্তবায়ন করেনি। এদিকে ভূমিকম্পে হলের একটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলে সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের অন্যত্র না সরিয়ে হলের মূল ভবনের ৪ জনের কক্ষে যেখানে ৬ জন থাকতো তা বাড়িয়ে ৭ জন থেকে ৮ জনকে উঠিয়ে দেয় হল প্রশাসন। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া, হল প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারি আচরণ, দুর্ব্যবহারসহ নানান কারণে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে আন্দোলনে নামেন।

ছাত্রীরা আরও বলেন, হল প্রশাসনের কাছে আসনের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। আসন কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি অভিভাবককে ফোন করে বিচার দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। ছাত্রীরা বলেন, তাঁরা হলের সিট সংকটের সমাধান চান, হলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চান। তাঁদের সঙ্গে হল প্রশাসনের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে দাবি জানান।

ছাত্রীদের কথা শুনে উপাচার্য তাঁদের বলেন, শিগগিরই তিনি ছাত্রীদের প্রতিনিধি ও হল প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ডেকে কথা বলবেন। অভাব-অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিত সম্পদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো সমাধানটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন। ছাত্রীরা এর জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার দাবি করলে উপাচার্য এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ডেকে কথা বলার আশ্বাস দেন। তখন রাত পৌনে ২টার দিকে আন্দলোনকারী শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।

উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের হলে নানাবিধ সমস্যা আছে। হলটির বর্ধিত ভবনটি জরাজীর্ণ। এই হলে শিক্ষার্থীর ঘনত্বও বেশি।

এ বছর থেকে হলটিতে নতুন করে ছাত্রীদের সংযুক্তি দেওয়া বন্ধ রাখা হবে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ঘনত্ব কমলে ছাত্রীদের আর অভিযোগ থাকবে না। আর তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্রীরা যেসব দাবি তুলেছে, তার অনেকগুলো আমার কাছে ন্যায্য মনে হয়েছে। সেগুলো আমরা বসে সমাধান করব।

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাবিতে আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে মধ্যরাতে অবস্থান ছাত্রীদের, উপাচার্যের আশ্বাসে হলে ফেরা

Update Time : ০২:৫৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে মধ্যরাতে উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান করেছেন ঐ আবাসিক শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্রীদের অবস্থানের খবর শুনে গভীর রাতে বাসা থেকে নেমে এসে উপাচার্য ৭ দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিলে রাত পৌনে ২টার দিকে হলে ফিরে যান তারা।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৮টায় মাস্টার্সের মেয়েদের ডাবলিং করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ, রিডিংরুমের বিকল্প ব্যবস্থা না করে মনোয়ারা ভবন ভাঙার প্রতিবাদ সহ হলের নানা সংকট সমাধানের দাবিতে হল অফিসের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রীরা। তাঁরা হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।

কিন্তু শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও হল কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাই হল প্রশাসনের কাছ থেকে দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস বা সাড়া না পেয়ে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের দিকে আসতে চাইলে মূল ফটকে তালা দেয় প্রক্টরিয়াল টিম। এরপর মেয়েরা তালা ভেঙে মিছিল নিয়ে উপাচার্য ভবনের সামনে এসে জড়ো হয়।

শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির কথা শুনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বাসা থেকে নেমে এসে শিক্ষার্থীদের কথা শুনেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের সকল সমস্যার কথা উপাচার্যের সামনে তুলে ধরেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আবাসন সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তারা হলে নতুন শিক্ষার্থী বরাদ্দ কমানো ও চলতি শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। গত বছরের ১৪ আগস্ট রাতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তৎকালীন উপাচার্য তাদের দাবি মেনে কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটি বাস্তবায়ন করেনি। এদিকে ভূমিকম্পে হলের একটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলে সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের অন্যত্র না সরিয়ে হলের মূল ভবনের ৪ জনের কক্ষে যেখানে ৬ জন থাকতো তা বাড়িয়ে ৭ জন থেকে ৮ জনকে উঠিয়ে দেয় হল প্রশাসন। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া, হল প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারি আচরণ, দুর্ব্যবহারসহ নানান কারণে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে আন্দোলনে নামেন।

ছাত্রীরা আরও বলেন, হল প্রশাসনের কাছে আসনের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। আসন কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি অভিভাবককে ফোন করে বিচার দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। ছাত্রীরা বলেন, তাঁরা হলের সিট সংকটের সমাধান চান, হলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চান। তাঁদের সঙ্গে হল প্রশাসনের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে দাবি জানান।

ছাত্রীদের কথা শুনে উপাচার্য তাঁদের বলেন, শিগগিরই তিনি ছাত্রীদের প্রতিনিধি ও হল প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ডেকে কথা বলবেন। অভাব-অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিত সম্পদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো সমাধানটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন। ছাত্রীরা এর জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার দাবি করলে উপাচার্য এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ডেকে কথা বলার আশ্বাস দেন। তখন রাত পৌনে ২টার দিকে আন্দলোনকারী শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।

উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের হলে নানাবিধ সমস্যা আছে। হলটির বর্ধিত ভবনটি জরাজীর্ণ। এই হলে শিক্ষার্থীর ঘনত্বও বেশি।

এ বছর থেকে হলটিতে নতুন করে ছাত্রীদের সংযুক্তি দেওয়া বন্ধ রাখা হবে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ঘনত্ব কমলে ছাত্রীদের আর অভিযোগ থাকবে না। আর তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্রীরা যেসব দাবি তুলেছে, তার অনেকগুলো আমার কাছে ন্যায্য মনে হয়েছে। সেগুলো আমরা বসে সমাধান করব।