ঢাকা ০৯:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

জবি ছাত্রলীগের মারামারি ঘটনায় দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি মামলা

মো: রাকিব হাসান, জবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৩:৫২:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৪ Time View

সরস্বতী পূজা চলা অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই গ্রুপের দফায় দফায় মারামারির ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে দুই গ্রুপের ১৬ জন নেতাকর্মীকে নাম উল্লেখ সহ ৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারির ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১ টার দিকে এ মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

এদিকে মামলা দুইটির মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবিদ ইশরাক নিলয় বাদী হয়ে মামলা করেন। তিনি মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের ৯ নেতাকর্মীকে আসামি করেন।

আসামিরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর মুকিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিব তালুকদার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জয় সরকার অর্জুন, নিরব, ব্যবস্থাপনা বিভাগের হৃদয় রানা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের আরাফাত, অপু সাহা, সাজিদ ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সোহান। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার গ্রুপের মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে সভাপতি গ্রুপের ৭ জনকে আসামি করে পাল্টাপাল্টি আরেক মামলা করেন। এ মামলার আসামিরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক মায়েল, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য পারিজাত বিশ্বাস, ছাত্রলীগের কর্মী নৃবিজ্ঞান বিভাগের গাজী শামসুল হুদা, রাহুল আমিন, রিয়াদ আফ্রিদি ও ইতিহাস বিভাগের চয়েন দাস।

এদিকে দুই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩ টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রথম মামলার বাদী আবিদসহ ৫/৬ জন সহপাঠী নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্টার কাবাব হোটেলে যাবার পথে বাংলাদেশ ব্যাংক সামনে আসামি মুকিত, আরাফাত, সোহান, জয়, অপু, নিরব,রাকিব, হৃদয়, সাজিদসহ ২০/২৫ জন পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারীভাবে লোহার রড, বাঁশের লাঠি, স্ট্রীলের পাইপ, হাতুরীসহ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে বাদী, তার বন্ধু ইসমাইল হোসেন তাফসির ও বড় ভাই বাতেন বিল্লাহ গুরুতর জখমসহ আহত হয়।

এ ঘটনার পরে বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটের দিকে ভিক্টোরিয়া পার্ক জামে মসজিদের সামনে আরেক মামলার বাদী মাহমুদুর রহমানসহ তার বন্ধুরা আড্ডা দেয়ার সময় আসামি গাজী শামসুল, চয়েন, পারিদাস, প্রান্ত, রাহুল, মায়েল রিয়াদসহ ২০/২৫ জন হামলা করে। এতে মাহমুদুরসহ কয়েকজন আহত হয়।

জানা যায়, এরআগে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এরআগে একাউন্টটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিবাদ বাঁধে।

এ ঘটনার সূত্রপাতে কয়েকদিন ধরেই ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপ ও সাধারণ সম্পাদক দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় হুমকি ধামকি ও ছোট বিবাদ করে আসছিল। পরবর্তীতে সরস্বতী পূজার দিনে এ বিবাদ বড় মারামারিতে রূপ নেয়। ক্যাম্পাসের ভিতর কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ধাওয়া পাল্টা দাওয়া হয়। ক্যান্টিনের ভিতরে লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি দেখা যায় দুই গ্রুপের। এতে পূজা চলা অবস্থায় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখনো পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেউ বহিস্কার হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

জবি ছাত্রলীগের মারামারি ঘটনায় দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি মামলা

Update Time : ০৩:৫২:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

সরস্বতী পূজা চলা অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই গ্রুপের দফায় দফায় মারামারির ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে দুই গ্রুপের ১৬ জন নেতাকর্মীকে নাম উল্লেখ সহ ৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারির ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১ টার দিকে এ মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

এদিকে মামলা দুইটির মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবিদ ইশরাক নিলয় বাদী হয়ে মামলা করেন। তিনি মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের ৯ নেতাকর্মীকে আসামি করেন।

আসামিরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর মুকিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিব তালুকদার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জয় সরকার অর্জুন, নিরব, ব্যবস্থাপনা বিভাগের হৃদয় রানা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের আরাফাত, অপু সাহা, সাজিদ ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সোহান। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার গ্রুপের মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে সভাপতি গ্রুপের ৭ জনকে আসামি করে পাল্টাপাল্টি আরেক মামলা করেন। এ মামলার আসামিরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক মায়েল, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য পারিজাত বিশ্বাস, ছাত্রলীগের কর্মী নৃবিজ্ঞান বিভাগের গাজী শামসুল হুদা, রাহুল আমিন, রিয়াদ আফ্রিদি ও ইতিহাস বিভাগের চয়েন দাস।

এদিকে দুই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩ টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রথম মামলার বাদী আবিদসহ ৫/৬ জন সহপাঠী নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্টার কাবাব হোটেলে যাবার পথে বাংলাদেশ ব্যাংক সামনে আসামি মুকিত, আরাফাত, সোহান, জয়, অপু, নিরব,রাকিব, হৃদয়, সাজিদসহ ২০/২৫ জন পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারীভাবে লোহার রড, বাঁশের লাঠি, স্ট্রীলের পাইপ, হাতুরীসহ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে বাদী, তার বন্ধু ইসমাইল হোসেন তাফসির ও বড় ভাই বাতেন বিল্লাহ গুরুতর জখমসহ আহত হয়।

এ ঘটনার পরে বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটের দিকে ভিক্টোরিয়া পার্ক জামে মসজিদের সামনে আরেক মামলার বাদী মাহমুদুর রহমানসহ তার বন্ধুরা আড্ডা দেয়ার সময় আসামি গাজী শামসুল, চয়েন, পারিদাস, প্রান্ত, রাহুল, মায়েল রিয়াদসহ ২০/২৫ জন হামলা করে। এতে মাহমুদুরসহ কয়েকজন আহত হয়।

জানা যায়, এরআগে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এরআগে একাউন্টটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিবাদ বাঁধে।

এ ঘটনার সূত্রপাতে কয়েকদিন ধরেই ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপ ও সাধারণ সম্পাদক দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় হুমকি ধামকি ও ছোট বিবাদ করে আসছিল। পরবর্তীতে সরস্বতী পূজার দিনে এ বিবাদ বড় মারামারিতে রূপ নেয়। ক্যাম্পাসের ভিতর কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ধাওয়া পাল্টা দাওয়া হয়। ক্যান্টিনের ভিতরে লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি দেখা যায় দুই গ্রুপের। এতে পূজা চলা অবস্থায় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখনো পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেউ বহিস্কার হয়নি।