ঢাকা ০৩:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মুখে চিকিৎসকদের ‘প্রশংসা’

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
  • Update Time : ০৮:৪৪:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪
  • / ১১০ Time View

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকদের গুণগত মান পৃথিবীর কোনো দেশের চেয়ে কম নয়। চিকিৎসকদের ঢালাওভাবে দোষ না দিয়ে, তাঁদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কাজ আদায় করে নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিকেল এডুকেশন কনফারেন্স রুমে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিভাগের সকল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষগণ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধানগণের সাথে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শিশির রঞ্জন চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে চিকিৎসকের সুরক্ষার তাগিদ দিয়েছেন উল্লেখ করে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন- সংসদ সদস্যরা যখন সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন এলাকায় চিকিৎসকরা থাকেন না- তখন তিনি পাল্টা প্রতিবাদ করে তাঁদের বলেন, চিকিৎসকেরা থাকবেন যদি আপনারা সাহায্য করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি করতে পারলে জাতিকে একটা ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

চিকিৎসক ও রোগী সবার সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবিনয় অনুরোধ- প্রত্যেকেই কর্মস্থলে সময়মত উপস্থিত থেকে ঠিকমত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করুন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাঁরা ঠিকমত কাজ করেন তাঁদেরকে প্রত্যেক ক্ষেত্রে একটা বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। কারণ প্রণোদনা না দিলে কেউ প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করতে আগ্রহী হবে না ।

সিলেটে দুদিনের সফরে রয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। বুধবার (৬ মার্চ) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে মন্ত্রী বিমানযোগে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছেন।

সিলেট সফরে এসে প্রথমে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যান মন্ত্রী। সেখানে গিয়ে তিনি বেশ অনিয়ম দেখতে পান। কমপ্লেক্স চত্বরে দৃষ্টিযোগ্য স্থানে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারের স্থান পরিবর্তন-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন টানানো ও হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

এসময় উপস্থিত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে এসবের ব্যাখ্যা চাইলে কেউ সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেন্টু পুরকায়স্থকে তার অফিসে না পাওয়ায় তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এসময় মন্ত্রী বলেন, একেকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেবা যারা দেবেন তারা যদি দায়িত্বশীল না হন তাহলে তো সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন না। সরকারি হাসপাতালে কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনা হলে সংশ্লিষ্ট কেউই ছাড় পাবেন না।

পরিদর্শন শেষে ডা. সামন্ত লাল সেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থা খুব একটি ভালো না। রয়েছে জনবল সংকট। ভবন সংস্কারও প্রয়োজন। সেখানে ডাক্তারসহ সকল কর্মরতদের সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী সকালে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।তখন তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডও বহিঃ বিভাগ ঘুরে দেখেন।

এ সময় তিন কথা বলেন সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে। এছাড়া হাসপাতালের নানা সংকট নিয়ে কর্মকতাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী এদিন একই ভেন্যুতে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট আয়োজিত একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মুখে চিকিৎসকদের ‘প্রশংসা’

Update Time : ০৮:৪৪:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকদের গুণগত মান পৃথিবীর কোনো দেশের চেয়ে কম নয়। চিকিৎসকদের ঢালাওভাবে দোষ না দিয়ে, তাঁদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কাজ আদায় করে নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিকেল এডুকেশন কনফারেন্স রুমে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিভাগের সকল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষগণ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধানগণের সাথে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শিশির রঞ্জন চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে চিকিৎসকের সুরক্ষার তাগিদ দিয়েছেন উল্লেখ করে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন- সংসদ সদস্যরা যখন সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন এলাকায় চিকিৎসকরা থাকেন না- তখন তিনি পাল্টা প্রতিবাদ করে তাঁদের বলেন, চিকিৎসকেরা থাকবেন যদি আপনারা সাহায্য করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি করতে পারলে জাতিকে একটা ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

চিকিৎসক ও রোগী সবার সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবিনয় অনুরোধ- প্রত্যেকেই কর্মস্থলে সময়মত উপস্থিত থেকে ঠিকমত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করুন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাঁরা ঠিকমত কাজ করেন তাঁদেরকে প্রত্যেক ক্ষেত্রে একটা বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। কারণ প্রণোদনা না দিলে কেউ প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করতে আগ্রহী হবে না ।

সিলেটে দুদিনের সফরে রয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। বুধবার (৬ মার্চ) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে মন্ত্রী বিমানযোগে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছেন।

সিলেট সফরে এসে প্রথমে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যান মন্ত্রী। সেখানে গিয়ে তিনি বেশ অনিয়ম দেখতে পান। কমপ্লেক্স চত্বরে দৃষ্টিযোগ্য স্থানে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারের স্থান পরিবর্তন-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন টানানো ও হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

এসময় উপস্থিত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে এসবের ব্যাখ্যা চাইলে কেউ সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেন্টু পুরকায়স্থকে তার অফিসে না পাওয়ায় তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এসময় মন্ত্রী বলেন, একেকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেবা যারা দেবেন তারা যদি দায়িত্বশীল না হন তাহলে তো সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন না। সরকারি হাসপাতালে কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনা হলে সংশ্লিষ্ট কেউই ছাড় পাবেন না।

পরিদর্শন শেষে ডা. সামন্ত লাল সেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থা খুব একটি ভালো না। রয়েছে জনবল সংকট। ভবন সংস্কারও প্রয়োজন। সেখানে ডাক্তারসহ সকল কর্মরতদের সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী সকালে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।তখন তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডও বহিঃ বিভাগ ঘুরে দেখেন।

এ সময় তিন কথা বলেন সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে। এছাড়া হাসপাতালের নানা সংকট নিয়ে কর্মকতাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী এদিন একই ভেন্যুতে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট আয়োজিত একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।