ঢাকা ০৪:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদযাত্রা সহজ করতে উন্মুক্ত বিআরটি প্রকল্পের ৭ ফ্লাইওভার

নওরোজ অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:২৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
  • / ৪১ Time View

বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) অংশের ৭টি ফ্লাইওভার আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।

ঈদকে সামনে রেখে এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ৭টি ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্তকরণ দেশবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার সচিবালয় থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে ফ্লাইওভারগুলো উন্মুক্ত করেন।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী আজ সকালে (রবিবার,২৪ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ৭টি ফ্লাইওভার ভার্চুয়ালি উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের একথা জানান।
তিনি বলেন, রোববার থেকেই এসব ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

এবারের ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী আরও জানান, আজ থেকে ৭টি ফ্লাইওভার-৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাম পার্শ্ব), ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান পার্শ্ব), ১৮০ মিটার জসীমউদ্দিন ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-১ গাজীপুরা ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-২ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার, ২৪০ মিটার ভোগড়া ফ্লাইওভার এবং গাজীপুরের চৌরাস্তায় ৫৬৮মিটার ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলো।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ঈদযাত্রাকে স্বস্তিদায়ক করতে একটি বৈঠক করেছি। সেখানে পরিবহন সেক্টর থেকে শুরু করে পুলিশের কর্মকর্তা সড়ক মহাসড়ক বিভাগসহ সকল অংশিজন উপস্থিত ছিলেন। সবাই বলেছেন, যার যার জায়গা থেকে তারা কাজ করবেন।

“ঈদের আগে পরে আমরা ট্রাক কভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রেখেছি, ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করার জন্য। গতবার ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে, এবারও আমরা আশা করছি ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।”

বিআরটি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “এ প্রকল্প নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে, যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। এটি বাস্তবায়নে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও দেরিতে হলেও কাজটি শেষ হওয়ার পথে।

“আশা করছি এ বছরই এটি দিয়ে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারব। আমাদের অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজও শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। আশা করছি, ডিসেম্বর নাগাদ বাকি কাজ শেষ হবে। বিআরটি করিডোর দিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে।”
২০১১ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বিআরটি প্রকল্পের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেক বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে।

এরপর কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রকল্পের সবশেষ ব্যয় দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।
শুরুতে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত। কিন্তু পরে সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হলেও পথ ছোট করে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করা হয়।

বিআরটি প্রকল্পের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বিআরটি বাস্তবায়িত হলে ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করবে। তাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট অনেকটাই কমে যাবে।

চীনের তিনটি এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানি এই প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে উড়াল সড়ক ও নিচের সড়ক নির্মাণের কাজ পেয়েছে চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশন (সিজিজিসি), জিয়াংশু প্রভিনশিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো–পারেটিভ। আর গাজীপুরে বিআরটির ডিপো নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে দেশীয় কোম্পানি সেল-ইউডিসি।

উল্লেখ্য, ৪ হাজার ২ শত ৬৮ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২০.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) প্রকল্পের আওতায় ৪.৫ কিলোমিটার এলিভেটেডসহ মোট ২০.৫০ কিলোমিটার বিআরটি করিডোর, ৮টি ফ্লাইওভার, ২৫টি বিআরটি স্টেশন, ১৫টি ফুটওভার ব্রীজ, ২৪.৪২ কিলোমিটার ড্রেন, ৩২ কিলোমিটার ফুটপাথ, গাজীপুরে ১টি বাস ডিপো নির্মাণ ও ৩৪ কিলোমিটার ফিডার সড়ক উন্নয়ন করা হচ্ছে।

এসময় ঢাকা প্রান্তে মন্ত্রাণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন এবং গাজীপুরের ভোগড়া প্রান্তে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, ঢাকা বিআরটি কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: মনিরুজ্জামান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক এ, এস, এম, ইলিয়াস শাহসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

ঈদযাত্রা সহজ করতে উন্মুক্ত বিআরটি প্রকল্পের ৭ ফ্লাইওভার

Update Time : ০৫:২৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

ঈদকে সামনে রেখে এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ৭টি ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্তকরণ দেশবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার সচিবালয় থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে ফ্লাইওভারগুলো উন্মুক্ত করেন।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী আজ সকালে (রবিবার,২৪ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ৭টি ফ্লাইওভার ভার্চুয়ালি উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের একথা জানান।
তিনি বলেন, রোববার থেকেই এসব ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

এবারের ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী আরও জানান, আজ থেকে ৭টি ফ্লাইওভার-৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাম পার্শ্ব), ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান পার্শ্ব), ১৮০ মিটার জসীমউদ্দিন ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-১ গাজীপুরা ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-২ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার, ২৪০ মিটার ভোগড়া ফ্লাইওভার এবং গাজীপুরের চৌরাস্তায় ৫৬৮মিটার ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলো।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ঈদযাত্রাকে স্বস্তিদায়ক করতে একটি বৈঠক করেছি। সেখানে পরিবহন সেক্টর থেকে শুরু করে পুলিশের কর্মকর্তা সড়ক মহাসড়ক বিভাগসহ সকল অংশিজন উপস্থিত ছিলেন। সবাই বলেছেন, যার যার জায়গা থেকে তারা কাজ করবেন।

“ঈদের আগে পরে আমরা ট্রাক কভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রেখেছি, ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করার জন্য। গতবার ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে, এবারও আমরা আশা করছি ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।”

বিআরটি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “এ প্রকল্প নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে, যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। এটি বাস্তবায়নে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও দেরিতে হলেও কাজটি শেষ হওয়ার পথে।

“আশা করছি এ বছরই এটি দিয়ে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারব। আমাদের অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজও শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। আশা করছি, ডিসেম্বর নাগাদ বাকি কাজ শেষ হবে। বিআরটি করিডোর দিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে।”
২০১১ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বিআরটি প্রকল্পের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেক বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে।

এরপর কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রকল্পের সবশেষ ব্যয় দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।
শুরুতে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত। কিন্তু পরে সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হলেও পথ ছোট করে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করা হয়।

বিআরটি প্রকল্পের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বিআরটি বাস্তবায়িত হলে ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করবে। তাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট অনেকটাই কমে যাবে।

চীনের তিনটি এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানি এই প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে উড়াল সড়ক ও নিচের সড়ক নির্মাণের কাজ পেয়েছে চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশন (সিজিজিসি), জিয়াংশু প্রভিনশিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো–পারেটিভ। আর গাজীপুরে বিআরটির ডিপো নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে দেশীয় কোম্পানি সেল-ইউডিসি।

উল্লেখ্য, ৪ হাজার ২ শত ৬৮ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২০.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) প্রকল্পের আওতায় ৪.৫ কিলোমিটার এলিভেটেডসহ মোট ২০.৫০ কিলোমিটার বিআরটি করিডোর, ৮টি ফ্লাইওভার, ২৫টি বিআরটি স্টেশন, ১৫টি ফুটওভার ব্রীজ, ২৪.৪২ কিলোমিটার ড্রেন, ৩২ কিলোমিটার ফুটপাথ, গাজীপুরে ১টি বাস ডিপো নির্মাণ ও ৩৪ কিলোমিটার ফিডার সড়ক উন্নয়ন করা হচ্ছে।

এসময় ঢাকা প্রান্তে মন্ত্রাণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন এবং গাজীপুরের ভোগড়া প্রান্তে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, ঢাকা বিআরটি কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: মনিরুজ্জামান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক এ, এস, এম, ইলিয়াস শাহসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।