ঢাকা ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

আন্দোলন ছাড়া ক্ষমতায় আসার পথ নেই: প্রধানমন্ত্রী

নওরোজ রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪১ Time View

কোন দল ক্ষমতায় আসতে চাইলে আন্দোলন করেই ক্ষমতায় আসতে হবে। আন্দোলন ছাড়া ক্ষমতায় আসার পথ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) তেজগাঁও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভার পাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলন করুক আপত্তি নেই। আমরাও সারাজীবন আন্দোলন করেই আজ ক্ষমতায় আসছি। তারা ক্ষমতায় আসতে চায়, আন্দোলন করুক। আন্দোলন করেই এক সময় ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু মানুষের ক্ষতি যেন করতে না পারে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। তারা প্রতিদিন আমাদের পদত্যাগ চায়। সে দাবিতে প্রতিদিন আন্দোলন করছে, করুক। আমার আছে জনগণ। আমার তো আর কেউ নেই। বাবা-মা ভাইবোন সবই তো হারিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন নির্বাচন নিয়ে কথা বলে; অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বলে। আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না। এদের কথা, এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করব। আজকের উন্নয়ন ধ্বংস করুক, সেটা আমরা চাই না।

তিনি বলেন, আমরা অনেক ভালো কাজ করেছি, ভালো কথাই বলতে চাই। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকারে আসি, তখন থেকে সারা বাংলাদেশে কীভাবে উন্নয়ন করব সেই প্রচেষ্টা আমরা চালাই।

এ সময় গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, যারা বাস-ট্রাক-গাড়ি চালায় তাদের অস্বাভাবিক যে প্রতিযোগিতা, ওভারটেক করার যে প্রতিযোগিতা, এটা বন্ধ করতে হবে। এজন্য ড্রাইভারদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার পরপর বাস ও ট্রাকের ড্রাইভার ও যাত্রীরা যাতে একটু বিশ্রাম নিতে পারে, সেই বিশ্রামাগার করে দিতে বলেছি। এর মধ্যে কয়েকটা জায়গায় হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আমরা আরও করে দেব।

গাড়িচালকদের প্রতি গাড়ির মালিকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে (গাড়িচালক) কিন্তু একজন মানুষ, তারও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। ড্রাইভার খাবার ঠিকমতো খেতে পারল কিনা সেটাও দেখতে হবে। গাড়ি চালাতে পেট্রোল লাগবে কিন্তু যাকে দিয়ে চালাবেন তারও তো পেট্রোলের দরকার আছে। সেটাতেও নজর দিতে হবে।

তিনি বলেন, এখন সরকারে আছি, সরকারের গাড়িতে চলি। যখন আমি নিজের গাড়িতে চড়তাম, আমি সবার আগে ড্রাইভারের খাবার, ড্রাইভারের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতাম। নির্বাচনের সময় কোনোকিছু ঠিক থাকতো না। আমি সামনের সিটে বসতাম, নিজের হাতে কমলা বা বিস্কুট, যা কিছু ছিল আমি ড্রাইভারকে দিতাম। বলতাম, তুমি খেতে থাকো, তোমার পেট্রোল যেন ঠিক থাকে, তোমার মাথা যেন ঠিক থাকে। এভাবে তাদেরও যত্ন নিতে হয়। ড্রাইভার-মালিকদের বলব, নিয়মগুলো মেনে চললে নিজের জীবন সুন্দর থাকবে, আর আমাদের পথচারীরাও সুরক্ষিত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়কে অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরিহার করতে হবে। চালকদের এটা বুঝাতে হবে। বাস ট্রাক ড্রাইভার ও যাত্রীদের বিশ্রামের সুযোগ করে দিচ্ছি। গাড়ি চালাতে যেমন পেট্রোল লাগে, যাকে দিয়ে চালাবেন, তারও তো পেট্রোল দরকার। সেও তো একটা মানুষ, তার তো বিশ্রাম দরকার। বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে, তাদের যত্ন নিতে হবে। ড্রাইভারদের বলব, দুর্ঘটনায় শুধু মানুষের জীবন যায় তা না, নিজেরও তো ক্ষতি হয়। গতি মেনে চলতে হবে। সড়কে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে।

তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের মত সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের মানুষের জীবনে যেনো এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের পরিস্থিতি না আসে। আমি বলেছি, কেউ আগুন দিতে আসলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।

স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীন দেশ। স্বাধীন সার্বভোমত্ব নিয়ে এগিয়ে যাক এটা তাদের পছন্দ না। তাই নানা বিরোধীতা করেছে। এজন্য স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় আসে। স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশকে কী দেবে? ২৯ বছরে তারা ক্ষমতায় থেকে দেশকে কী দিয়েছে? বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছে মানুষের ওপর, সেটার ধারাবাহিকতা চলে। পরে ২০০৮ এ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। আমরা ক্ষমতায় এসে নানান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এখানে সড়ক ভবন করেছি। এখানে চমৎকার একটা ভবন হয়েছে। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা হাব হয়ে গেলো। যদিও তাদের আগের যায়গা থেকে একরকম জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটা দুঃখজনক। একদিক থেকে ভালোই হয়েছে, এখানে একটা চমৎকার একটা ভবন হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, সড়ক ও মাহসড় বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী ও সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান।

Please Share This Post in Your Social Media

আন্দোলন ছাড়া ক্ষমতায় আসার পথ নেই: প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০৯:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

কোন দল ক্ষমতায় আসতে চাইলে আন্দোলন করেই ক্ষমতায় আসতে হবে। আন্দোলন ছাড়া ক্ষমতায় আসার পথ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) তেজগাঁও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভার পাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলন করুক আপত্তি নেই। আমরাও সারাজীবন আন্দোলন করেই আজ ক্ষমতায় আসছি। তারা ক্ষমতায় আসতে চায়, আন্দোলন করুক। আন্দোলন করেই এক সময় ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু মানুষের ক্ষতি যেন করতে না পারে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। তারা প্রতিদিন আমাদের পদত্যাগ চায়। সে দাবিতে প্রতিদিন আন্দোলন করছে, করুক। আমার আছে জনগণ। আমার তো আর কেউ নেই। বাবা-মা ভাইবোন সবই তো হারিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন নির্বাচন নিয়ে কথা বলে; অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বলে। আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না। এদের কথা, এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করব। আজকের উন্নয়ন ধ্বংস করুক, সেটা আমরা চাই না।

তিনি বলেন, আমরা অনেক ভালো কাজ করেছি, ভালো কথাই বলতে চাই। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকারে আসি, তখন থেকে সারা বাংলাদেশে কীভাবে উন্নয়ন করব সেই প্রচেষ্টা আমরা চালাই।

এ সময় গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, যারা বাস-ট্রাক-গাড়ি চালায় তাদের অস্বাভাবিক যে প্রতিযোগিতা, ওভারটেক করার যে প্রতিযোগিতা, এটা বন্ধ করতে হবে। এজন্য ড্রাইভারদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার পরপর বাস ও ট্রাকের ড্রাইভার ও যাত্রীরা যাতে একটু বিশ্রাম নিতে পারে, সেই বিশ্রামাগার করে দিতে বলেছি। এর মধ্যে কয়েকটা জায়গায় হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আমরা আরও করে দেব।

গাড়িচালকদের প্রতি গাড়ির মালিকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে (গাড়িচালক) কিন্তু একজন মানুষ, তারও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। ড্রাইভার খাবার ঠিকমতো খেতে পারল কিনা সেটাও দেখতে হবে। গাড়ি চালাতে পেট্রোল লাগবে কিন্তু যাকে দিয়ে চালাবেন তারও তো পেট্রোলের দরকার আছে। সেটাতেও নজর দিতে হবে।

তিনি বলেন, এখন সরকারে আছি, সরকারের গাড়িতে চলি। যখন আমি নিজের গাড়িতে চড়তাম, আমি সবার আগে ড্রাইভারের খাবার, ড্রাইভারের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতাম। নির্বাচনের সময় কোনোকিছু ঠিক থাকতো না। আমি সামনের সিটে বসতাম, নিজের হাতে কমলা বা বিস্কুট, যা কিছু ছিল আমি ড্রাইভারকে দিতাম। বলতাম, তুমি খেতে থাকো, তোমার পেট্রোল যেন ঠিক থাকে, তোমার মাথা যেন ঠিক থাকে। এভাবে তাদেরও যত্ন নিতে হয়। ড্রাইভার-মালিকদের বলব, নিয়মগুলো মেনে চললে নিজের জীবন সুন্দর থাকবে, আর আমাদের পথচারীরাও সুরক্ষিত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়কে অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরিহার করতে হবে। চালকদের এটা বুঝাতে হবে। বাস ট্রাক ড্রাইভার ও যাত্রীদের বিশ্রামের সুযোগ করে দিচ্ছি। গাড়ি চালাতে যেমন পেট্রোল লাগে, যাকে দিয়ে চালাবেন, তারও তো পেট্রোল দরকার। সেও তো একটা মানুষ, তার তো বিশ্রাম দরকার। বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে, তাদের যত্ন নিতে হবে। ড্রাইভারদের বলব, দুর্ঘটনায় শুধু মানুষের জীবন যায় তা না, নিজেরও তো ক্ষতি হয়। গতি মেনে চলতে হবে। সড়কে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে।

তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের মত সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের মানুষের জীবনে যেনো এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের পরিস্থিতি না আসে। আমি বলেছি, কেউ আগুন দিতে আসলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।

স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীন দেশ। স্বাধীন সার্বভোমত্ব নিয়ে এগিয়ে যাক এটা তাদের পছন্দ না। তাই নানা বিরোধীতা করেছে। এজন্য স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় আসে। স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশকে কী দেবে? ২৯ বছরে তারা ক্ষমতায় থেকে দেশকে কী দিয়েছে? বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছে মানুষের ওপর, সেটার ধারাবাহিকতা চলে। পরে ২০০৮ এ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। আমরা ক্ষমতায় এসে নানান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এখানে সড়ক ভবন করেছি। এখানে চমৎকার একটা ভবন হয়েছে। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা হাব হয়ে গেলো। যদিও তাদের আগের যায়গা থেকে একরকম জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটা দুঃখজনক। একদিক থেকে ভালোই হয়েছে, এখানে একটা চমৎকার একটা ভবন হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, সড়ক ও মাহসড় বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী ও সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান।