ঢাকা ০১:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বলেলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:০৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৬১ Time View

স্থানীয় বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির শিকার হচ্ছেন। বলেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

বুধবার ২৩ আগস্ট ডিসিসিআই আয়োজিত এক ‘বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার সমন্বয় সুসংহতকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তৃতাদানকালে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি আরো বলেন, উদ্যোক্তারাও নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। যে কারণে বাজারে স্থিতিশীলতা আনায়নে বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় একান্ত আবশ্যক।

তেল-চিনিসহ বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থানীয় চাহিদা আমদানির মাধ্যমে মেটাতে হয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যের অস্থিতিশীলতার কারণে দেশীয় বাজারে পণ্যের মূল্যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। তবে স্থানীয় বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার কারণেও আমাদের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির শিকার হচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, প্রশাসনিক জটিলতা, অর্থায়নের সীমাবদ্ধতা, কর হার সমস্যা, দক্ষ মানবসম্পদের অভাব এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশের অনুপস্থিতির কারণে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় হ্রাসে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার-বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি। কৃত্রিমভাবে পণ্যের সংকট ও মূল্য বৃদ্ধিকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, স্থানীয় উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর আমাদের অর্থনীতির সাফল্য অনেকাংশে নির্ভরশীল। কারণ বাজারের অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্যোক্তারা যেমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তেমনই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও মানের হ্রাসের ফলে ভোক্তারা মানসম্মত পণ্য থেকে বঞ্চিত হন। তিনি ব্যবসায়ীদের হয়রানিমুক্ত ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ভোক্তা অধিকার সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করেন।

তিনি বলেন, ভ্যাট রিটার্ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইন ও অটোমেটেডের পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাসে যৌক্তিক হারে ভ্যাট কমানো প্রয়োজন। এছাড়া কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া দ্রুতকরণ, বিএসটিআইর সক্ষমতা বাড়ানো এবং এনবিআর, ট্যারিফ কমিশন ও প্রতিযোগিতা কমিশনসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজারে স্থিতিশীলতা আনায়নে বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় একান্ত আবশ্যক, বিশেষ করে কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও শ্রম অধিদপ্তরের কার্যক্রমের সমন্বয় বিশেষভাবে প্রয়োজন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের তৈরি পোশাক খাতের কমপ্লায়েন্স বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে এবং অন্যান্য খাতেও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে। দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সহায়ক নীতিমালা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যবসায়িক কাজে প্রয়োজনীয় ‘স্যাম্পল’ ছাড়া করতে যদি সময় বেশি লাগে, তাহলে ব্যবসা চলে যাবে ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী অন্যান্য দেশে, তাই এক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া সহজ করার কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মাঝে গ্যাপ আছে, যেটি নিরসন করা দরকার। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারিখাতের অবদান প্রায় ৮২ শতাংশ এবং বেসরকারিখাতের উন্নয়নে সহায়ক নীতি সহায়তা প্রদানে সরকার বদ্ধ পরিকর। সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের শুধুমাত্র মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপর জোর দিলে হবে না, ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে মনোযোগী হতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বলেলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব

Update Time : ০৭:০৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩

স্থানীয় বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির শিকার হচ্ছেন। বলেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

বুধবার ২৩ আগস্ট ডিসিসিআই আয়োজিত এক ‘বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার সমন্বয় সুসংহতকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তৃতাদানকালে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি আরো বলেন, উদ্যোক্তারাও নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। যে কারণে বাজারে স্থিতিশীলতা আনায়নে বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় একান্ত আবশ্যক।

তেল-চিনিসহ বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থানীয় চাহিদা আমদানির মাধ্যমে মেটাতে হয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যের অস্থিতিশীলতার কারণে দেশীয় বাজারে পণ্যের মূল্যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। তবে স্থানীয় বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার কারণেও আমাদের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির শিকার হচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, প্রশাসনিক জটিলতা, অর্থায়নের সীমাবদ্ধতা, কর হার সমস্যা, দক্ষ মানবসম্পদের অভাব এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশের অনুপস্থিতির কারণে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় হ্রাসে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার-বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি। কৃত্রিমভাবে পণ্যের সংকট ও মূল্য বৃদ্ধিকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, স্থানীয় উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর আমাদের অর্থনীতির সাফল্য অনেকাংশে নির্ভরশীল। কারণ বাজারের অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্যোক্তারা যেমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তেমনই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও মানের হ্রাসের ফলে ভোক্তারা মানসম্মত পণ্য থেকে বঞ্চিত হন। তিনি ব্যবসায়ীদের হয়রানিমুক্ত ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ভোক্তা অধিকার সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করেন।

তিনি বলেন, ভ্যাট রিটার্ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইন ও অটোমেটেডের পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাসে যৌক্তিক হারে ভ্যাট কমানো প্রয়োজন। এছাড়া কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া দ্রুতকরণ, বিএসটিআইর সক্ষমতা বাড়ানো এবং এনবিআর, ট্যারিফ কমিশন ও প্রতিযোগিতা কমিশনসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজারে স্থিতিশীলতা আনায়নে বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় একান্ত আবশ্যক, বিশেষ করে কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও শ্রম অধিদপ্তরের কার্যক্রমের সমন্বয় বিশেষভাবে প্রয়োজন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের তৈরি পোশাক খাতের কমপ্লায়েন্স বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে এবং অন্যান্য খাতেও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে। দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সহায়ক নীতিমালা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যবসায়িক কাজে প্রয়োজনীয় ‘স্যাম্পল’ ছাড়া করতে যদি সময় বেশি লাগে, তাহলে ব্যবসা চলে যাবে ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী অন্যান্য দেশে, তাই এক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া সহজ করার কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মাঝে গ্যাপ আছে, যেটি নিরসন করা দরকার। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারিখাতের অবদান প্রায় ৮২ শতাংশ এবং বেসরকারিখাতের উন্নয়নে সহায়ক নীতি সহায়তা প্রদানে সরকার বদ্ধ পরিকর। সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের শুধুমাত্র মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপর জোর দিলে হবে না, ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে মনোযোগী হতে হবে।