৫০০ টাকার নতুন নোট বাজারে
- Update Time : ০৬:৪৬:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২১ Time View
নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি গ্রাহকের হাতে নোট দিচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়ার পর ব্যাংকগুলো সেই টাকা গ্রাহকের হাতে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাক্ষরিত ৫০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার ১৫২ মিমি x ৬৫ মিমি। নোটের সম্মুখভাগের বাঁ পাশে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি ও মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা, কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি।
অন্যদিকে নোটের পেছন ভাগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি মুদ্রিত আছে। নোটে জলছাপ হিসেবে আছে বেঙ্গল টাইগারের মুখ। তার নিচে উজ্জ্বল ইলেকট্রোটাইপ জলছাপে ‘৫০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য আছে।
বর্তমানে প্রচলিত ৫০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি আছে। নতুন নোটে তা নেই। নতুন নোটের নকশায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি আছে। নতুন নোটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সই আছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এই ৫০০ টাকার নোট খোলাবাজারে দেখা যায়নি। বিকেলে মতিঝিল খোলাবাজারে প্রতিটি নতুন ৫০০ টাকার নোটের দাম ৬০০ টাকা হাঁকতে দেখা গেছে। বিক্রেতারা এর কমে নোট ছাড়ছেন না।
আজ বিকেলে মতিঝিলের ১০ জন নোট বিক্রেতার মধ্যে দুজনের কাছে ৫০০ টাকার নোট এসেছে। তাঁরা জানান, ৫৮০ টাকা দিয়ে প্রতিটি নোট কিনতে হয়েছে। সে জন্য তাঁরা ৬০০ টাকা দাম চাইছেন। তবে কোনো গ্রাহক দেখা যায়নি।
বিক্রেতারা জানান, নতুন নোট নিয়ে ঈদের সময় কিছুটা আগ্রহ থাকে। অন্য সময় গ্রাহক থাকে না। তবে ছেঁড়াফাটা নোটের বিক্রেতা নিয়মিত থাকে। ছেঁড়াফাটা নোট কেনা তাঁদের মূল ব্যবসা। এই টাকা ঠিক করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বদল করে নেন তাঁরা। এটা তাঁদের আয়ের বড় অংশ।
জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের চলমান ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ সিরিজের অংশ হিসেবে আজ থেকে নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া শুরু করবে।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরযুক্ত এই নোটটি প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ইস্যু করা হবে। পরে অন্যান্য শাখার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। নতুন নোটটির আকার ১৫২ মিমি ৬৫ মিমি এবং রং হবে প্রধানত সবুজ। বাঁ পাশে থাকবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং মাঝের পটভূমিতে ফুটন্ত শাপলা ফুল ও পাতা। বিপরীত পাশে চিত্রায়িত হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
নোটটিতে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিকৃতি, উজ্জ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ ‘৫০০’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম সংযোজিত রয়েছে। নোটটির সত্যতা নিশ্চিত করতে ১০টি স্বতন্ত্র সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়েছে।
নোটের ডান দিকের ওপরের কোণে থাকা ‘৫০০’ সংখ্যা অপটিক্যালি ভ্যারিয়েবল কালিতে মুদ্রিত। নোটটি কাত করলে এই রং সবুজ থেকে নীল হয়ে যায় এবং ভেতরে তির্যক ‘৫০০’ দেখা যায়।
৪ মিমি চওড়া একটি টুইস্টেড সিকিউরিটি থ্রেডে লাল এবং উজ্জ্বল সোনালি রঙের সমন্বয় রয়েছে। নোটটি কাত করলে লাল অংশ সবুজে রূপ নেয় (যেখানে দেখা যায় Taka ৫০০), আর সোনালি অংশে চলমান রেইনবো রঙের বার দেখা যায়।
নোটটির নিচের বর্ডারের সবুজ নকশায় লুকানো ‘৫০০’ সংখ্যাটি শুধু অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যায়। গভর্নরের স্বাক্ষরের পাশে থাকা সি-থ্রু ‘৫০০’ সংখ্যাটি আলোয় ধরলে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সুবিধার জন্য নোটে ডান নিচের কোণে ৫টি ছোট উঁচু ডট দেওয়া হয়েছে। শহীদ মিনার, ব্যাংকের নাম, ডান পাশে তির্যক লাইন এবং সুপ্রিম কোর্টের ছবিসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো রাফ ইনট্যালিও মুদ্রণে তৈরি করা হয়েছে, যাতে ব্যবহারকারীরা স্পর্শে নোটের বৈশিষ্ট্য বুঝতে পারেন। নোটের দুই পাশে ইউভি কিউরিং ভার্নিশ ব্যবহার করা হয়েছে, যা নোটকে চকচকে অনুভূতি ও বাড়তি স্থায়িত্ব দেয়।
ইউভি ডিটেক্টরে নোট ধরলে শাপলা ফুলের ছবি মেজেন্ডা রঙে জ্বলে ওঠে এবং কাগজে ছড়ানো লাল, নীল ও সবুজ রঙের তন্তুগুলো দৃশ্যমান হয়। নোটের বিভিন্ন স্থানে মাইক্রো প্রিন্টিংয়ে ‘BANGLADESH BANK’ লেখা রয়েছে, যা শুধু লেন্সের সাহায্যে দেখা যাবে।
এর আগে একই স্থাপত্য সিরিজে নতুন ১০০০, ১০০, ৫০ এবং ২০ টাকার নোট বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক।

















































































































































