ঢাকা ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

মো. মুহিবুর রহমান
  • Update Time : ০২:২২:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৫০ Time View

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সেজে ওঠে নানা আয়োজন ও আনন্দ উৎসবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও সাদা পায়রা উড্ডয়ন, কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ ও বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম-এর নেতৃত্বে আনন্দ র‌্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালি শেষে কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় “চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে কৃষিশিক্ষা ও গবেষণায় করণীয়” শীর্ষক সেমিনার। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি–২০২৫-এর সভাপতি ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার।

সেমিনারে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম, আর প্রধান অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এম. সারওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দিন এবং সিকৃবি ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ. টি. এম. মাহবুব-ই-ইলাহী।

প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর আলিমুল ইসলাম বলেন, “জ্ঞান, মেধা ও মননের বিকাশে অনন্য এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী মরহুম এম. সাইফুর রহমানের উদ্যোগেই এ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে। প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির মাধ্যমে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব—এই বিশ্বাসেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর সারওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “কৃষিকে টেকসই ও লাভজনক করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বীজ নির্বাচন থেকে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত প্রযুক্তির প্রয়োগ উৎপাদনশীলতা বাড়াবে, খরচ কমাবে এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।”

বিশেষ অতিথি প্রফেসর নিজাম উদ্দিন বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যবাহী কৃষিকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে যুগোপযোগী করতে হবে। গবেষণা ও প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় জরুরি। চা ও চামড়া শিল্পের পুনরুজ্জীবন, জলবায়ু–সহনশীল ফসল উদ্ভাবন এবং কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে জোর দিতে হবে, যাতে কৃষি একটি লাভজনক শিল্পে পরিণত হয়।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. নির্মল চন্দ্র রায়, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কাওছার হোসেন, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. আসাদ-উদ-দৌলা, প্রক্টর প্রফেসর ড. জসিম উদ্দিন আহাম্মদ প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠাতা রেজিস্ট্রার ও আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. এম. রাশেদ হাসনাত এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাৎস্যচাষ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সাখাওয়াত হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বর্ণাঢ্য আয়োজনে অংশ নেন, যা পরিণত হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

মো. মুহিবুর রহমান
Update Time : ০২:২২:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সেজে ওঠে নানা আয়োজন ও আনন্দ উৎসবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও সাদা পায়রা উড্ডয়ন, কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ ও বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম-এর নেতৃত্বে আনন্দ র‌্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালি শেষে কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় “চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে কৃষিশিক্ষা ও গবেষণায় করণীয়” শীর্ষক সেমিনার। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি–২০২৫-এর সভাপতি ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার।

সেমিনারে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম, আর প্রধান অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এম. সারওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দিন এবং সিকৃবি ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ. টি. এম. মাহবুব-ই-ইলাহী।

প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর আলিমুল ইসলাম বলেন, “জ্ঞান, মেধা ও মননের বিকাশে অনন্য এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী মরহুম এম. সাইফুর রহমানের উদ্যোগেই এ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে। প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির মাধ্যমে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব—এই বিশ্বাসেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর সারওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “কৃষিকে টেকসই ও লাভজনক করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বীজ নির্বাচন থেকে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত প্রযুক্তির প্রয়োগ উৎপাদনশীলতা বাড়াবে, খরচ কমাবে এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।”

বিশেষ অতিথি প্রফেসর নিজাম উদ্দিন বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যবাহী কৃষিকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে যুগোপযোগী করতে হবে। গবেষণা ও প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় জরুরি। চা ও চামড়া শিল্পের পুনরুজ্জীবন, জলবায়ু–সহনশীল ফসল উদ্ভাবন এবং কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে জোর দিতে হবে, যাতে কৃষি একটি লাভজনক শিল্পে পরিণত হয়।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. নির্মল চন্দ্র রায়, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কাওছার হোসেন, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. আসাদ-উদ-দৌলা, প্রক্টর প্রফেসর ড. জসিম উদ্দিন আহাম্মদ প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠাতা রেজিস্ট্রার ও আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. এম. রাশেদ হাসনাত এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাৎস্যচাষ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সাখাওয়াত হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বর্ণাঢ্য আয়োজনে অংশ নেন, যা পরিণত হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশে।