ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্বাস্থ্য রেজিষ্ট্রেশনের নামে রোগীকে হয়রানি

মো. মুহিবুর রহমান, সিলেট প্রতিনিধি
  • Update Time : ১১:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৭১ Time View

চিকিৎসকের সাক্ষাতে, টিকেট সংগ্রহে হয়রানি, প্যাথলজি পরীক্ষা ও ঔষধ নিতে অরাজকতা

সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যেন একটা সমস্যার পাহাড়। রোগীকে সেবা দেওয়ার তুলনায় হয়রানি করা হচ্ছে দ্বিগুন হারে। মাঝে মধ্যে দুদকের লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও নিয়মিত তদারকির অভাবে প্রতিনিয়ত হয়রানি বেড়েই চলেছে। এটি ৯০০ শয্যার হাসপাতাল। কিন্তু জনবল আছে ৫০০ শয্যার। অথচ এখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন চারগুণ বেশি রোগী থাকে। আজকেও প্রায় ২৭০০ রোগী ভর্তি আছে। রোগীদের সাথে এটেন্ডেন্ট থাকে ৩/৪ জন। এতো বিপুল সংখ্যক লোক থাকলে তো সেবা দেওয়া যায় না। সেবায় ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়া এখানে দালালের উৎপাত বেড়েই চলছে।

১৯৩৬ সালে ইনস্টিটিউট হিসেবে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তীতে ১৯৪৮ সালে এই ইনস্টিটিউটকে মেডিকেল স্কুল এবং ১৯৬২ সালে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজে রূপান্তর করা হয়। পরে ১৯৭৮ সালে কাজলশাহ এলাকায় ২৫ একর জায়গায় মেডিকেল কলেজটি সম্প্রসারিত করা হয়। পুরোনো জনবল ঠিক রেখে ৫০০ শয্যার এ হাসপাতালকে ১৯৯৮ সালে ৯০০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হয়। ১৭ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও হাসপাতালে অনুমোদিত পদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত বাড়ানো হয়নি। এসব শূন্যপদের কারণে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ও প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া ৯০০ শয্যার বিপরীতে আন্ত বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৫০০ রোগী ভর্তি থাকছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৫০০ শয্যা থাকাকালে হাসপাতালে কর্মরতদের পদের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২১।শয্যাসংখ্যা বাড়লেও এ অবস্থার উন্নতি আজ পর্যন্ত হয়নি। গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের আওতায় রোগীকে বর্হি বিভাগে ডাক্তার দেখানোর পূর্বে অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের নতুন নিয়ম তৈরি করা হয়। সেবার মান উন্নয়নের কথা বলা হলেও জরুরী রোগীদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসাকে প্রাধাণ্য না দিয়ে বরঞ্চ রোগীর রেজিষ্ট্রেশন আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দূর দূরান্ত থেকে আসা অনেক রোগী সঠিক তথ্য না জানায় এবং পূর্ব রেজিষ্ট্রেশন না থাকায় চিকিৎসা পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। টিকেটের লম্বা লাইনে দাড়িয়ে বারবার হয়রানির শিকার হতে হয় রোগী ও তার স্বজনদের।

এদিকে, এর প্রতিবাদে সভা করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটি। ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় সংগঠনের সুরমা মার্কেটস্থ কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্টিত হয়। জেলা সভাপতি এডভোকেট কুমার চন্দ্র রায় এর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল, রুহুল আমিন, প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সরকার, দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, সদস্য আব্দুস সালাম, নাছির মিয়া, মহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,শুধু ওসমানী মেডিকেল নয় প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম দূনীতির বেড়াজালে বন্দি সিলেটবাসী।

এদিকে, এমনিতেই বিদ্যুতের লোডশেডিং এ অতিষ্ট নগরবাসী। প্রিপেইড মিটার স্থাপন করে জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলে এখন আবার ‘মরার উপর খাড়ার গাঁ’ হয়ে দাড়িঁয়েছে বিদুত্যের আবার মিটার পরিবর্তন। ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার সাধারণ মানুষের জন্য জনদুর্ভোগ ও ভোগান্তির সৃষ্টি করছে। সরকারি অফিসে পোস্ট-পেইড মিটার চালু থাকলেও সাধারণ জনগণের ওপর জোর করে প্রিপেইড মিটার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পূর্বের প্রিপেইড মিটারে ইউনিট প্রদান করা হলেও বর্তমানে প্রদানকৃত মিটার রিচার্জে ইউনিটের পরিবর্তে টাকা দেওয়া হচ্ছে। যার দরুন পূর্বেও তুলনায় দুই থেকে তিনগুন বিল কাটা হচ্ছে। এগুলো কেউ দেখার নেই। সবাই লম্বা লম্বা বক্তব্যে দিয়ে লুটপাট নিয়ে ব্যস্থ।তাদের কাজ হচ্ছে জনপ্রতিনিধি হয়ে জনপ্রতারণা করা। সিলেটবাসীকে নিস্ব করে নিজে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হওয়া।জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটি নেতৃবৃন্দ এসব সমস্যা সমাধানে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

সিলেট ওসমানী হাসপাতালে কেন এতো অব্যবস্থাপনা, যা জানালেন জেলা প্রশাসক:

সিলেট বিভাগের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র এমএজি ওসমানী হাসপাতালের সেবা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা অভিযোগের মধ্যে এ হাসপাতালটি প্ররিদর্শন করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম। সোমবার দুপুরে তিনি হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন। এসময় ওসমানী হাসপাতালের পরিচালকসহ উর্ধতন কর্মকতাদের সাথেও কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

পরিদর্শন শেষে সারওয়ার আলম বলেন, ওসমানী হাসপাতালের সেবা কীভাবে আরও উন্নত করার যায় সে ব্যাপারে আজকে আমরা আলাপ করেছি। এ নিয়ে আমরা কাজ করছি। এই হাসপাতালকে অল্প সময়ের মধ্যে সিলেট অঞ্চলের মধ্যে একটি ভালো হাসপাতালে পরিণত করতে চাই।

ওসমানীতে কয়েকটা চ্যালেঞ্জ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি ৯০০ শয্যার হাসপাতাল। কিন্তু জনবল আছে ৫০০ শয্যার। অথচ এখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন চারগুণ বেশি রোগী থাকে। আজকেও প্রায় ২৭০০ রোগী ভর্তি আছে। রোগীদের সাথে এটনডেন্ট থাকে ৩/৪ জন। এতো বিপুল সংখ্যক লোক থাকলে তো সেবা দেওয়া যায় না। সেবায় ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়া এখানে দালালের উৎপাত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দালাল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। ওসমানী হাসপাতালে কোন দালাল ঢুকতে পারবে না। এখানে কোন দালাল থাকবে না। যারা ঢুকতে চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন ক্লিনিক যদি এখান থেকে রোগী ভাগিয়ে নিতে চায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিসি বলেন, এখানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সমস্যা আছে। আগে একদিন রাতে এসেছিলাম। তখন দেখেছি অনেক অপরিষ্কার। আমি চেষ্টা করবো প্রতি সপ্তাহে বা ১৫ দিনে একবার নিজে এখানে আসতে। এবং না বলে আসতে। যাতে এখানকার প্রকৃত পরিবেশ বুঝতে পারি। হাসপাতালে গাড়ি পার্কিংয়েরও সমস্যা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এরপর এগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। একটু সময় লাগবে। তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে অল্প সময়ের মধ্যে ওসমানীকে একটি ভালো হাসপাতালে পরিণত করা সম্ভব।

Please Share This Post in Your Social Media

সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্বাস্থ্য রেজিষ্ট্রেশনের নামে রোগীকে হয়রানি

মো. মুহিবুর রহমান, সিলেট প্রতিনিধি
Update Time : ১১:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চিকিৎসকের সাক্ষাতে, টিকেট সংগ্রহে হয়রানি, প্যাথলজি পরীক্ষা ও ঔষধ নিতে অরাজকতা

সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যেন একটা সমস্যার পাহাড়। রোগীকে সেবা দেওয়ার তুলনায় হয়রানি করা হচ্ছে দ্বিগুন হারে। মাঝে মধ্যে দুদকের লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও নিয়মিত তদারকির অভাবে প্রতিনিয়ত হয়রানি বেড়েই চলেছে। এটি ৯০০ শয্যার হাসপাতাল। কিন্তু জনবল আছে ৫০০ শয্যার। অথচ এখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন চারগুণ বেশি রোগী থাকে। আজকেও প্রায় ২৭০০ রোগী ভর্তি আছে। রোগীদের সাথে এটেন্ডেন্ট থাকে ৩/৪ জন। এতো বিপুল সংখ্যক লোক থাকলে তো সেবা দেওয়া যায় না। সেবায় ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়া এখানে দালালের উৎপাত বেড়েই চলছে।

১৯৩৬ সালে ইনস্টিটিউট হিসেবে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তীতে ১৯৪৮ সালে এই ইনস্টিটিউটকে মেডিকেল স্কুল এবং ১৯৬২ সালে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজে রূপান্তর করা হয়। পরে ১৯৭৮ সালে কাজলশাহ এলাকায় ২৫ একর জায়গায় মেডিকেল কলেজটি সম্প্রসারিত করা হয়। পুরোনো জনবল ঠিক রেখে ৫০০ শয্যার এ হাসপাতালকে ১৯৯৮ সালে ৯০০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হয়। ১৭ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও হাসপাতালে অনুমোদিত পদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত বাড়ানো হয়নি। এসব শূন্যপদের কারণে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ও প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া ৯০০ শয্যার বিপরীতে আন্ত বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৫০০ রোগী ভর্তি থাকছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৫০০ শয্যা থাকাকালে হাসপাতালে কর্মরতদের পদের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২১।শয্যাসংখ্যা বাড়লেও এ অবস্থার উন্নতি আজ পর্যন্ত হয়নি। গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের আওতায় রোগীকে বর্হি বিভাগে ডাক্তার দেখানোর পূর্বে অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের নতুন নিয়ম তৈরি করা হয়। সেবার মান উন্নয়নের কথা বলা হলেও জরুরী রোগীদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসাকে প্রাধাণ্য না দিয়ে বরঞ্চ রোগীর রেজিষ্ট্রেশন আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দূর দূরান্ত থেকে আসা অনেক রোগী সঠিক তথ্য না জানায় এবং পূর্ব রেজিষ্ট্রেশন না থাকায় চিকিৎসা পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। টিকেটের লম্বা লাইনে দাড়িয়ে বারবার হয়রানির শিকার হতে হয় রোগী ও তার স্বজনদের।

এদিকে, এর প্রতিবাদে সভা করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটি। ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় সংগঠনের সুরমা মার্কেটস্থ কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্টিত হয়। জেলা সভাপতি এডভোকেট কুমার চন্দ্র রায় এর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল, রুহুল আমিন, প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সরকার, দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, সদস্য আব্দুস সালাম, নাছির মিয়া, মহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,শুধু ওসমানী মেডিকেল নয় প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম দূনীতির বেড়াজালে বন্দি সিলেটবাসী।

এদিকে, এমনিতেই বিদ্যুতের লোডশেডিং এ অতিষ্ট নগরবাসী। প্রিপেইড মিটার স্থাপন করে জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলে এখন আবার ‘মরার উপর খাড়ার গাঁ’ হয়ে দাড়িঁয়েছে বিদুত্যের আবার মিটার পরিবর্তন। ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার সাধারণ মানুষের জন্য জনদুর্ভোগ ও ভোগান্তির সৃষ্টি করছে। সরকারি অফিসে পোস্ট-পেইড মিটার চালু থাকলেও সাধারণ জনগণের ওপর জোর করে প্রিপেইড মিটার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পূর্বের প্রিপেইড মিটারে ইউনিট প্রদান করা হলেও বর্তমানে প্রদানকৃত মিটার রিচার্জে ইউনিটের পরিবর্তে টাকা দেওয়া হচ্ছে। যার দরুন পূর্বেও তুলনায় দুই থেকে তিনগুন বিল কাটা হচ্ছে। এগুলো কেউ দেখার নেই। সবাই লম্বা লম্বা বক্তব্যে দিয়ে লুটপাট নিয়ে ব্যস্থ।তাদের কাজ হচ্ছে জনপ্রতিনিধি হয়ে জনপ্রতারণা করা। সিলেটবাসীকে নিস্ব করে নিজে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হওয়া।জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটি নেতৃবৃন্দ এসব সমস্যা সমাধানে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

সিলেট ওসমানী হাসপাতালে কেন এতো অব্যবস্থাপনা, যা জানালেন জেলা প্রশাসক:

সিলেট বিভাগের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র এমএজি ওসমানী হাসপাতালের সেবা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা অভিযোগের মধ্যে এ হাসপাতালটি প্ররিদর্শন করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম। সোমবার দুপুরে তিনি হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন। এসময় ওসমানী হাসপাতালের পরিচালকসহ উর্ধতন কর্মকতাদের সাথেও কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

পরিদর্শন শেষে সারওয়ার আলম বলেন, ওসমানী হাসপাতালের সেবা কীভাবে আরও উন্নত করার যায় সে ব্যাপারে আজকে আমরা আলাপ করেছি। এ নিয়ে আমরা কাজ করছি। এই হাসপাতালকে অল্প সময়ের মধ্যে সিলেট অঞ্চলের মধ্যে একটি ভালো হাসপাতালে পরিণত করতে চাই।

ওসমানীতে কয়েকটা চ্যালেঞ্জ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি ৯০০ শয্যার হাসপাতাল। কিন্তু জনবল আছে ৫০০ শয্যার। অথচ এখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন চারগুণ বেশি রোগী থাকে। আজকেও প্রায় ২৭০০ রোগী ভর্তি আছে। রোগীদের সাথে এটনডেন্ট থাকে ৩/৪ জন। এতো বিপুল সংখ্যক লোক থাকলে তো সেবা দেওয়া যায় না। সেবায় ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়া এখানে দালালের উৎপাত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দালাল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। ওসমানী হাসপাতালে কোন দালাল ঢুকতে পারবে না। এখানে কোন দালাল থাকবে না। যারা ঢুকতে চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন ক্লিনিক যদি এখান থেকে রোগী ভাগিয়ে নিতে চায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিসি বলেন, এখানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সমস্যা আছে। আগে একদিন রাতে এসেছিলাম। তখন দেখেছি অনেক অপরিষ্কার। আমি চেষ্টা করবো প্রতি সপ্তাহে বা ১৫ দিনে একবার নিজে এখানে আসতে। এবং না বলে আসতে। যাতে এখানকার প্রকৃত পরিবেশ বুঝতে পারি। হাসপাতালে গাড়ি পার্কিংয়েরও সমস্যা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এরপর এগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। একটু সময় লাগবে। তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে অল্প সময়ের মধ্যে ওসমানীকে একটি ভালো হাসপাতালে পরিণত করা সম্ভব।