শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবু আটক

- Update Time : ০৬:৫১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ১৭৮ Time View
ভারতে পালানোর সময় এডিটরস গিল্ডের সভাপতি সাংবাদিক মোজাম্মেল হক বাবু ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ ৪ জন জনতার হাতে আটক হয়েছেন। বর্তমানে তারা ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানায় আছেন।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ও পোড়াকান্দুলিয়া সীমান্তের মাঝামাঝি এলাকা থেকে তাদের আটক করেন স্থানীয় জনতা। পরে তাদের ধোবাউড়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন তারা।
এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চাঁন মিয়া জানান, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে একটি প্রাইভেটকারযোগে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিলেন সাংবাদিক শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবু। সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করেন এলাকাবাসী। তাদের সঙ্গে আরও আটক হয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান ও গাড়িচালক সেলিম। তাদের বহনকারী ওই প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়েছে।
ওসি চাঁন মিয়া বলেন, চারজন ধোবাউড়া-পূর্বধলা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আটক হন। বর্তমানে তাঁরা থানা-পুলিশের হেফাজতে আছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আটক চারজন পুলিশ হেফাজতে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। এনিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামীম হোসেন বলেন, জনতা তিন সাংবাদিকসহ চারজনকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছে। বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরে জানানো হয়েছে। যে সব থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, সে সব থানা তথ্য জানিয়ে তাদের নিতে পারবে। তাদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে কোনো মামলা নেই।
শ্যামল দত্ত দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অন্যদিকে, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ছিলেন মোজাম্মেল বাবু।
একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমার বাড়ি ময়মনসিংহ সদরে। আমাকে আমার স্যার মোজাম্মেল হোসেন বাবু সীমান্তে দিয়ে আসার কথা বলেন। তারপর আমি নিয়ে আসার পথে দশটি মোটরসাইকেল পথ রুদ্ধ করে। আমাদেরকে আটকিয়ে কিলঘুষি দিয়ে, আমাদের কাছে থাকা টাকা পয়সা চেক করে সবকিছু নিয়ে যায়। কি কি নিছে আমি বলতে পারবো না।
এর আগে সপরিবারে ভারতে যাওয়ার সময় শ্যামল দত্তকে আটকে দিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ।
গত ৬ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তিনি সপরিবারে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেন। সে সময় আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. খায়রুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।
সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন, ৬ আগস্ট বিকালে শ্যামল দত্ত তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করেন। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে দেশত্যাগে তার নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি জানানো হয়। এরপর শ্যামল দত্তকে স্ত্রী-কন্যাসহ ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত পাঠানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিরপুরে মো. ফজলু হত্যার ঘটনায় ভাসানটেক থানায় দায়ের করা এক মামলায় শ্যামল দত্ত আসামি।
অন্যদিকে যাত্রাবাড়ীতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার হত্যা মামলার আসামির তালিকায় রয়েছে মোজাম্মেল বাবুর নাম।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মোজাম্মেল বাবু, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, ফরিদা ইয়াসমিন, মুন্নী সাহা, সোমা ইসলামসহ মোট ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জন সাংবাদিক। ২৯ আগস্ট আন্দোলনে নিহত রিয়ানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ অভিযোগ দাখিল করেন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়