ঢাকা ০৬:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেরপুরের তিন উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, তিনজনের মৃত্যু

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ০১:৫৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৭ Time View

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টির পানিতে শেরপুরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টিতে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

একইসঙ্গে মহারশি, চেল্লাখালী ও ভোগাই নদীর বাঁধের অন্তত সাত স্থান ভেঙে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর ও নালিতাবাড়ী পৌর এলাকাসহ শ্রীবরদীর শতাধিক গ্রাম ডুবে গেছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ভোর থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে এবং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

এ পর্যন্ত ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তত ১৪টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছে লোকজন। প্রতি মুহূর্তেই বানের পানি বাড়ছে। এমন বন্যা ৮৮ সালের পরিস্থিতিকে ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে, নালিতাবাড়ীর খলিশাকুড়ির খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়ার বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী (৬৫) ও ঝিনাইগাতীর সন্ধাকুড়ায় অজ্ঞাত ব্যক্তিসহ তিনজন বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। গত রাত থেকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, সিভিল প্রশাসন দুর্গম ও দুর্গত এলাকায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে।

বন্যার্ত এলাকায় খাবার সংকট চরমভাবে দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট-ব্রিজ-কালভার্ট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলেও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ। তবে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বিএনপি শুকনা খাবার বিতরণ করছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ৬ জাহার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করেছে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এখনো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উদ্ধার কাজ চলছে। উদ্ধার ও শুকনা খাবার দেওয়া এখন বড় দায়িত্ব। সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।

নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, নালিতাবাড়ী উপজেলায় এ বছর ২৩ হাজার ২০০ হেক্টর আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর আমন আবাদ তলিয়ে গেছে। গতকাল রাতে ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় নতুন নতুন এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে সম্পূর্ণ তলিয়ে যাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বন্যার্তদের শুকনো খাবার ও গো খাদ্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ রাজনৈতিক দল বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করেছে।

নওরোজ/এসএইচ

Please Share This Post in Your Social Media

শেরপুরের তিন উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, তিনজনের মৃত্যু

নওরোজ ডেস্ক
Update Time : ০১:৫৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টির পানিতে শেরপুরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টিতে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

একইসঙ্গে মহারশি, চেল্লাখালী ও ভোগাই নদীর বাঁধের অন্তত সাত স্থান ভেঙে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর ও নালিতাবাড়ী পৌর এলাকাসহ শ্রীবরদীর শতাধিক গ্রাম ডুবে গেছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ভোর থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে এবং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

এ পর্যন্ত ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তত ১৪টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছে লোকজন। প্রতি মুহূর্তেই বানের পানি বাড়ছে। এমন বন্যা ৮৮ সালের পরিস্থিতিকে ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে, নালিতাবাড়ীর খলিশাকুড়ির খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়ার বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী (৬৫) ও ঝিনাইগাতীর সন্ধাকুড়ায় অজ্ঞাত ব্যক্তিসহ তিনজন বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। গত রাত থেকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, সিভিল প্রশাসন দুর্গম ও দুর্গত এলাকায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে।

বন্যার্ত এলাকায় খাবার সংকট চরমভাবে দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট-ব্রিজ-কালভার্ট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলেও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ। তবে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বিএনপি শুকনা খাবার বিতরণ করছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ৬ জাহার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করেছে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এখনো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উদ্ধার কাজ চলছে। উদ্ধার ও শুকনা খাবার দেওয়া এখন বড় দায়িত্ব। সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।

নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, নালিতাবাড়ী উপজেলায় এ বছর ২৩ হাজার ২০০ হেক্টর আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর আমন আবাদ তলিয়ে গেছে। গতকাল রাতে ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় নতুন নতুন এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে সম্পূর্ণ তলিয়ে যাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বন্যার্তদের শুকনো খাবার ও গো খাদ্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ রাজনৈতিক দল বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করেছে।

নওরোজ/এসএইচ