শীতে কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেন
- Update Time : ০২:৩১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২৭ Time View
আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়টায় অনেকেই সর্দি-কাশিতে ভোগেন, জ্বরে পড়েন। আবার মশাবাহিত রোগের মৌসুমও কিন্তু ফুরায়নি। যেকোনো বয়সী মানুষই নানান রোগে আক্রান্ত হতে পারেন এ সময়ে। শীতে কী খাচ্ছেন, কী পরছেন—সুস্থ থাকতে সবই গুরুত্বপূর্ণ। ঠান্ডা হাওয়া থেকেই চাই সুরক্ষা। মন খারাপ করা ধূসর দিনে মনের যত্নের কথাও ভুলে যাওয়া যাবে না। শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এসব মানুষের প্রতি বাড়তি খেয়াল রাখা চাই। সুস্থ থাকতে কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয় তা নিয়ে কিছু বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
বড়দের টিকা
ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিতে হয় প্রতিবছর। শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই এই টিকা নেওয়া ভালো। নিউমোনিয়ার টিকা নিতে হয় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর। শীত মৌসুমের আগেই ৬৫ বছর বা এর বেশি বয়সী ব্যক্তিদের নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।
খাওয়াদাওয়া ঠিকঠাক
বিয়ে তো লেগেই থাকে; আবার ঘরে–বাইরে চলে পিঠাপুলির আয়োজন। তাই অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। খেজুরের কাঁচা রস পান করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন। কাঁচা রসের মাধ্যমে খুব সহজে ছড়াতে পারে প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাস। রোজ তাজা ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে টক ফল। টক ফলে আছে ভিটামিন সি। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে এবং ত্বককে ভেতর থেকে সতেজ রাখতে ভিটামিন সি আবশ্যক। তবে মনে রাখতে হবে, ভিটামিন সি তাপে নষ্ট হয়ে যায়। তাই আচার বা চাটনির মতো পদ থেকে ভিটামিন সি পাবেন না।
সুরক্ষিত থাকুন
- শীতের উপযোগী পোশাকের ব্যাপারে অবহেলা করবেন না। একাধিক স্তরের পোশাক পরা ভালো, যাতে প্রয়োজনে পোশাকের স্তর কমিয়ে ফেলা যায়। ঠান্ডা বাতাসে কান, গলা ও মাথা ঢেকে রাখুন।
- বাইরে গেলে মাস্ক পরা ভালো। বিশেষত শহুরে পরিবেশে। কারণ, শহরের শুষ্ক বাতাসে দূষণের মাত্রা অনেক বেশি।
- হাঁচি-কাশির আদবকেতা মেনে চলুন।
- দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করুন। নিয়ম অনুযায়ী মসকুইটো রিপেল্যান্ট ব্যবহার করুন।
- ত্বক আর্দ্র রাখুন। ব্যবহার করুন ময়েশ্চরাইজার।
- শীতের রোদ কোমল হলেও সানস্ক্রিন–সামগ্রী ব্যবহার করুন। তবে রোজ অন্তত ২০ মিনিট সানস্ক্রিন–সামগ্রী ছাড়াই রোদে থাকুন। সঠিক নিয়মে শরীরে রোদ লাগালে পাবেন ভিটামিন ডি।
যা করবেন না
- গোসল করা বাদ দেবেন না। তবে অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকে ব্যবহার করবেন না।
- সতর্কতার সঙ্গে গরম পানি বহন করুন। চুলা থেকে নামিয়ে গরম পানির পাতিল বাথরুমে নেবেন না। বরং একটি মাঝারি বালতিতে পানিটুকু ঢেলে নিন। ওই বালতি বহন করার আগেই কিছুটা ঠান্ডা পানি মিশিয়ে নিতে পারেন।
- গিজার বা রুম হিটার থাকলে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করুন।
- পানি খাওয়া কমিয়ে দেবেন না। শীতে আমরা পানির চাহিদা কম অনুভব করলেও দেহে পানির প্রয়োজন একেবারে কমে যায় না। ত্বক ফেটে যাওয়াও পানিশূন্যতার লক্ষণ হতে পারে।
- শরীর গরম রাখতে উষ্ণ পানীয় কাজে দিলেও অতিরিক্ত চা-কফি খাওয়া ঠিক না।

শিশুর যত্ন
শীতে শিশুর জন্য আলাদাভাবে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
- নবজাতক বা ছোট শিশুর মাথা সুতি কাপড় বা সুতি কাপড়ের টুপিতে ঢেকে রাখুন।
- শীতের পোশাক পরিয়ে রাখার কারণে শিশু ঘেমে যাচ্ছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। ঘাম মুছে দিন। প্রয়োজনে পোশাকের স্তর কমিয়ে দিন। শিশুর জন্য সুতি বা ফ্লানেল–জাতীয় কাপড় বেছে নিন।
- শিশুদেরও রোদে রাখা ভালো। তবে একেবারে ঠান্ডা বাতাসের সময় নয়।
- ধুলায় হুটোপুটি না করলে ছোট শিশুকে দু–এক দিন পরপর গোসল করালে ক্ষতি নেই। তবে শিশুর গোসলে যাতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- ঠান্ডা মেঝেতে খালি পায়ে হাঁটলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাই ফ্লোরম্যাট বিছিয়ে রাখা ভালো। মোজা বা জুতাও পরানো যেতে পারে শিশুকে।
মনের যত্ন নিন
মন আমাদের স্বাস্থ্যের অবহেলিত এক দিক। অথচ নিজের ও প্রিয়জনের মনের যত্ন নেওয়াটা জীবনের এক অলিখিত নিয়ম। সুখ ও সুস্থতার জন্য মনের যত্ন আবশ্যক। ভালো লাগা বা খারাপ লাগাকে গুরুত্ব দিন। সম্পর্কগুলোকে সতেজ রাখুন।



































































































