শান্তিচুক্তির পরও গাজায় হামলা, ৯৭ ফিলিস্তিনি নিহত

- Update Time : ১০:২২:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৯ Time View
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৯৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও ২৩০ জন আহত হয়েছে। তারা যুদ্ধবিরতির ৮০টি লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সরাসরি গুলিবর্ষণ করে। তাছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে গোলাবর্ষণ ও লক্ষ্যবস্তুতে হামলা, একযোগে বিমান হামলা এবং বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে গ্রেপ্তারও করে তারা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৬৮ হাজার ২১৬ জন নিহত এবং এক লাখ ৭০ হাজার ৩৬১ জন আহত হয়েছে।
‘যেভাবে সহিংসতা শুরু হয়েছে, আমি অনুভব করেছি আমার হৃদয় ভেঙে গেছে; যুদ্ধবিরতি অকার্যকর হতে যাচ্ছে। রোববার যা ঘটেছিল, তাতে মানুষ ফের দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় খাবার কিনতে পাগল হয়ে উঠেছিল। লোভী ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। শান্তিচুক্তিটি এখন খুবই ভঙ্গুর দেখাচ্ছে।’ যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে রয়টার্সকে এসব কথা বলছিলেন গাজা শহরের ব্যবসায়ী আবু আবদুল্লাহ। তাঁর চোখেমুখে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। তাঁর এই বক্তব্যের মাধ্যমে গাজার নতুন আতঙ্কজনক পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে। বাসিন্দারা যুদ্ধবিরতিকে খুবই ভঙ্গুর হিসেবে দেখতে পাচ্ছেন।
গাজা শহরের পাঁচ সন্তানের বাবা মাহমুদ হাশিম বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেলে তা হবে একটি দুঃস্বপ্ন।’ দক্ষিণে খান ইউনিসের খাদিজেহ আবু-নোফাল বলেন, ‘হাসপাতালের কর্মীরা আহত শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। সেখানেও হামলা হয়েছে। তাহলে শান্তি কোথায়?’
বার্তা সংস্থা এপি ও আলজাজিরা জানায়, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। তারা ৮০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। ইসরায়েলের দাবি, হামাস তাদের সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করায় এ হামলা চালানো হয়েছে। এসব ঘটনার পর গাজায় ত্রাণ প্রবেশ সীমিত করে দেয় ইসরায়েল। এর মধ্যে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধের হুমকিও দিয়েছে দখলদাররা। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গুর আকার ধারণ করেছে। গাজাবাসী আরও সহিংসতার আশঙ্কা করছে।
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওপর হামাস সরাসরি হামলা চালায়নি। হামলাকারীরা অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত হতে পারে। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। সোমবার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও তাঁর জামাতা জ্যারেড কুশনার ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। তারা গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার তত্ত্বাবধানকারী ওয়াশিংটনের শীর্ষ আলোচক। যুদ্ধবিরতি বহাল রাখার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করবেন তারা।
এদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য হামাসের প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সোমবার মিসরের রাজধানী কায়রো পৌঁছেছে। তারা কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। পরবর্তী পর্যায়ে হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ, গাজায় অতিরিক্ত এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং বিধ্বস্ত ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ শাসন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়