ঢাকা ১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিসোর্টে স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, দুজন আটক

বান্দরবান প্রতিনিধি
  • Update Time : ১২:১৬:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৭ Time View

বান্দরবানের লামায় স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার মিরিঞ্জা পাহাড়ে অবস্থিত মিরিঞ্জা ভ্যালি ও মিরিঞ্জা ভ্যালি এগেইন নামক দুইটি রিসোর্টে স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে ছয়জন মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে লামা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

বুধবার (১২ মার্চ) ধর্ষণের শিকার ওই নারীর দায়েরকৃত এজাহারের পর পুলিশ ওই নারীর স্বামী রুবেল (৩২) ও তার বন্ধু সাগর (৩০) কে গ্রেপ্তার করে।

থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মিরিঞ্জা পর্যটন এলাকায় অবস্থিত রিসোর্ট মিরিঞ্জা ভ্যালির নাইট গার্ড লামা পৌরসভার মধুঝিরি এলাকার আবুল কাশেম (বোবা) এর ছেলে রুবেল (৩২) তার ২য় স্ত্রীকে নিয়ে গত শনিবার রিসোর্টে যায়। সেখানে ওই নারীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে চারদিন রেখে ছয়জনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গত মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষণের শিকার নারী রিসোর্ট থেকে পালিয়ে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই নারী থানায় এসে পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা বর্ণনা করে। এই ঘটনায় চারজনকে এজাহারনামীয় ও দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ধর্ষণের শিকার নারী নিজেই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩)/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।

সূত্র থেকে জানা যায়, মিরিঞ্জা ভ্যালি রিসোর্টের নাইটগার্ড রুবেল (২৬) তার স্ত্রীকে নিয়ে গত শনিবার রিসোর্টে যায়। সে রিসোর্ট থেকে গত মঙ্গলবার তাকে অন্য আরেক রিসোর্টে নিয়ে স্বামী রুবেলের সহায়তায় ৫ বন্ধু মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এতে ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়লে গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গৃহবধূর স্বামী রুবেল ও তার বন্ধু সাগরকে গ্রেপ্তার করে উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে ৫ দিনের রিমান্ড চায়। দীর্ঘ শুনানির পর আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, লামা পৌরসভার মধুঝিরি এলাকার দানু মিয়ার ছেলে জহির (৪০) ও লাইনঝিরি এলাকার কবিরের ছেলে মামুন (২৮)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা দুইজনকে আসামি করা হয়েছে।

মিরিঞ্জা ভ্যালি রিসোর্টের মালিক জিয়াউর রহমান জানান, রমজান মাসে আমাদের রিসোর্ট বন্ধ। আমাদের নৈশ প্রহরী রুবেল কখন তার স্ত্রীকে নিয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে বিষয়টি আমি জানি না। এ ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার রুবেলের।

গণধর্ষণের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, এর আগে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে স্বামীসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি তার স্বামী রুবেলকেও অভিযুক্ত করেন। ভিকটিমের স্বামী রুবেল লামা পৌরসভার মধুঝিরি এলাকার বাসিন্দা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী রুবেল ও সাগর নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তবে সাগরের বিরুদ্ধে আগে আরও একটি গণধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদেরকেও গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

রিসোর্টে স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, দুজন আটক

বান্দরবান প্রতিনিধি
Update Time : ১২:১৬:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

বান্দরবানের লামায় স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার মিরিঞ্জা পাহাড়ে অবস্থিত মিরিঞ্জা ভ্যালি ও মিরিঞ্জা ভ্যালি এগেইন নামক দুইটি রিসোর্টে স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে ছয়জন মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে লামা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

বুধবার (১২ মার্চ) ধর্ষণের শিকার ওই নারীর দায়েরকৃত এজাহারের পর পুলিশ ওই নারীর স্বামী রুবেল (৩২) ও তার বন্ধু সাগর (৩০) কে গ্রেপ্তার করে।

থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মিরিঞ্জা পর্যটন এলাকায় অবস্থিত রিসোর্ট মিরিঞ্জা ভ্যালির নাইট গার্ড লামা পৌরসভার মধুঝিরি এলাকার আবুল কাশেম (বোবা) এর ছেলে রুবেল (৩২) তার ২য় স্ত্রীকে নিয়ে গত শনিবার রিসোর্টে যায়। সেখানে ওই নারীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে চারদিন রেখে ছয়জনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গত মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষণের শিকার নারী রিসোর্ট থেকে পালিয়ে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই নারী থানায় এসে পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা বর্ণনা করে। এই ঘটনায় চারজনকে এজাহারনামীয় ও দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ধর্ষণের শিকার নারী নিজেই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩)/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।

সূত্র থেকে জানা যায়, মিরিঞ্জা ভ্যালি রিসোর্টের নাইটগার্ড রুবেল (২৬) তার স্ত্রীকে নিয়ে গত শনিবার রিসোর্টে যায়। সে রিসোর্ট থেকে গত মঙ্গলবার তাকে অন্য আরেক রিসোর্টে নিয়ে স্বামী রুবেলের সহায়তায় ৫ বন্ধু মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এতে ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়লে গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গৃহবধূর স্বামী রুবেল ও তার বন্ধু সাগরকে গ্রেপ্তার করে উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে ৫ দিনের রিমান্ড চায়। দীর্ঘ শুনানির পর আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, লামা পৌরসভার মধুঝিরি এলাকার দানু মিয়ার ছেলে জহির (৪০) ও লাইনঝিরি এলাকার কবিরের ছেলে মামুন (২৮)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা দুইজনকে আসামি করা হয়েছে।

মিরিঞ্জা ভ্যালি রিসোর্টের মালিক জিয়াউর রহমান জানান, রমজান মাসে আমাদের রিসোর্ট বন্ধ। আমাদের নৈশ প্রহরী রুবেল কখন তার স্ত্রীকে নিয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে বিষয়টি আমি জানি না। এ ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার রুবেলের।

গণধর্ষণের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, এর আগে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে স্বামীসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি তার স্বামী রুবেলকেও অভিযুক্ত করেন। ভিকটিমের স্বামী রুবেল লামা পৌরসভার মধুঝিরি এলাকার বাসিন্দা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী রুবেল ও সাগর নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তবে সাগরের বিরুদ্ধে আগে আরও একটি গণধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদেরকেও গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।