রাজনীতিবিদরা হাত মেলাচ্ছেন, বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে
- Update Time : ০৬:০৬:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
- / ১০ Time View
সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ‘বিপ্লবীদের’ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেছেন, রাজনীতিবিদরা হাত মেলাচ্ছেন, আর বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে হাসনাত বলেন, রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একদফা (শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি) হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) সংবিধানপ্রীতি, মুজিবের ছবি সরানোর কারণে আমরা দেখলাম যে, গত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য এই সংবিধানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা একটি দলের মাঝে এখন একটা প্রীতি দেখা যাচ্ছে। দেখলাম যে একটা বক্তব্য দেয়া হয়েছে যে, এটা (শেখ মুজিবের ছবি সরানো) ঠিক হয়নি। মোস্তাকের সঙ্গেও তুলনা করা হচ্ছে যে, মোস্তাক এই কাজ করেছিল। এই বিষয়গুলো দুঃখজনক। এছাড়া রাজনীতিবিদরা অগ্রজ এবং অনুজের মাঝে বিভাজন তৈরি করছে বলেও মনে করেন তিনি।
রাজনীতির অগ্রজ এবং অনুজের মাঝে বিভাজন তৈরি হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, এই বিষয়গুলো দুঃখজনক। এই সংবিধানের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। অথচ এই সংবিধানের অধীনে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেই সরকার শপথ নিচ্ছে। এই বিষয়গুলো কোথাও না কোথাও বিপ্লব বা গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটে ঘাটতি তৈরি করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়াও তিনি গতকাল নিজের ফেসবুক প্রোফাইল লাল করে লিখেন, ‘সাঈদ ওয়াসিম মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ।’ এভাবে প্রতিনিয়ত নানা ইস্যুতে হাসনাত আবদুল্লাহকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায়।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় এ নেতা মঙ্গলবার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, কেউ অপরাধ করলে ইতিহাস ও জনগণ তা সিদ্ধান্ত নেবে। আওয়ামী লীগের মতো সংকীর্ণমনা দল বিএনপি নয়। মুজিবের ছবি সরিয়ে দেওয়া উচিত হয়নি। বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো ঠিক হয়নি। খন্দকার মোশতাকও তার ছবি নামিয়েছিলেন আর জিয়াউর রহমান আবার টাঙিয়েছিলেন সেই ছবি।
যদিও কিছুক্ষণ পর আবার বিবৃতি দিয়ে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন তিনি। আগের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, আমি মনে করেছিলাম, বঙ্গভবনের দরবার কক্ষে যেখানে সব রাষ্ট্রপতির ছবি থাকে সেখান থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে। মূলত: ছবিটি সরানো হয়েছিল বঙ্গভবনের অন্য একটি অফিস কক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে শেখ মুজিবের ছবি রাখার বাধ্যতামূলক আইন করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী আইনের কোনো কার্যকারিতা থাকতে পারে না। অফিস-আদালত সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত।
গত রোববার (১০ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সদ্য শপথ নেওয়া মাহফুজ আলম এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ৭১ পরবর্তী ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দরবার হল থেকে সরানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি। তবে মানুষের ভেতরে জুলাই স্পিরিট যতদিন থাকবে তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না।
নওরোজ/এসএইচ