ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুরে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড

আলমগীর হোসেন অপু, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:০০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৭ Time View

রংপুর নগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী আনজুমান বানু (৭০) নামের এক বৃদ্ধা নারীকে হত্যার দায়ে আরমান আলী (৩২) নামে একজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে আরো ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছে। দন্ডপ্রাপ্ত আরমান আলী নগরীর আনছারী মোড়ের রমজান আলীর ছেলে।

বৃস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান খান আলোচিত এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত অভিযুক্ত আরমান আলী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশি পাহারায় তাঁকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৯ মে রংপুর নগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় নিজ বাসায় আনজুমান বানুকে (৭০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আনজুমান বানু ছিলেন ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। ঘটনার সময় তিনি বাসায় একাই ছিলেন। পরের দিন নিহতের জামাতা এনায়েত হোসেন মহন কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরমান আলী এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এ ঘটনার পাঁচ বছর ধরে চলা এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ গ্রহণ করে। সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত আরমান আলীকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। সেই সাথে আরো ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছে আদালত।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট আব্দুল হাদি বেলাল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বৃদ্ধা আনজুমান বানুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সেই সময় সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলাম। আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা ন্যায়বিচারের একটি মাইলফলক এবং আইনের শাসনের প্রতি আস্থার জায়গা আরও মজবুত করবে আশা করছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, রায়ে আমরা অসন্তোষ্ট। কেননা আমার মক্কেল আরমান আলী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও সেটি ছিল প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেওয়া। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করছি সেখানে ন্যায় বিচার পাবো।

Please Share This Post in Your Social Media

রংপুরে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড

আলমগীর হোসেন অপু, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
Update Time : ০৮:০০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

রংপুর নগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী আনজুমান বানু (৭০) নামের এক বৃদ্ধা নারীকে হত্যার দায়ে আরমান আলী (৩২) নামে একজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে আরো ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছে। দন্ডপ্রাপ্ত আরমান আলী নগরীর আনছারী মোড়ের রমজান আলীর ছেলে।

বৃস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান খান আলোচিত এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত অভিযুক্ত আরমান আলী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশি পাহারায় তাঁকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৯ মে রংপুর নগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় নিজ বাসায় আনজুমান বানুকে (৭০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আনজুমান বানু ছিলেন ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। ঘটনার সময় তিনি বাসায় একাই ছিলেন। পরের দিন নিহতের জামাতা এনায়েত হোসেন মহন কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরমান আলী এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এ ঘটনার পাঁচ বছর ধরে চলা এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ গ্রহণ করে। সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত আরমান আলীকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। সেই সাথে আরো ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছে আদালত।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট আব্দুল হাদি বেলাল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বৃদ্ধা আনজুমান বানুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সেই সময় সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলাম। আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা ন্যায়বিচারের একটি মাইলফলক এবং আইনের শাসনের প্রতি আস্থার জায়গা আরও মজবুত করবে আশা করছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, রায়ে আমরা অসন্তোষ্ট। কেননা আমার মক্কেল আরমান আলী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও সেটি ছিল প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেওয়া। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করছি সেখানে ন্যায় বিচার পাবো।